মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) নিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস একটি পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছে এবং অপর একটি পুরস্কার প্রত্যাহার করেছে। দুই মাস তদন্তের পর সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, খেলাফত নিয়ে সংশ্লিষ্ট অডিওটি তাদের সম্পাদকীয় মান পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
শেহরুজ চৌধুরী নামে একজন ২০১৮ সালে দাবি করেন, তিনি সিরিয়ায় গিয়েছিলেন এবং আইএসে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু গত শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নিয়ে উপস্থাপনাটি সঠিক ছিল না। এ কারণে পত্রিকাটি ২০১৮ সালের ‘পিবডি’ সম্মাননাটি ফিরিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া একই কারণে তারা ওই বছরের লওয়েল থামাস পুরস্কারটি প্রত্যাহার করেছে। পুরস্কারের সঙ্গে যুক্ত দুটি প্রতিষ্ঠানই জানিয়েছে, নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে তাদের অভ্যন্তরীণ কারণে পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছে অথবা প্রত্যাহার করেছে।
টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক ডেস ব্যাসকুইট গত শুক্রবার বলেছেন, এটা কোনো প্রতিবেদকের ব্যর্থতা নয়, আমি মনে করি এটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা। ওই অডিওটি গ্রহণ করেছিলেন সাংবাদিক রুকমিনি কলিমাচি যিনি চারবার পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছেন তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে প্রতিবেদন করার দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
উল্লেখ্য, ঘটনার নায়ক পাকিস্তান বংশোদ্ভূত শেহরুজ চৌধুরী সেপ্টেম্বর মাসে কানাডিয়ান পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগ দাখিল করা হয়। কানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসি তার আইএসের দেওয়া নাম আবু হুজাইফা আল কানাডি ব্যবহার করেন। সিবিসির প্রতিবেদনটি প্রচার করা হয় ২০১৭ সালে। সেখানে নিজেকে আইএসে যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করলেও কাউকে কখনো হত্যা করেননি বলে জানান।
এর পর ২০১৮ সালে টাইমস তার প্রতিবেদন করে সেখানে তিনি বলেন, আইএসের জন্য তিনি মানুষ হত্যা করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি টাইমসের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে তার বর্ণনার মধ্যে মিল নেই। এর পর তার কথায় আরও উল্টাপাল্টা তথ্য পাওয়া যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে টাইমস, কানাডা ও মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন যে, শেহরুজ চৌধুরী একজন বহুরূপী মানুষ যিনি কোনোদিন সিরিয়ায় যাননি।