বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ২৬ মার্চ শহীদ জিয়াউর রহমান যখন রিভোল্ট করে কর্নেল জানজুয়াকে নিজ হাতে হত্যা করে বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর কমান্ড তার নিজ হাতে নিয়ে নিলেন এবং জনসম্মুখে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, তখন পরিচয় কি? মেজর জিয়া। কই সেইদিন তো এই প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও বড় বড় নেতারা চ্যালেঞ্জ করেন নাই ‘হু ইজ জিয়া’। সে কে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দেয়ার? সেই দিনতো আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ছিলো যে রাস্তা পেলাম, দিক-নির্দেশনা পেলাম। তার প্রমান এপ্রিলের ১৭ তারিখ মুজিব নগরের গঠিত অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দিন আহমেদ সাহেবকে বিদেশি সাংবাদিকরা যখন জিজ্ঞেস করলেন তখন স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি বলেন, মেজর জিয়া ইতিমধ্যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। যুদ্ধ চলছে, (উই সেলুট হিম ) আমরা জনগনের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই। তাই বলবো জিয়াউর রহমানকে ইতিহাসে রাখবেন কি রাখবেন না সেটা আপনাদের ব্যাপার। কিন্তু জিয়াউর রহমানতো ইতিহাস সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, আদালতের উদ্দেশ্যে বলতে চাই ১৯৭১ সালে আদালতে কোন রায়ে বা ঘোষণায় স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আদালত কতৃক স্বীকৃত না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ করে, লাড়াই করে, রক্ত দিয়ে, সন্তান দিয়ে, মা-বোনের ইজ্বত দিয়ে অর্জিত হয়েছে। এই স্বাধীনতা আমাদের প্রাপ্তি না এই স্বাধীনতা আমাদের অর্জন। ইতিহাস সঠিক না বেঠিক সেটা কোনমতেই আদালতে বিষয় না। তিনি বলেন, আমরা যেহেতু নির্যাতিত সেহেতু এমনিতেই এ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। যারা জোড় করে ক্ষমতায় থাকে তাদেরকে জোড় করেই ক্ষমতা থেকে নামাতে হয়। তারা কিন্তু মুখের কথায় যায় না। এটা ইতিহাসের সত্য কথা।
গয়েশ্বর বলেন, স্বাধীনতার পতাকা যার হাতে তিনি কখনো গৃহবন্দি, কখনো কারাবন্দী। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ এই ইতিহাস লিখতে গেলে জিয়াউর রহমানের নাম ছাড়া কখনই সেটা পূর্ণাঙ্গ হবে না এবং সেই ইতিহাস বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য না।
এখন ইতিহাস বিকৃত কথা যারা বলে তাদের মস্তিষ্ক বিকৃত। আর বিকৃত মস্তিষ্ক বলে একজন স্বাধীনতার ঘোষক, যে ঘোষণা তৎকালীন সাড়ে সাত কোটি মানুষ নিজের কানে শুনে। এমনকি আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যারা সেইদিন যুদ্ধে শামিল হয়েছেন তারা কিন্তু কার নেতৃত্বে থাকবেন এরকম কাউকে নেতৃত্বে পাওয়া যায়নি। শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ আগস্ট গ্রেফতার হয়েছেন এই গ্রেফতারের প্রতিবাদে ২৭ তারিখ আওয়ামী লীগ ঢাকায় সারাদেশে একটি হরতাল আহ্বান করেছে। একটা হরতাল দিয়ে একটা সরকার পতন করা সম্ভব হয় না। আর একটি হরতাল দিয়ে দেশ স্বাধীন হয় সেটা যারা অধিক নেশা করেন তারাও বিশ্বাস করবেন না। সুস্থ মানুষ তো প্রশ্নই আসে না।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক এর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।