নিউইয়র্কের প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটিতে বাংলাদেশের লোক সংগীত উৎসব আয়োজনের প্রথম উদ্যোক্তা-আয়োজক এবং প্রতিষ্ঠাতা নূর ইসলাম বর্ষণ-কে সম্মাননা প্রদান করেন নিউইয়র্কের সকল বাংলাদেশী সংগঠনসহ প্রবাসী বাংলাদেশীরা। সম্মাননা উপলক্ষ্যে জ্যাকসন হাইটস্-এর পাল্কি পার্টি সেন্টারে গত রোববার ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নাগরিক সমাজ।
সম্মাননা অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের সকল সংগঠনের কর্মকর্তা-সদস্যবৃন্দরা ছাড়াও নূর ইসলাম বর্ষণ’র শুভাকাংক্ষীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। কানায় কানায় পরিপূর্ণ অনুষ্ঠানস্থলে সকল সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছাসহ উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জানানো হয় এবং তার কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখা হয়।
উল্লেখ্য, প্রবাস কমিউনিটির সুপরিচিত মুখ সমাজ সেবক, সংস্কৃতির প্রেমময় ব্যক্তিত্ব এবং নিউইয়র্কে সর্বপ্রথম লোক সংগীত উৎসব উদ্যোক্তা, আয়োজক-প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগঠক নূর ইসলাম বর্ষণ-এর জীবন নিয়ে আলোকপাত করতে গেলে বলতে হয়, তার চিন্তা-চেতনা ও কল্যাণমূলক কর্মকান্ড নিয়ে গর্ব-অহংকার করার মত।
নূর ইসলাম বর্ষণ ১৯৫৫ সালে নীলফামারী জেলাধীন ডোমার উপজেলা চিকনমাটি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবাবে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম সৈয়দ ইব্রাহীম মিয়া ও মাতা মরহুমা খতেজা খানম’র সর্বকনিষ্ঠ সন্তান তিনি।
¯œাতক শিক্ষা সমাপনী শেষে তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮০ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বেগম রিপু নাসরিনকে সহ-ধর্মিণী হিসেব গ্রহণ করে জীবন সংসারে পদার্পন করেন। তাদের সংসারে একমাত্র পুত্র সন্তান নাসের ইব্নে ইসলাম অয়ণ জন্মগ্রহণ করে ১৯৮৩ সালে । একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তিনি বর্তমানে নিউইয়র্কে প্রবাস জীবন-যাপন করছেন।
তিনি ১৯৮০ সালে নিউইয়র্কে প্রবাস জীবন শুরু করেন। ছাত্রজীবন থাকাকালীণ সময় থেকে তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতি ও নাট্যকলায় অংশ নিয়ে সকলের প্রিয়-ভাজন হয়ে উঠেন। নিউইয়র্কে প্রবাসী জীবন শুরু করার পর থেকে পর্যায়ক্রমে তিনি বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং বাংলাদেশী কালচার ছড়িয়ে দিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, পিঠা উৎসব, লোক সংগীতসহ বিভিন্ন বাংলাদেশী কালচারাল প্রোগ্রাম। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা-আয়োজক হিসেবে তাঁর খ্যাতি প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটিতে খুব অল্পসময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তিনি সবার প্রিয় একজন মানুষ হয়ে উঠেন। তিনি বেশ কয়েকটি সংগঠনের প্রবক্তা। প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির একটি সংগঠন দু’ভাগে বিভক্ত ‘নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন’-এর’ একীভূত হয়ে বাংলাদেশকে প্রবাসে বিভিন্ন প্রশংসনীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। তাঁর সেই আশাটি যেন পূরণ করা হয়, সেটার জন্য বিভক্ত ‘নর্থ বে ঙ্গল ফাউন্ডেশন’র সকল কর্মকর্তা-সদ্যসের সবিনয় অনুরোধও জানিয়েছেন। সম্মাননা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল সংগঠনের কর্মকর্তা-সদস্যবৃন্দরাসহ তাঁর শুভাকাংখীরাও আশাবাদ ব্যক্ত করেন, তাঁর উত্থাপিত অনুরোধটি যেন অচিরেই বাস্তবায়িত হয়।
বর্তমানে তিনি দূরারোগ্য এক মারাত্মক ব্যধিতে আক্রান্ত। পরম করুণাময় আল্লাহ’র কাছে তার রোগমুক্তির জন্য তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের কাছে দোয়া প্রার্থণা করা হয়েছে। আমরা সকলে যেন তাঁর এই দূরারোগ্য মুক্তি কামনা করি।-আমীন..!