নরওয়ের ক্রিস্টিয়ানস্যান্ড শহরে একটি ইসলামবিরোধী কর্মসূচিতে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর চেষ্টায় বাধা দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন এক মুসলিম যুবক। গত শুক্রবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় ওই শহরটিতে উগ্রবাদী সংগঠন ‘স্টপ ইসলামাইজেশন অব নরওয়ে’ একটি কর্মসূচির আয়োজন করে।
কর্মসূচির এক পর্যায়ে সংগঠনটির প্রধান লার্স থোরসেন কুরআন পোড়ানোর চেষ্টা করে। এ ঘটনা দেখতে পেয়ে ছুটে গিয়ে তাকে বাধা দেয় এক মুসলিম যুবক।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে বেড়িকেড টপকে ওই যুবক লাফ দিয়ে লারসেনের কাছে চলে যায় এবং তার হাত থেকে পবিত্র কোরআনাটি কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এরপর লারসন ও তার লোকেরা যুবককে মারতে শুরু করে। পুলিশ এসে লারসনসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।
ওই মুসলিম যুবকের নাম ইলিয়াস বলে জানা গেলেও তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগা মাধ্যমে তাকে নিয়ে প্রশংসার জোয়ার উঠেছে রীতিমতো। অনেকেই তাকে ‘হিরো অব দ্য মুসলিম’ উপাধি দিয়েছেন। শত শত মানুষ এ বিষয়ে পোস্ট দিয়েছেন। কেউ ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেছন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ওই কর্মসূচির বিষয়ে থারসনকে আগেই পুলিশের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা অম্যান্য করে কোরআন পোড়ানো পদক্ষেপ নেন। পাকিস্তান ও তুরস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেছে নরওয়েবাসীর প্রতি। পাকিস্তানের বেশ কিছু জায়গায় এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভও হয়েছে।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পাকিস্তান ইউনিয়ন নরওয়ে (প্যান) এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। প্যান এর চেয়ারম্যান চৌধুরী কামার ইকবাল বলেন, একজন ব্যক্তি পবিত্র কোরআনের অবমাননা করে মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে।
তিনি আরো বলেন, নরওয়েজিয়ানরা শান্তিপূর্ণ মানুষ, মুসলিমরাও এখানে শান্তিতে বসবাস করছিলো, যদিও ইদানিং ইসলামফোবিয়া বৃদ্ধি পেয়েছে, তারপরও নরওয়ে অন্যান্য ধর্মের অধিকারকে সম্মান করায় তারা বিশ্বজুড়ে বেশ সুনাম অর্জন করেছে।
এদিকে এই ঘটনার পর নরওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে এ ধরনের পদক্ষেপ ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিষয়ে হুশিয়ার করা হয়েছে।
সেই ঘটনার ভিডিও
https://youtu.be/zcamXKRQgqs