বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে বলেছেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবের মানসিক সমস্যা হয়েছে। তারা এখন নিজেকে প্রভু মনে করতে শুরু করেছে। এ রাষ্ট্রের প্রভু তারা। এটাই তাদের সমস্যা হয়ে গেছে এখন। একটা দল কীভাবে চলবে, কীভাবে কাজ করবে- এটাও তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। আজ মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি এখন থেকে সমাবেশ করতে সরকারের অনুমতি নিবে না- গত সোমবার মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছিলেন, অনুমতি ছাড়া সভা সমাবেশ করার ক্ষমতা বিএনপির নেই। এর জবাবেই মূলত মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংবিধানে সভা সমাবেশ, প্রতিবাদ করার সমস্ত অধিকার দেয়া আছে। আমরা সভা সমাবেশ করতে সরকারের অনুমতি চাই না। আমরা অবগত করতে চাই। এটা আমরা বরাবরই করে আসছি। কিন্তু সরকার একবারে গ্রাম্য মোড়লদের মতো আচরণ করছে। সমাবেশের অনুমতি দেয় না। আবার দুই ঘণ্টা আগে অনুমতি দেয়। ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় গিয়ে বাকশাল কায়েম করে তারা প্রভু হয়ে গিয়েছি। এখন তো দশ বছর ধরে প্রভুত্ব করছেন। এবার পাকাপোক্ত প্রভু হিসাবে বসতে চান।’
তিনি আরো বলেন, সরকার ক্ষমতা দখল করার পর অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ লোকদের দ্বায়িত্ব দিয়েছে। একটি অস্থিতিশীল দেশ পরিচালনা করার জন্য যে কৌশল, প্রজ্ঞা থাকা দরকার তা মন্ত্রীদের নেই। কিছু কিছু মন্ত্রীরা ভেবে চিন্তে কথা বলেন না। এখানে একদলীয় নিয়ম একদলীয় শাসন চলছে, এখানে প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন তাই হবে। এখানে সুশাসনের অভাব, গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা তাদের মধ্যে নেই। লক্ষ্য যেহেতু একদলীয় সরকার, যেখানে সুশাসন প্রধান নয়। ১৬ কোটি মানুষের একটি দেশ এভাবে চলতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। কারণ সরকার দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা, সুশাসনসহ সব জায়গায় ফেল করে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দিতে হয়, তা এখানে অনুপস্থিত। একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে তারা পাকাপোক্ত করতে চায়, সকল ক্ষেত্রে দলীয় লোকজনকে নিয়োগ দিচ্ছে। কোনো ভিন্নমতের লোকদের চাকুরী হয় না। অপর দিকে বিদেশ থেকে বাংলাদেশী শ্রমিকরা ফেরৎ আসছে।
তিনি বলেন, সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এতটাই ব্যর্থ যে, এনবিআর এর চেয়ারম্যানকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য বেঠক করতে হয়। সেখানে বসেও তারা বলছে সব ঠিক আছে। কিন্তু কিছুই ঠিক নেই।
ফখরুল বলেন, সরকার যতই চিৎকার করুক, মুখে কথা বলুক, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসেনি। ফলে তাদের সে দূর্বলতা সব সময় কাজ করে, যে জন্য জায়গাটা নিতে পারছে না। দেশ অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চলছে। সুতরাং সরকারের উচিৎ অবিলম্বে পদত্যাগ করা।
এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহসভাপতি নূর এ শাহাদাৎ স্বজনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।