ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হল থেকে বহিরাগত তাড়াতে গিয়ে হল সংসদের দুই মধ্যে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুরো হলে আতঙ্ক বিরাজ করে। মারামারিত সুজন (৩০) নামের এক বহিরাগত রক্তাক্ত হয়েছেন।
শনিবার বিকেল ৫টা দিকে এসএম হলের দ্বিতীয় তলার পশ্চিম ব্লকে প্রথমে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে রাত আটটা পর্যন্ত দফায় দফায় মারামারি ও উত্তেজনার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের ১৫২ নম্বর কক্ষে হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও হল ইউনিয়নের সমাজসেবা সম্পাদক খান মিলন হোসাইন নিরবের মদদে সুজন (৩০) নামের এক ব্যক্তি প্রায় তিন বছর ধরে অবৈধভাবে থাকছেন। ৮ জনের ওই কক্ষটিতে তারা দুজনই থাকেন বলে শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন।
অন্যদিকে এসএম হলে আবাসন সংকটের কারণে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীরাও গণরুম ও হলের বারান্দায় থাকছেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজারের নেতৃত্বে ওই কক্ষে বহিরাগত উচ্ছেদ অভিযান চালান।
জানা যায়, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সুজনকে রুমে একা পেয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে তার মুখ রক্তাক্ত হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা তার বিছানাপত্র রুম থেকে বের করে দেন। পরে খবর পেয়ে মিলন ছাত্রলীগের খুলনা অঞ্চলের নেতা-কর্মীদের ডেকে লাঠিসোটা ও রড নিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
হট্টগোল শুনে তাৎক্ষণিকভাবে এসএম হলের ভিপি এমএম কামাল উদ্দিন ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তাহসান আহমেদ রাসেল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে হাউজ টিউটররা এসে বহিরাগত সুজনকে হল থেকে বের হয়ে যেতে নির্দেশ দেন।
প্রথম দফায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ার কিছুক্ষণ পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার ঘটনা ঘটে। এ সময় হলের কয়েকটি জানলায় ভাঙচুর চালান তারা। এ সময় রড নিয়ে বিভিন্ন কক্ষে বহিরাগত বিতাড়নে তল্লাসি চালান হল সংসদের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে এসএম হলের জিএস জুলিয়াস সিজার তালুকদার বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ এসএম হলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অছাত্র থাকছে। এখানে থেকে তারা বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে। আজ আমরা হল সংসদ ও হল ছাত্রলীগের সমন্বয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি অছাত্র ও বহিরাগত উচ্ছেদ করে হলকে বৈধ ছাত্রদের জন্য বসবাসযোগ্য ও মাদকমুক্ত করবো। তার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিযান চালিয়ে একজনকে ধরেছি। এর নামে অভিযোগ আছে, সে সমাজসেবা সম্পাদক মিলন খানকে টাকা দিয়ে ভাড়া থাকে।”
অন্যদিকে মারধরের শিকার বহিরাগত সুজন বলেন, “আমার বাড়ি পটুয়াখালী কলাচিপায়। আমি বাড়িতেই থাকি। মাঝে মধ্যে এখানে মিলনের রুমে থাকি। তবে তিনি পেশায় কী বা কেথায় পড়াশোনা করেন এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে রাজি হননি মিলন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মিলনকে কল দেয়া হলেও রিসিভ না করায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। হলের ভিপি কামাল উদ্দিনকে ফোন করা হলে তার ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে এসএম হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক সাব্বির রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এটা এখন সমাধান হয়ে গেছে। তবে এ প্রকৃত ঘটনাটা কী, সেটা তদন্ত করা হচ্ছে। সবকিছু না জেনে বিস্তারিত বলা যাবে না।