বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্বশুন্য করার জন্যই হত্যা, বিরাজনীতিকরণ ও ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই দেশপ্রেমী জাতীয় নেতা ও ইসলামী নেতৃবৃন্দকে একের পর এক হত্যা করে স্বাধীন দেশের মানচিত্র ও সংবিধানকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। আর গণবিরোধী সরকারের সে ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় সাজানো ও পাতানো মামলায় সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু দেশপ্রেমী জনতা সরকারের এই অন্যায় ও অন্যায্য দণ্ডাদেশ কখনো মেনে নেবে না বরং ফ্যাসীবাদী সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলবে। তিনি এটিএম আজহারুলসহ অবিলম্বে কারাবন্দী বয়োবৃদ্ধ নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুস সুবহান ও আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় সরকারকে একদিন জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি শনিবার রাজধানীতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের দণ্ডাদেশ অন্যায্যভাবে বহাল রাখার প্রতিবাদে ও অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর-১ নম্বর থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টেকনিক্যালে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম এবং মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন ও নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, ঢাকা মহানগরীর মজলিশে শুরা সদস্য নাসির উদ্দীন, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত, শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক রাজিবুর রহমান পলাশ, শিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সভাপতি যোবায়ের হোসেন রাজন, উত্তরের সভাপতি আজিজুল হক সজীব, প্রাইভেট সভাপতি আবু নাহিদ ও ছাত্রনেতা এনামুল হক প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, মূলত এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে সরাসরি অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার কোনও অভিযোগ নেই। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন তাকে কোনভাবেই অপরাধী সাব্যস্ত করতে পারেনি। সে সময় তিনি ১৮ বছরের কিশোর ও কলেজছাত্র ছিলেন মাত্র। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই তাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করে। একজন সাক্ষী আদালতে বলেছেন যে, তিনি ৭ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখেছেন। অপর একজন সাক্ষী বলেছেন তিনি ৩ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখেছেন । তাদের এ বক্তব্যই প্রমাণ করে তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আরেকজন সাক্ষী নিজেকে আজহারের ক্লাসমেট দাবী করে আদালতে সাক্ষ্য দিলেও আদালতে উপস্থাপিত ডকুমেন্ট অনুযায়ী আজহারুল ইসলাম ১৯৬৮ সালে কারমাইকেল কলেজ ত্যাগ করেন। আর কথিত সাক্ষী ১৯৭০ সালে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। অতএব আজহারুল ইসলামকে ঐ সাক্ষী তার ক্লাসমেট হওয়ার যে দাবী করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাই এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়নি।
তিনি বলেন, সরকার নিজেদের অপশাসন-দুঃশাসনকে আড়াল করতেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সারাদেশে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যা চালিয়ে দেশকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছে। তারা কথিত যুদ্ধপরাধকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের হাতিয়ার বানিয়েছে। সরকার ইতোপূর্বে সাবেক আমীরে জামায়াত ও প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। এবার সরকারের জিঘাংসা ও প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম। মূলত এই ফ্যাসীবাদী ও বাকশালী সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই এই জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। তিনি সরকার পতনের লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। বিজ্ঞপ্তি।