মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন

ট্রাম্পের বলা প্রায় সব কথাই মিথ্যা : সিএনএন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০
  • ২০৩ বার

নির্বাচনের দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অসততা দেখিয়েছেন বলে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এই অসততা তিনি বছরজুড়েই চালিয়েছেন বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।

প্রথমত, মাস কয়েক আগে থেকেই মেইল-ইন ব্যালটকে জালিয়াতি বলে চিহ্নিত করতে শুরু করেছিলেন ট্রাম্প। দ্বিতীয়ত, তিনি মিথ্যা অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, তাকে অপছন্দ করেন এমন ডেমোক্র্যাট গভর্নররা ভোট গণনার দায়িত্বে আছেন। তিনি আরও বলেছেন, নির্বাচনের পরদিন ভোট গণনার স্বাভাবিক অনুশীলন আইনবহির্ভূত ও অবৈধ। কিন্তু ট্রাম্পের এসব কথা ভিত্তিহীন। এ ধরনের আরও অনেক মিথ্যাচার তিনি করেছেন নানা সময়ে। নির্বাচনের দিন এসব মিথ্যাচারের পূর্ণরূপ দেখিয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভোটগ্রহণ সম্পর্কিত এসব মিথ্যা তথ্য বারবার আমাদের অনাবৃত করতে হচ্ছিল। এমন একটি উত্তেজনাপূর্ণ নির্বাচনে সম্ভাব্য পরাজয়ের কথা মাথায় রেখে তিনি সমর্থকদের মনে সন্দেহের বীজ ঢুকিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।

ট্রাম্প বুধবার সকাল থেকেই তার পরিকল্পনা কার্যকর করতে শুরু করেন। হোয়াইট হাউসে তিনি বক্তব্য দিয়ে নিজের জয় দাবি করেন। এমনকি নির্বাচনে প্রতারণার অভিযোগও তোলেন। ব্যাটলগ্রাউন্ড কিছু রাজ্যের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ না হলেও নিজের জয়ের ঘোষণা দেন তিনি।

এরপর তিনি টুইটারে ঝড় তুলতে শুরু করেন। কিন্তু তিনি সারাদিন যা বলেন, সবকিছুই ভুল ছিল বলে দাবি করেছে সিএনএন। টুইটারে ট্রাম্প যেসব টুইট করেছেন, তার মধ্যে ছয়টিতে সতর্কতামূলক লেবেল জুড়ে দিয়েছিল টুইটার কর্তৃপক্ষ।

ট্রাম্প একটি টুইটে বলেন, পেনসিলভানিয়া, মিশিগানসহ অন্য কয়েকটি রাজ্যে পাঁচ লাখের বেশি ভোটে তিনি এগিয়ে রয়েছেন। তাকে ধরতে বিরোধীরা চেষ্টা করছে। বাস্তবে কিন্তু তখনো অনেক কাউন্টিতে ভোট গণনা চলছিল। মেইল-ইন ভোট বেশির ভাগ ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে গেছে, যা নির্বাচনের পরদিন কিছু রাজ্যে গণনা করা হচ্ছিল। ট্রাম্প আরেক টুইটে বলেন, বিস্ময়কর ব্যালট এসে তার প্রাথমিক এগিয়ে থাকাকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। কিন্তু আসলে এতে বিস্ময়ের কিছু ছিল না। অনেক ভোট গণনা তখনো বাকি ছিল।

ট্রাম্পের আরেক টুইটে বলা হয়, ‘আমরা বড় ব্যবধানে জিততে যাচ্ছি। তারা নির্বাচন চুরি করার চেষ্টা করছে। এটা হতে দেওয়া যাবে না। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আর ভোট দেওয়া যাবে না।’ ট্রাম্পের এ দাবিও পুরোপুরি মিথ্যা। কেউ কিছু চুরি করার চেষ্টা করেনি। নির্বাচনে প্রতারণার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ভোট শেষ হওয়ার পর ভোট গ্রহণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বুধবার বিকেলে ট্রাম্প একটি প্রতারণামূলক টুইট করে পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলাইনা নিজেদের বলে দাবি করেন। এ ছাড়া মিশিগানও নিজের বলে দাবি করার পাশাপাশি সেখানে গোপন ভোট জমা হওয়ার অভিযোগ তোলেন। সিএনএন ও অন্যান্য মার্কিন সংবাদমাধ্যমের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মিশিগানে জিততে চলেছেন বাইডেন। ট্রাম্পের দাবি করা অন্য রাজ্যগুলোতেও লড়াই চলছে। ট্রাম্প যে গোপনে ব্যাপক ব্যালট ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন, তা ঠিক নয়।

বুধবার বিকেল থেকেই ট্রাম্পের পুরো দল তার পক্ষে ভুয়া তথ্য ছড়াতে লেগে যায়। ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্প, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ম্যাকনানি, প্রচার ব্যবস্থাপক বিল স্টিফেনসহ অন্য মিত্ররা নির্বাচনে জয়ের ভুয়া দাবি করতে থাকেন। নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্রতত্ত্ব প্রচারের এ তালিকায় আমেরিকান কনজারভেটিভ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ম্যাট স্ক্যালপস, ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি গিলিয়ানির মতো লোকজনও ছিলেন।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অসততা ট্রাম্পের বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছিল, যা তার পুনর্নির্বাচনের সময় মূল ভূমিকা রেখেছে। মার্কিন নির্বাচনে ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোটের ম্যাজিকসংখ্যা জিততে সেই চিরচেনা পথই ধরেছেন ট্রাম্প।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com