সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

রাতের আঁধারে জমি থেকে পেয়াজ চুরি, আতঙ্কে পাহারায় হাজারো চাষী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ৩১৩ বার

যে পেঁয়াজ নিয়ে এত আলোচনা সেই পেঁয়াজে মাঠ ভরেছে কৃষকের। সংকটের বাজারে মিলবে ভালো দাম হাসি ফুটবে কৃষকের মুখে। এমন ভাবনার মাঝে কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ছাপ। ক্ষেত থেকে চুরি হচ্ছে অতি মূল্যবান এই ফসল।

রাতের আধারে কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ি ইউনিয়নের খামারবাড়ি গ্রামের কৃষক জোনাব আলীর ক্ষেত থেকে চুরি হয় অন্তত ১০ শতাংশ জমির পেঁয়াজ। এরপর থেকেই আতঙ্কে সেখানকার কয়েক হাজার পেঁয়াজ চাষী। তাই রাত জেগে ক্ষেত পাহারার আয়োজন।

সোমবার সকালে মাঝবাড়ি ইউনিয়নের খামারবাড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পেঁয়াজ তোলার কাজে ব্যস্ত কৃষক। অনেকে আবার পেঁয়াজ পরিপক্ক হওয়ার আগেই বাড়তি দামের আশায় তুলে বাজারে নিচ্ছেন পেঁয়াজ।

এ সময় খামারবাড়ি এলাকার কৃষক আবু সাইদ জানান, বর্তমানে রাজবাড়ীর পাইকারি বাজারে নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। আর পুরাতন পেঁয়াজ ১৫০ টাকায়। খুচরা বাজারে নতুন পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৫০। পুরাতন পেঁয়াজ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। নতুন পেঁয়াজের আমদানি আর একটু বাড়লেই দামও কমবে বলে দাবী করেন তারা।

খামারবাড়ি গ্রামের নতুন পারা গ্রামের কৃষানী আমেনা বেগম বলেন, এ বছর পেঁয়াজের দানা কিনতে হয়েছে বেশি দাম দিয়ে। এরপর সার ও শ্রমিকের খরচ হয়েছে বেশি। এখন একটু দাম পেয়ে আমরা খুশি। কিন্তু চোর আতঙ্কে রাতে ঘুমাতে পারছি না। স্বামী আর স্ত্রী দুজনে মিলে বার বার ঘুম থেকে উঠে পেঁয়াজ ক্ষেত দেখে আসি। অনেক সময় জানালা দিয়ে টর্চ লাইট জালিয়ে পাহারা দেই।

অপর কৃষক খায়রুল মিয়া বলেন, আমরা পাঁচ কৃষক মিলে পেঁয়াজের চুরি ঠেকাতে ক্ষেতের মধ্যে টং ঘর তুলেছি। সবাই লাঠি ও টর্চ লাইট জালিয়ে সারা রাত বসে পাহারা দেই। আর এক সপ্তাহ পাহারা দিলেই পুরোপুরি পেঁয়াজ তোলা সম্ভব হবে। যারা একটু আগে পেঁয়াজ লাগিয়েছিলো তারা এখন তুলতে পারছে।

অপর কৃষক লিটন মোল্লা বলেন, দেশের সংকট কাটাতে সরকার পেঁয়াজ আমদানি করছে এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। পেঁয়াজের দাম যদি কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে থাকে তাও লাভবান হবে কৃষক।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোপাল কৃঞ্চ দাস জানান, রাজবাড়ীর জমি পেঁয়াজ চাষের উপযোগী। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে বালিয়াকান্দি, কালুখালী ও পাংশা উপজেলায় বেশি পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়। পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের বিশেষ প্রনোদনা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এবছরের পেঁয়াজের ভালো দাম পাওয়ায় আগামীতে আরো চাষ বাড়বে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছরও রাজবাড়ীতে ২৮ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। যার মধ্যে ৪১৫০ হেক্টর মুড়ি কাটা পেঁয়াজ। জেলায় এ বছর ৩ লক্ষ্য ১১ হাজার ৬৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com