(মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে গত ৩ নভেম্বর। এরপর বিজয়ীর নাম ঘোষণায় অস্বাভাবিক বিলম্ব কিংবা ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী পরাজয় স্বীকার করতে অস্বীকৃতি সত্ত্বেও এটা এখন স্পষ্ট, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন রিপাবলিকান ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোসেফ বাইডেন (৭৮)। তিনি ইলেকটোরাল কলেজেরও রায় পেয়ে গেছেন। আলোচ্য নিবন্ধটি ফরেস্ট কুক্সন লিখেছিলেন গত নভেম্বর মাসে। ১৮ নভেম্বর সংখ্যা ‘ঢাকা ট্রিবিউন’ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল ‘বাইডেনের বোঝা : নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্ব’ শিরোনামে। গুরুত্বপূর্ণ বিধায় আমরা পত্রিকাটির সৌজন্যে লেখাটির ঈষৎ সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর প্রকাশ করছি। অর্থনীতিবিদ কুক্সনের নাম বাংলাদেশে সুপরিচিত। তিনি ‘আমচ্যাম’-এর প্রথম সভাপতি এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর একজন পরামর্শদাতা। লেখাটা অনুবাদ করেছেন মীযানুল করীম।)
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সম্ভাব্য সঙ্ঘাতপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর কয়েকবার আলোকপাত করেছি। সে ভোটের ফলাফল এখন সবার কমবেশি জানা। ট্রাম্প এই ফল নিয়ে বিতর্ক বাধিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা ও বক্তব্য প্রসঙ্গে পর্যালোচনা করা হয়েছে কিছুটা।
তিনটি বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারি : ১. ট্রাম্প যে হেরে গেছেন নির্বাচনে, এটা মানতে চান না। তিনি এমন কাল্পনিক বিষয়ে বিশ্বাস করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে, এ নির্বাচনে চুরি করা হয়েছে। তার আইনজীবীরা এমন সব মামলা দায়ের করছেন যার দ্বারা (এবারকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট) নির্বাচনের কথিত প্রতারণা ও ত্রুটি উন্মোচন করা হয়েছে। ফলে ট্রাম্পের অহংবোধ আরো বেড়ে গেছে। তিনি আগের মতোই টুইট করে চলেছেন যে, তিনি জয়ী হয়েছেন এবং নির্বাচনের ফলাফল চুরি করা হয়েছে। তার সমর্থকরা তাকে বিশ্বাস করেন বলেই মনে হচ্ছে।
২. নির্বাচনে প্রতারণামূলক ব্যবস্থা থাকার কোনো প্রমাণ চিহ্নিত করা যায়নি। বাইডেন নির্বাচনে জিতেছেন। দুই প্রার্থীরই প্রাপ্ত, মোট প্রদত্ত ভোট গণনা করা হয়েছে। গুনে দেখা হয়েছে ইলেকটোরাল কলেজের ভোটগুলোও। ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আইনসম্মত প্রেসিডেন্ট হবেন বাইডেন।
৩. এবারের নির্বাচনে মনে হয়েছে, এতে অন্যান্য দেশের হস্তক্ষেপ ছিল অত্যন্ত সীমিত। ফেডারেল ও স্থানীয়-উভয়পর্যায়ে নির্বাচনের সব পরিচালনাকারী এবং তাদের ‘ওয়াচডগ’রা দাবি করেছেন, নির্বাচনটি ছিল নিরাপদ। রুশ সরকারের লক্ষ্য ছিল- মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে হেয় করা। ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হন, এটা তাদের কাম্য ছিল না। অপর দিকে চীনারা নিশ্চিত হতে পারেননি তাদের জন্য কোনটা ভালো হবে, সে বিষয়ে। ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে কে তাদের জন্য উত্তম, তা তারা বুঝে ওঠেননি। বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে না পারার একটাই পথ; তা হলো, ইলেকটোরাল কলেজের ভোটাভুটি। তা হলে, অঙ্গরাজ্যের আইনসভার ইলেকটোরাল ভোটের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করা যাবে। ভোটের ফলাফল নয়, সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর আইনসভায় রিপাবলিকান গরিষ্ঠতাই ইলেকটোরাল ভোট নির্ধারণ করবে।
মার্কিন সংবিধানে উল্লেখ আছে, অঙ্গরাজ্যগুলোর আইনসভাই ইলেকটোরাল কলেজে ইলেকটর্স বা নির্বাচকদের প্রেরণের ব্যবস্থা করবে। বর্তমানে আমেরিকার প্রতিটি রাজ্যের একটি আইন আছে যার বলে সে রাজ্যের অভ্যন্তরে ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচকদের বাছাই করা হয়। সাধারণত সংশ্লিষ্ট রাজ্যের গভর্নরের দায়িত্ব এটা।
আমার বিশ্বাস, কোনো রাজ্যের রিপাবলিকান নেতৃত্ব (উদাহরণস্বরূপ, মিসিগান) ভোটের ফলকে উপেক্ষা করে নির্বাচকদের মনোনয়ন দিতে যদি চাইতেন, বিদ্যমান আইন বদলিয়ে নতুন এক আইন পাস করে তাদের নিজেদের সে ক্ষমতা পাওয়ার দরকার হতো।
গভর্নরের ভেটোদানের বিধান করে এমন কোনো আইন পাস করা (সমস্যা দেখা দেয় যদি রাজ্যের গভর্নর আর আইনসভার অবস্থান হয় পরস্পর বিপরীত) এবং সে ভেটোকে প্রত্যাখ্যান করা আসলে সময়সাপেক্ষ। এবার গুরুত্বপূর্ণ কোনো অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান পার্টি এমন কোনো তৎপরতা শুরু করার খবর আসেনি।
তদুপরি, নির্বাচনে ভোট গণনা কিংবা নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো ত্রুটির প্রমাণ না পেলে কোনো রাজ্যের আইনসভা এহেন পদক্ষেপ নেয়ার সম্ভাবনা নেই। মনে হয় না, নির্বাচনী রায়কে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য প্রধান রাজ্যগুলোর কোনোটিতে কারসাজি করতে ট্রাম্প এবং তার বন্ধুরা সক্ষম হবেন। এমনকি এটা একটা অঙ্গরাজ্যেও করা কঠিন। আর চার চারটা রাজ্যে করা তো অসম্ভব, বলা চলে।
নির্বাচনের ভোট গণনা ও পরীক্ষা এবং সংশ্লিষ্ট বিরোধ মীমাংসার পর রাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভোটাভুটির ফলাফলকে সার্টিফাই করে থাকেন। আগামী ৮ ডিসেম্বরের (কথিত ‘নিরাপদ দিবস’) আগেই এটা করা গেলে নির্বাচনের ফলাফল একটা স্থায়ী ভিত্তি পাবে এবং কংগ্রেস বা কোর্ট আর সার্টিফাই করা এ ফল বদলাতে পারে না।
আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগে রাজ্যগুলোর কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ রাজ্যের ইলেকটোরাল কলেজের নির্বাচনী ফলাফল কংগ্রেসের কাছে পেশ করার কথা।
যদি আমেরিকার কোনো অঙ্গরাজ্য কর্তৃক ইলেকটোরাল কলেজে এমন দুই ব্যক্তির নাম বাছাই করে কংগ্রেসে পেশ করা হয়, যাদের মধ্যে সঙ্ঘাত সৃষ্টি হয়েছে, তার মীমাংসা করে দিতে হয় কংগ্রেসকে। এ ক্ষেত্রে কী ঘটছে, লক্ষ্য করুন। ইলেকটোরাল কলেজে প্রত্যেক রাজ্যের ভোটের সংখ্যা হলো- সেখানে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য সংখ্যা, যোগ দুই (আমেরিকার প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে সিনেটর থাকেন সমসংখ্যক অর্থাৎ দু’জন করে)। ‘ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া’ কোনো রাজ্য না হলেও ইলেকটোরাল কলেজে এর ভোট আছে তিনটি (এ সংখ্যা হলো, ইলেকটোরাল কলেজে কোনো অঙ্গরাজ্যের ভোটের ন্যূনতম সংখ্যা। এটা হয়, প্রতিনিধি পরিষদে মাত্র একটি আসন থাকলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের। যেমন, ওয়াইওমিং রাজ্যের ভোট মাত্র তিনটি- দু’জন সিনেটরসমেত।
