ঢাকা সফর করা যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই. বেইগানের সাক্ষাৎ পেতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কেউ কেউ এ জন্য দলের কূটনৈতিক উইংয়ের ব্যর্থতা ও স্বার্থপরতাকে দায়ী করেছেন। বেইগান গত বুধবার বিকাল থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করেন।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কূটনৈতিক উইংয়ের প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আমাদের সময়কে বলেন, আমাদের সঙ্গে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হওয়ার কথা ছিল না। প্রোগ্রাম হলে তো তারাই ঠিক করবে- এটিই নিয়ম। এখানে আমাদের তো কোনো বিষয় নেই।
তবে বিএনপির কূটনৈতিক উইংয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, বেইগান ঢাকায় আসছেন- এমন খবর জানার পর বিএনপির কূটনৈতিক উইংয়ের পক্ষ থেকে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। বেইগানের সাক্ষাৎ পেতে প্রথমে কূটনৈতিক উইংয়ের গুরুত্বপূর্ণ একজন নারী সদস্য দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে সাক্ষাতের জন্য ওই নেত্রী নিজের নাম ও দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতার নাম প্রস্তাবও করেন। কিন্তু মার্কিন দূতাবাস সাক্ষাৎ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়াই দেয়নি। এরপর কূটনৈতিক উইংয়ের আরেকজন সদস্য ফের চেষ্টা চালান। তিনিও শেষ পর্যন্ত কোনো গতি করতে পারেননি।
এ বিষয়ে বিএনপির কূটনৈতিক উইংয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য আমাদের সময়কে বলেন, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম প্রথমে প্রস্তাব করলে হয়তো মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাওয়া যেত। মার্কিন দূতাবাসের কথায় তাই মনে হয়েছে। কিন্তু যে দুজনের নাম দূতাবাসে বিএনপির পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছিল, তাদের সঙ্গে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ করা প্রটোকলে পড়ে না। এ কারণে বেইগানের সঙ্গে বিএনপির সাক্ষাৎ হয়নি।
বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির প্রেক্ষাপটে ঢাকা সফরকালে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে বাংলাদেশকে পাশে চেয়েছেন। দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষের শক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধু মনে করে বিএনপি। তার সঙ্গে সাক্ষাৎ পেতে ব্যর্থতার জন্য সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যক্তি না থাকা এবং কূটনীতিতে দলের ভুল কৌশলকে দায়ী করেন ওই নেতা। তিনি বলেন, সাক্ষাৎ হলে অন্তত দেশে সার্বিক পরিস্থিতি বিশেষ করে দেশের গণতন্ত্রহীনতা, সুশাসনের অভাব, দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া যেত। কূটনৈতিক বিষয়গুলো দলের শীর্ষনেতার চিন্তাভাবনা করে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।