ভবিষ্যতে সুযোগ হলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট হওয়ার ইচ্ছা আছে সাকিব আল হাসানের। যদি সেটি হয়, তাহলে বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার হবেন সেরা বিসিবি বস। এমনটা জনসাধারণের কথা হয়। স্বয়ং সাকিব বলেছেন কথাগুলো।
সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘দারাজ ক্রিকফ্রেঞ্জি’র লাইভে অনুষ্ঠানে রোববার ভোরে সাকিবের এ কথায় তোলপাড় লেগে গেছে। ‘ক্রিকেট ছেড়ে দিলে কী করবেন’ ক্রিকফ্রেঞ্জির সঞ্চালকের এই প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, ‘অবসরের পর ক্রিকেটে যদি থাকি, আর বিসিবি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ থাকে, তাহলে অবশ্যই আমি তা হবো। আমি জানি আমি বিসিবির ইতিহাসের সেরা প্রেসিডেন্ট হবো। এটা আমি ভালোভাবে বিশ্বাস করি, আমার পক্ষে তা সম্ভব।’
অনুষ্ঠানটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও কেন তিনি দেশের খেলা বাদে আইপিএলে খেলতে যাবেন, সে ব্যাপারেও কথা বলেন সাকিব। এ ছাড়া বিসিবিতে দেওয়া তার চিঠিতে কী লিখেছেন; সে ব্যাপারেও জানান দেশের সেরা এই খেলোয়াড়।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট না খেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শুধু কথা হচ্ছে আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমি নিশ্চিত বিসিবিকে আমি যখন চিঠি দিয়েছি, যারাই বলছে যে আমি টেস্ট খেলতে চাই না বা টেস্ট খেলব না, তারা চিঠিটা পড়েনি। এটা হচ্ছে একদম বড় কথা। আমি আমার চিঠিতে কোথাও উল্লেখ করিনি যে আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমি শুধু উল্লেখ করেছি, আমি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য এই সময়টাতে আইপিএল খেলতে চাই। শুধু এইটুকুই বলেছি।’
সাকিব বলেন, ‘আকরাম ভাই (বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান আকরাম খান) বার বার বলেছে, আমি খেলতে চাই না। আমার ধারণা উনি চিঠিটি পড়েনি। আমি পাপন ভাইকে (বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান) ধন্যবাদ দিতে চাই, উনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খেলোয়াড়দের এই স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। বোর্ড কিংবা বোর্ড প্রধান যদি কোনো ক্রিকেটারকে এভাবে সাহায্য করে, তাহলে ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। পরে ক্রিকেটারদের জাতীয় দলের প্রতি দায়বদ্ধতাও বেড়ে যায়। সেদিক থেকে পাপন ভাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সময় মতো সিরিজ হলে এই প্রশ্নই উঠত না। করোনা মহামারির কারণে সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। ম্যাচগুলো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। আমাদের আছেই এই দুটি ম্যাচ। আমরা আছিই পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। এমন না যে এই দুইটা ম্যাচ জিতলে আমরা ফাইনাল খেলব। খুব বেশি একটা কিছু যে হবে আমার মনে হয় না। এই বছরের শেষেই ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে আমাদের অনেক কিছু অর্জনের সুযোগ আছে। এই দুইটা টেস্টে সেই সুযোগ নেই। অবশ্যই দল হিসেবে যদি দুইটা টেস্ট জিতি তাহলে অনেক ভালো। কিন্তু বড় চিত্রটা দেখেন, আমি নিজেকে বড় কিছু অর্জনের সুযোগ আছে আমাদের দেশের, সেটাকে ভালো সুযোগ মনে করি।’
সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু ক্রিকেটার অনেকদিন ধরে খেলছি। এটা একটা সুযোগ হতে পারে নতুনদের দেখার। আমি বেশ কিছুদিন ধরেই টেস্টের বাইরে ছিলাম। একটা টেস্ট খেলেছিলাম, সেখানে গিয়েই চোটে পড়েছিলাম। যেই সর্বশেষ সাত-আটটা টেস্ট বাংলাদেশ খেলেছে, আমাকে ছাড়াই খেলেছে। আমার মনে হয় যে, খুব একটা ক্ষতি হবে না। বরং দুই-একজন ক্রিকেটার তৈরি হতে পারে। নতুনদের দেখার সুযোগ হতে পারে।’
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। নতুন সন্তান ও স্ত্রীকে সময় দিচ্ছেন তিনি। অপরদিকে বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ডে। একটি ওয়ানডে ইতোমধ্যে হেরেছে টাইগাররা। শনিবার ডানেডিনে গাপটিলরা তামিমদের পরাজিত করে ৮ উইকেটে।