ভোটের নিয়মকানুন রাজ্যই ঠিক করে দেয়। জর্জিয়ার আছে ১৬ ভোট। যদি রিপাবলিকান দলের প্রার্থী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেশির ভাগ ভোট পান, তিনি এই ১৬টি ভোটের সবগুলো পাবেন। কোনো কোনো আইন অনুসারে, কেবল দু’টি রাজ্যে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের মধ্যে ইলেকটোরাল ভোট ভাগাভাগি হবে। বাকি ৪৮ রাজ্যের নিয়ম হলো ‘বিজয়ী যিনি, সব পেয়ে যাবেন তিনি।’
কোনো অঙ্গরাজ্যের আইনসভা আর গভর্নর নির্বাচক বা ইলেকটরদের ভিন্ন ভিন্ন নাম কংগ্রেসে পাঠালে সমস্যা দেখা দেয়। সে রাজ্য ভোটের ফলাফল চূড়ান্ত করতে পারে না বলে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ ক্ষেত্রে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের নিরসন কিভাবে হবে, তা একটা প্রশ্ন। সর্বশেষ, ১৯৬০ সালে এমনটা হয়েছিল। তখন ইলেকটোরাল কলেজের জন্য হাওয়াই রাজ্যের গভর্নরের পাঠানো দু’জনের নাম থেকে প্রথমে বোঝা যাচ্ছিল, নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জয় হয়েছে। কিন্তু পরে পুনর্গণনায় এটা নিশ্চিত হয় যে, ডেমোক্র্যাটদের বিজয় ঘটেছে। আবার রাজ্যটির আইনসভাও ডেমোক্র্যাটদের সপক্ষে মত দিয়েছিল এরপর।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী নিক্সন ছিলেন দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনিই সিনেটে সভাপতিত্ব করেছিলেন। তিনি কিন্তু ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে সার্টিফিকেশন অনুমোদন করেছিলেন। এতে চূড়ান্ত ফলে কোনো প্রভাব পড়েনি এবং কেউ তাকে পক্ষপাতিত্বের জন্য অভিযুক্ত করেননি। পরিহাসের বিষয়, শেষ পর্যন্ত এ ফল ভুল প্রমাণিত হয়েছিল।
কংগ্রেসের উভয়পক্ষ ইলেকটোরাল কলেজ নিয়ে একমত হলে আর সমস্যা থাকে না। কিন্তু তাদের মধ্যে ভিন্নমত দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের গভর্নরের কথাকে মেনে নিতে হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে বলা যায়, বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নরদের পেশ করা নির্বাচকদের নামগুলো গ্রহণ করতে হবে এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতবেন বাইডেন।
আমরা জোর দিয়ে বলেছি, এবার পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছবে না। আবার এটাও সম্ভব যে, জানুয়ারির ২০ তারিখের মধ্যে সমস্যা মিটবে না এবং এ অবস্থায় স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি হবেন প্রেসিডেন্ট। আরেকটি সম্ভাবনা হলো, প্রতিনিধি পরিষদের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট বাছাই করা। তবে এটা হবে যদি প্রেসিডেন্ট পদের কোনো প্রার্থীই ইলেকটোরাল কলেজের ২৭০ কিংবা তার চেয়ে বেশি ভোট না পান। নবনির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের অধীনে বাইডেনই প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা (বিদায়ী প্রতিনিধি পরিষদ থাকলে ট্রাম্প জিততেন)।
