দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। তাদের পক্ষে মত দিয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষা কর্মকর্তারাও। আজ মঙ্গলবার এডুকেশন ওয়াচ এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।
এতে বলা হয়, দেশে ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দ্রুত স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে সম্মতি জানিয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে শিক্ষাকার্যক্রম চালানোর পক্ষে মত দিয়েছেন ৭৬ শতাংশ অভিভাবক। এছাড়া ৬২ শতাংশ শিক্ষক চলমান সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে মত দিয়েছেন।
দেশের ৮টি বিভাগের ৮টি জেলা ও ঢাকার দু’টি সিটি করপোরেশনের ২ হাজার ৯৫২ জনের ওপর চালানো জরিপের মধ্যে ১ হাজার ৭০৯ জন শিক্ষার্থী, ৫৭৮ জন শিক্ষক ও ৫৭৬ জন অভিভাবক রয়েছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়- সংসদ টিভি, অনলাইন, রেডিও ও মোবাইল ফোনে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ অংশগ্রহণ করেনি। ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পরিবার বা অন্যান্যদের নিকট থেকে সহায়তা পেয়েছে।
যেসব শিক্ষার্থী এ প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছে, তাদের মধ্যে ৫৭ দশমিক ৯ শতাংশ ডিভাইসের অভাবে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। গ্রামীণ এলাকায় এই হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অনলাইন ক্লাস আকষর্ণীয় না হওয়ায় ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে না। ৯৯ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িতে নিজে নিজে পড়ালেখা করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনলাইনের ক্লাসে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের অংশগ্রহণ বেশি। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পক্ষে অধিকাংশ শিক্ষার্থী-অভিভাবক মত প্রকাশ করেছে।
গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ধাপে ধাপে স্কুল খুলে দেয়াসহ ৬ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। তবে স্কুল খোলার ক্ষেত্রে শহরের চেয়ে গ্রামের স্কুল খুলে দেওয়ার প্রতি জোর দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এডুকেশন ওয়াচের প্রধান গবেষক ড. মঞ্জুর আহমেদ বলেন, অনলাইন ক্লাসের পরিস্থিতি ও বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার ওপর একটি গবেষণা করা হয়েছে। এখানে দেখা গেছে, মাত্র ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ ক্লাসে অংশগ্রহণ করে। বাকিরা ঘরের বাইরে নানাভাবে সময় কাটাচ্ছে। এ কারণে মায়েরা দ্রুত স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। স্কুল খুলে দিলে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হবে না।
ভার্চুয়াল এ আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এডুকেশন ওয়াচের গবেষক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য মোহাম্মদ মহাসিন, অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ ও আহ্বায়ক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী।