জীবনের প্রতিটি পরতে যিনি রেখেছেন ঈর্ষণীয় সাফল্যের স্বাক্ষর, তিনি আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার প্রিয় ‘খোকা ভাই’। শুরুতে একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসাবে তরুণদের নজর কাড়েন সাদেক হোসেন খোকা। মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরেই ১৯৭২ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়নের দায়িত্ব নিয়ে ক্লাবকে তিন বছরের মধ্যে তৃতীয় থেকে প্রথম বিভাগে উন্নীত করেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাদেক হোসেন খোকা ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ও ফরাশগঞ্জ ক্লাবের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ছিলেন। মওলানা ভাসানীর অনুসারী বামপন্থী রাজনীতি ছেড়ে আশির দশকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন সাদেক হোসেন খোকা। ঢাকার নয়াবাজার নবাব ইউসুফ মার্কেটে বিএনপির কার্যালয় থেকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা করে সাতদলীয় জোটের নেতৃত্ব দেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ওই অন্দোলনে ঢাকা মহানগর সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো রণাঙ্গনের এই বীর মুক্তিযাদ্ধাকে।
১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসন (সূত্রাপুর-কোতোয়ালি) থেকে শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় আসেন সাদেক হোসেন খোকা। দায়িত্ব পান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ঢাকার আটটি আসনের মধ্যে সাতটিতে বিএনপি প্রার্থী পরাজিত হলেও একমাত্র খোকা নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মৎস্য ও পশু সম্পদমন্ত্রী হন।
১৯৯৬ সালে মহানগর বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয় সাদেক হোসেন খোকাকে। ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন ১৯৭১-এ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়া এই গেরিলা মুক্তিযাদ্ধা। দায়িত্ব পান ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতির। দীর্ঘ সময় তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালন করেন তিনি।
এরপর ২০১৪ সালে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মরহুম এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।