শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কলকাতায় বাংলাদেশি কনস্যুলেট ঘেরাওয়ের চেষ্টা, সংঘর্ষে আহত পুলিশ চলমান অস্থিরতার পেছনে ‘উদ্দেশ্যমূলক ইন্ধন’ দেখছে সেনাবাহিনী জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যারাই যাবে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে : জামায়াত আমির বিচারপতিকে ডিম ছুড়ে মারার ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ ইসরাইলের বিরুদ্ধে জয় ঘোষণা হিজবুল্লাহর বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদির সাথে কথা বলেছেন জয়শঙ্কর ইসকন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে সরকার : হাইকোর্টকে রাষ্ট্রপক্ষ আইনজীবী সাইফুল হত্যা : সরাসরি জড়িত ৮, শনাক্ত ১৩ র‍্যাবের সাবেক ২ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ ছেলেসহ খালাস পেলেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ

জাতীয় ঐক্য গড়তে এক মঞ্চ চায় বিএনপি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১
  • ১২০ বার

নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে রাজপথে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। মিত্র দলগুলোকে নিয়ে এ দাবিতে প্রথমে যুগপৎ কর্মসূচি চালাবে দলটি। পরে সরকারবিরোধী সব দলকে নিয়ে একমঞ্চে আসতে চায় তারা।

বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ জন্য প্রথমেই নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ইস্যুতে আন্দোলন শুরু করবে বিএনপি। আন্দোলনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড, থানাসহ তৃণমূল পুনর্গঠন সম্পন্ন, নেতাকর্মীদের বিভেদ দূর, সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে কাজ করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। এ ছাড়া বৃক্ষরোপণসহ বেশ কিছু সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের কাছে যাওয়ারও চেষ্টা রয়েছে।

দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করা হবে। দলের অনেক নেতা মনে করেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপির পক্ষে এককভাবে আন্দোলন করে সরকারের কাছ থেকে কোনো দাবি আদায় করা সম্ভব হবে না। এ জন্যই অন্য দলগুলোকে এই আন্দোলনে পাশে পেতে চায় দলটি। এই আন্দোলনের ধরন কী হবে এ নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও শুরু হয়েছে সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, জাতীয় ঐক্য গড়তে আমাদের মহাসচিব কাজ করছেন। কয়েক দিন আগে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের আগামী দিনের জন্য তৈরি হওয়ার আহ্বান জানান। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির তাগিদ দেন। সরকার পতনের আন্দোলন শুরুর আগে দ্রুত নিজেদের মধ্যকার বিভেদ দূর করারও আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি নেতারা জানান, জাতীয় ঐক্যের জন্য কাজ করতে গিয়ে বিএনপিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছ থেকে নানা কথা শুনতে হচ্ছে। বিশেষ করে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোট থাকলে তারা কেউই আসবে না। এ ক্ষেত্রে কী করা যায় তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে দলটি। কোনো কোনো নেতার মত হচ্ছে- ২০-লীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভাঙার দরকার নেই;আবার জোটবদ্ধ আন্দোলন করারও দরকার নেই। সে ক্ষেত্রে অভিন্ন কর্মসূচিতে যে যার মতো রাজপথে থাকবে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, আমাদের সবার লক্ষ্য এই সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া। সে ক্ষেত্রে কে কোন আদর্শের সেটি দেখার সময় এখন নয়। আমরা সবাই রাজপথে থাকলে সবার লক্ষ্যই পূরণ হবে।

দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্যে বিএনপি কৌশলী ভূমিকা নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ২০-দলীয় জোট, ঐক্যফ্রন্ট ও বামধারার রাজনৈতিক দলগুলো একই দিনে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে কীভাবে যুগপৎ আন্দোলন করা যায় তাই নিয়ে ভাবছেন তারা। সম্প্রতি দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই নেতারাও জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আন্দোলনের কথা বলেছেন। এই মতামত সম্প্রতি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উত্থাপন করা হয়। স্থায়ী কমিটিও আন্দোলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

তবে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় রাজনীতির ওপর নজর রাখা নেতারা শুধু আন্দোলনের ওপর ভরসা রাখতে চাইছেন না। তাদের মতে, বিশ্বের প্রভাবশালী গণতান্ত্রিক দেশগুলোর ভূমিকাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। দলটির নেতারা আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের দিকে নজর রাখছে।

নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২৯ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ১৫ দিনের ভার্চুয়াল কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ভার্চুয়াল আলোচনা চলছে, যা চলতি মাসজুড়ে চলবে। এসব কর্মসূচিতে দলের শীর্ষ নেতারা নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। তারাও নেতাকর্মীদের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলছেন।

বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আমরা জেলায় জেলায় নিমগাছ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়েছি। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি জেলায় পাঁচ হাজার করে নিমগাছ লাগাতে জেলার নেতাদের গত ৬ জুন চিঠি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে। চলতি সপ্তাহে দলের মহাসচিব এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এপ্রিল থেকে বিএনপির তৃণমূল পুনর্গঠন কার্যক্রম স্থগিত আছে। দ্রুত এই স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানা গেছে। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আমাদের সাংগঠনিক কিছু কাজ বাকি আছে। দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুতই তা সম্পন্ন করা হবে। তা ছাড়া ভার্চুয়ালি আমাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

সরকারবিরোধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নিজেদের বিভেদ ভুলতে হবে। এটি না পারলে অন্তত এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মতো যুগপৎ আন্দোলন করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে এ সরকারকে বিদায় করতে সবাইকে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com