হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বিদ্যা ও ললিতকলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতী পূজা আজ মঙ্গলবার। দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই পূজার আয়োজন হচ্ছে না। তবে বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় স্থাপিত ম-প ঠিকই ঢাক-ঢোল-কাঁসর, শঙ্খ ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠবে শ্বেতশুভ্র দেবী সরস্বতীর বন্দনায়।
হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর বন্দনা করা হয়। এদিন দেবীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে অঞ্জলি দেন অগণিত ভক্ত। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর চরণে প্রণতি জানান তারা। হিন্দু ধর্মালম্বীদের মতে দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। ধর্মীয় বিধান অনুসারে সাদা রাজহাঁসে চড়ে দেবী সরস্বতী পৃথিবীতে আসেন।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘সরস্বতী পূজা দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ধর্মীয় উৎসব। ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে এ উৎসবে সবার অংশগ্রহণ এ দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও ঐতিহ্যে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বাংলাদেশে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে কাউকে সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেওয়া হবে না। হাজার বছর ধরে এ ভূখ-ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছেন। আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এ দেশে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা সব ধর্মের উৎসব সবাই মিলে আনন্দ-উৎসব সহকারে উদযাপন করি।’ প্রধানমন্ত্রী করোনার এ সংকটময় সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পূজা উদযাপনের জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান।
এদিকে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায় আজ বাণী অর্চনাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মন্দিরগুলোর অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি, আলোকসজ্জা প্রভৃতি।