শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন

পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র-সৌদির বন্ধুত্বের সম্পর্ক

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ২৯৪ বার

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় মার্কিন নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে সৌদি বন্দুকধারীর গুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা সৌদি আরবের সাথে সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না। ওই ঘটনার একদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রতিরক্ষা ও সামরিক কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, সৌদি আরবের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অব্যাহত প্রতিশ্রুতি বজায় রাখবে।

ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি নিরাপত্তা সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পেন্টাগন প্রধান মার্ক এসপার এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। সম্মেলনে এসপার উভয় দেশের সম্পর্কে ঘটনার যেকোনো প্রাথমিক প্রভাব আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সৌদি বাদশাহর সাথে সমঝোতা আলাপ হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

সৌদি প্রেস এজেন্সির তথ্য মতে, বাদশাহ সালমান এ ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করেন। তিনি ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এসব ঘৃণ্য অপরাধী সৌদির জনতাকে প্রতিনিধিত্ব করে না। ট্রাম্প বলেন, সৌদি বাদশাহ সালমান তাকে ফোন দিয়ে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তবুও ঘটনাটি ইরানের হুমকি মোকাবেলায় সৌদি আরবকে ট্রাম্প প্রশাসন যথেষ্ট পরিমাণে সামরিক সহায়তা প্রদানের ঠিক কয়েক মাস পরই ঘটল যা দুই মিত্র দেশের সম্পর্ককে পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রে আসা বিদেশী নাগরিকদের মার্কিন সেনাবাহিনীর সাথে অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করতে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় তা পর্যালোচনার জন্য পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন এসপার।
গত শুক্রবার মার্কিন নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণরত সৌদি নাবিক মুহাম্মাদ আল-শামরানির গুলিতে তিনজন নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আটজন। যার মধ্যে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন টিমোথি কিনসেলা বলেন, বন্দুকধারী ব্যক্তি বিমান চালনা বিষয়ে প্রশিক্ষার্থী ছিলেন।

ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডেয়ান্তেজ বলেন, ‘সৌদি আরব সরকারের উচিত এ ঘটনার ভুক্তভোগীদের জন্য কিছু করা। আমি মনে করি, বন্দুকধারী যেহেতু সৌদি নাগরিক, ফলে তাদেরও কিছু দায় আছে।’ গণমাধ্যম জানায়, গুলি চালিয়ে হত্যা করার আগের সপ্তাহে খাবারের টেবিলে সতীর্থদের ‘নির্বিচারে গুলি করে হত্যার একটি ভিডিও দেখান হামলাকারী। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌঘাঁটিতে প্রশিক্ষণের জন্য আসা অপর সৌদি নাবিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে অপর সৌদি প্রশিক্ষণার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আরোপ করা হয়নি।

দ্য সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপ বলছে, ফ্লোরিডার বন্দুকধারী আল-শামরানি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে একটি ইশতেহার প্রকাশ করেছিলেন। এতে লেখা ছিল, ‘আমি শয়তানের বিপক্ষে। আর যুক্তরাষ্ট্র এখন শয়তানের দেশে পরিণত হয়েছে। আপনারা মার্কিন বলেই যে আমি আপনাদের বিপক্ষে তা নয়। আমি আপনাদের ঘৃণা করি, কারণ আপনারা প্রতিদিন শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধে নয়, বরং পুরো মানবজাতির বিরুদ্ধে অপরাধ করছেন। শুধু তাই নয়, এ অপরাধগুলোকে সমর্থন করছেন, এমনকি এসব করতে তহবিলও জোগাচ্ছেন।’

এবিসি নিউজ বলছে, এ কথাগুলো আদৌ ওই বন্দুকধারী লিখেছে কি না, তা জানার জন্য তদন্ত চলছে। এখনো তারা এ বিষয়ে নিশ্চিত নন। প্রাথমিক তদন্তেও আল-শামরানির সাথে বিদেশী কোনো উগ্রবাদী সংগঠনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তবুও এ বন্দুকহামলার ঘটনা ৯/১১-এর হামলার অনুরূপ অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

দীর্ঘ সময় ধরেই যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সহযোগিতামূলক কর্মসূচির আওতায় ওয়াশিংটন সৌদিদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা চালিয়ে আসছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ৮৫০ জনেরও বেশি সৌদি নাগরিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com