ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অফ লর্ডসে বাংলাদেশের চলমান মানবাধিকার পরিস্থিতি, বাক-স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
হাউস অফ লর্ডসের প্রভাবশালী সদস্য লর্ড কোরবান হোসাইনের সভাপতিত্বে ও ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আতাউল্লাহ ফারুকের পরিচালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনের লেবার পার্টির প্রভাবশালী নেতা স্যাম টেরি, ইউরোপীয়ান কমিশন যুক্তরাজ্যের প্রধান ইয়েন ক্রুস, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ডিরেক্টর আব্বাস ফয়েজ, আইনজীবী কিম্বারলি বাকের, বাংলাদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সাবেক আহ্বায়ক এসএইচ সোহাগ, ভয়েস ফর বাংলাদেশের হেড অফ কমিউনিকেশন নূর হোসাইন, মনজুর হাসান পল্টু ও শামীমা আক্তার। এছাড়া বক্তারা বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ব্যাপক সমালোচনা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
লর্ড কোরবান হোসাইন তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে, যা কারো জন্যই মোটেই সুখকর নয়। তিনি বাংলাদেশের ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী এবং ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর নির্বাচনের সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সাবেক ডিরেক্টর আব্বাজ ফয়েজ বলেন, স্বৈরতান্ত্রিকভাবে দেশ পরিচালনা করা কোনো দেশের জন্যেই সুখকর নয়, যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তিনি বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডসহ বাংলাদেশের বিগত কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই ধরণের হত্যাকাণ্ড কারো জন্যই কাম্য নয়। তিনি এ বিষয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
স্যাম টেরি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বর্তমান ছাত্র-রাজনীতির অবস্থার সাথে ব্রিটেনের ছাত্র রাজনীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, ছাত্র সংগঠনগুলোর এই ধরণের প্রতিহিংসামূলক মানসিকতা পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে দেয়া উচিত।
ইউরোপীয়ান কমিশন যুক্তরাজ্যের প্রধান ইয়েন ক্রুস তার বক্তব্যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয়ান কমিশনের অবস্থান তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের চলমান মানবাধিকার পরিস্থিতিসহ সেমিনারে উত্থাপিত বিষয়সমূহের নোট নিয়ে কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরে আনবেন বলে তিনি জানান। মঙ্গলবার রাত ৯টায় সেমিনার শেষ হয়।
সেমিনারে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার নিশাত খুশবু, অঞ্জনা আলম, লুনা সাবিরা, লুৎফর রহমান (লিংকন), আবুল হোসাইন নিজাম, হাবিবুর রহমান, মো: মুজাহিদ, খালিদ (পাভেল), আশিকুল ইসলাম, জামাল মিয়া, দেলোয়ার হোসেন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, জাহিদুল হোসেন, আরিফ মঈনুল হোসেনসহ আরো অনেকে অংশগ্রহণ করেন।