নিজেদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করেছে মার্কিন ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফাইজার। তাদের টিকায় উল্লেখযোগ্য কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেছে তারা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, ফাইজার বলছে- তাদের এই ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বয়োজ্যেষ্ঠদের ক্ষেত্রে ৯৪ শতাংশ কার্যকর। আর ফাইজারের সঙ্গে এই ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কাজ করা জার্মান প্রতিষ্ঠান ‘বায়োএনটেক’ বলছে, তারা অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই এই ভ্যাকসিন জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) কাছে আবেদনের পরিকল্পনা করছে।
ফাইজারের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বোরলা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নতুন এই ফলাফল ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়ায় তাদের আট মাসের যাত্রার গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। তারা এমন এক ভ্যাকসিন তৈরি করার প্রক্রিয়ায় আছেন, যা ভয়াবহ করোনা মহামারি ঠেকাতে কার্যকর হবে।
ফাইজারের উৎপাদিত ভ্যাকসিন একজন মানুষের শরীরে দুই ডোজ প্রয়োগ করতে হবে। এফডিএ যদি শিগগিরই এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়, তাহলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ফাইজার ৫ কোটি ডোজ পর্যন্ত ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে। আগামী বছরের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিনটির এই সরবরাহ বেড়ে গিয়ে ১৩০ কোটি ডোজ পর্যন্ত দাঁড়াতে পারে। তবে চলতি বছর উৎপাদিত ভ্যাকসিনের অর্ধেকের মতো শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই সরবরাহ করা হবে।
গত ৯ নভেম্বর ফাইজার জানিয়েছিল, তাদের ভ্যাকসিন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। তখন জানানো হয়েছিল- তাদের ভ্যাকসিন মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পরিবহন ও সংরক্ষণ করতে হবে। এফডিএর অনুমতি পাওয়ার পর ফাইজারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে তাদের ভ্যাকসিনের পরিবহন।
ফাইজার ইতিমধ্যে তাদের করোনা ভ্যাকসিন পরিবহনের একটি রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। ওই রূপরেখা অনুযায়ী শুষ্ক বরফ সংযুক্ত বিশেষ বক্সে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার ডোজ টিকা রাখা হবে। পাশাপাশি এসব বক্সের সঙ্গে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) প্রযুক্তি সংযুক্ত থাকবে। গতানুগতিক ফ্রিজগুলোতে এসব বক্স ৫ দিন পর্যন্ত টিকা সংরক্ষণ করা যাবে। বিশেষ ফ্রিজে সংরক্ষণের ক্ষেত্র এই বক্সে টিকা রাখা যাবে সর্বোচ্চ ১৫ দিন। তবে এর বেশি সংরক্ষণ করতে হলে পুনরায় শুষ্ক বরফ দেওয়ার পাশাপাশি দিনে দুই বারের বেশি বক্স খোলা যাবে না।