যুক্তরাষ্ট্রে চাঞ্চল্যকর জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিন। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার ১২ সদস্যের জুরি প্যানেল এ মামলার রায় ঘোষণা করে। এই মামলায় ডেরেক চৌভিনকে দ্বিতীয় এবং তৃতীয়-ডিগ্রি হত্যা এবং দ্বিতীয়-ডিগ্রি বেআইনিভাবে অনিচ্ছাকৃত হত্যা হিসাবে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সিদ্ধান্ত পড়ার আগে বিচারক রায়টি সঠিক কিনা তা জানতে প্রতিজন জুরিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ফ্লয়েডকে হত্যায় পুলিশ কর্মকর্তা চৌভিনের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণিত হয়। ফলে চৌভিন ৪০ বছর কারাদণ্ডাদেশ পেতে পারেন।
রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আদালতের বাইরে কয়েকশ মানুষ বিজয় উল্লাস করেন। ফ্লয়েডের পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই রায় যুগান্তকারী। এক টুইটে তিনি বলেন, ‘অনেক বেদনার বিনিময়ে অর্জিত বিচার অবশেষে অর্জিত হলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহির প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে এটা স্পষ্ট বার্তা।’
২০২০ সালের ২৫ মে ৪৬ বছর বয়সী ফ্লয়েডকে জাল টাকা ব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ফ্লয়েডকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় মাটিতে শুইয়ে তার ঘাড়ে প্রায় ৯ মিনিট চেপে বসেন চৌভিন। ৯ মিনিটের ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হলে সাড়া বিশ্বে সমালোচনার ঝড় তোলে। ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বারবার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বলার পরও ফ্লয়েডের ঘাড় থেকে নামেননি পুলিশ কর্মকর্তা চৌভিন। একপর্যায়ে ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। নিরস্ত্র এ কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুর মাসখানেক পর তার পরিবার শহর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করে। অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর এ মামলায় তিন সপ্তাহের বিচার শেষে মঙ্গলবার রায় আসে। একদিনেরও কম সময় নিয়ে এ মামলার রায় প্রকাশকে যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্বের বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে মাইলফলক বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।