এবারের নির্বাচনের সম্ভাব্য বিস্ময়কর ফলাফল নিয়ে লিখতে সবাই পছন্দ করেন। তবে ২০২০ সালের নির্বাচনের ব্যাপারস্যাপার নীরবে শেষ হবে। ইলেকটোরাল কলেজের ভোটাভুটি যথারীতি সম্পন্ন হয়ে যাবে। কোনো চ্যালেঞ্জই সফল হবে না। ২০ জানুয়ারির মধ্যে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাবেন। তিনি বছরের পর বছর অভিযোগ করবেন ‘নির্বাচনের ফল চুরি করা হয়েছে এবং আমিই বৈধ বিজয়ী।’
ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তার সামনে আইনগত ও আর্থিক সমস্যা বহু। তিনি টুইট করতে থাকবেন এবং যিনিই মনোযোগ দিয়ে শুনবেন, তার কাছেই নিজের মতো তুলে ধরবেন। অন্য দিকে তার অনুসারীর সংখ্যা কমতে থাকবে। কেউ কেউ বলছেন, ট্রাম্প ২০২৪ সালে আবার প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তা এখনো অনেক দূরে।
বাইডেন প্রশাসন তার পূর্ববর্তী ট্রাম্প প্রশাসনের অপকর্মের অভিযোগের দরুন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হবে। ছ’টি ক্ষেত্রে জবাবদিহিতার ইস্যু প্রবল হয়ে উঠতে পারে।
১. যেসব পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের শিশুসন্তানদের সাথে আচরণের ধরন। ২. চলমান মহামারীর তীব্রতার অবমূল্যায়নের প্রয়াস এবং সামরিক বাহিনী, আনন্দ উদযাপন এবং রাজনৈতিক সমাবেশের বেলায় যুক্তিসঙ্গত সতর্কতা অবলম্বনে ব্যর্থতাসহ এ মহামারীর মোকাবেলায় অব্যবস্থাপনা। ৩. বিভিন্ন প্রণোদনা কর্মসূচির মাধ্যমে ঋণ বণ্টনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ভূমিকা। এ ক্ষেত্রে আছে পক্ষপাতের অভিযোগ। এ ব্যাপারে আজো বিস্তারিত মূল্যায়ন না হওয়ার কারণ, সীমিত স্বচ্ছতা। ৪. বিভিন্ন দেশের যেসব সরকার অর্থ নয়, অন্যভাবে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে, তাদের মঞ্জুরি ও ঋণ প্রদানে পক্ষপাতিত্ব। যেমন- ইউক্রেনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প তা করেছেন। ৫. রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সরকারি সুযোগ-সুবিধার অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক তৎপরতায় নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের আইন ভঙ্গের অভিযোগ। ৬. কোনো কোনো দেশের এবং স্বদেশের সরকার থেকে অন্যায়ভাবে ট্রাম্পের আর্থিক সুবিধা নেয়া এবং তার দাতব্য সুবিধার অপ্রয়োজনীয় প্রয়োগ।
ট্রাম্পের প্রতি আমাদের দেখা উচিত সহানুভূতির সাথে। মনোস্তত্ত্ববিদরা ব্যাপকভাবে একমত, তিনি আত্মপ্রেমমূলক সমস্যায় ভুগছেন। তার সারা জীবনই এর প্রমাণ। এটা সুপরিচিত মানসিক ব্যাধি যার চিকিৎসা দরকার। এ চিকিৎসা যাতে না হয়, সে জন্য তিনি পয়সা খরচ করেছেন। তিনি নিজের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এটা তার মন্ত্রীদের ব্যর্থতা। কেবিনেট তার অবস্থা বুঝতে পারেনি এবং পারেনি তাকে প্রেন্স দিয়ে প্রতিস্থাপিত করতে।