দলের দুই ভাইস চেয়ারম্যান শোকজের জবাব দিলেও এখনই তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছে না বিএনপি। দলের একাধিক স্থায়ী কমিটির সদস্যের সঙ্গে আলাপ করে এ রকম ধারণাই পাওয়া গেছে। তাদের ভাষ্য, বিষয়টি স্পর্শকাতর। ভাইস চেয়ারম্যান পদের কোনো নেতার বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিতে হলে বিষয়টি নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও আলোচনা হতে হবে। সেজন্য এ বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত হবে না। গত শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হলেও সেখানে বিষয়টি আলোচনায় ওঠেনি।
জানা গেছে, দলের দুই ভাইস চেয়ারম্যানের শোকজের জবাব ইন্টারনেটের মাধ্যমে লন্ডনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে।
একাধিক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকা কোনো নেতার শোকজের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রটোকল মানা উচিত; অন্ততপক্ষে চেয়ারম্যান অথবা মহাসচিবকে এ শোকজ নোটিশে স্বাক্ষর করা উচিত। স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান অথবা যে কোনো সিনিয়র নেতাকে শোকজের যে চিঠি লেখা হয় তাতে ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। গতকাল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভীর কাছে শোকজের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি।
এ দিকে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে শোকজ প্রদানে দলের নেতাকর্মীদের ভেতরে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি হয়েছে। সিনিয়র নেতারা দলীয় শৃঙ্খলার কারণে কথা বলতে চাচ্ছে না। তবে বিষয়টিকে ‘রহস্য’ ঘেরা বলে অভিহিত করেছেন দলটির একজন সিনিয়র নেতা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের দল বলা হয়। সেই দলের একটি বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বিজয়ের মাসে এভাবে শোকজ করাটাকে আমি ভালো চোখে দেখছি না। এটা আমার কাছে মনে হয়েছে রহস্যজনক। কেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদকে শোকজ করা হবে? আমার কাছে তথ্য আছে, দলের স্থায়ী কমিটির অনেক সদস্যই এ রকম অ্যাকশনের কথা শুনে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এটা দলের ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি করেছে। মনে হচ্ছে- দল থেকে সিনিয়র নেতাদের বিতাড়িত করার প্রজেক্ট চলছে।’
গত ১৪ ডিসেম্বর বিএনপির দুই ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে শোকজ করে বিএনপি। দলের পক্ষে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব স্বাক্ষরিত এ চিঠি পাঠানো হয়। গত ১৬ ডিসেম্বর শওকত মাহমুদ এবং গত শনিবার হাফিজ উদ্দিন আহমেদ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দপ্তরে তাদের জবাব জমা দেন।