মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৩ অপরাহ্ন

রুম্পার লাশে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ২৯৪ বার

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকার সড়ক থেকে ৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে উদ্ধার হওয়া রুবাইয়াত শারমিন ওরফে রুম্পার (২০) মৃত্যু নিয়ে ধোয়াশা কাটছিল না। রুম্পা মৃত্যুর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বলে ধারণা ছিল পুলিশের।

শনিবার ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার লাশে ময়নাতদন্তে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

শনিবার ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, রুম্পার লাশ ময়নাতদন্তে আমরা তিনটি টেস্ট করেছি এর মধ্যে বায়োলজিক্যাল টেস্টের প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসেছে। এতে দেখা গেছে তার শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

রোববার বাকি দুটি টেস্টের রিপোর্ট পাওয়া গেলে তিনটি মিলিয়ে একটা প্রতিবেদন তৈরি করে পুলিশের কাছে ময়নাতদন্তের সর্ম্পূণ রিপোর্ট জমা দেবেন বলে তথ্য দেন ডা. সোহেল মাহমুদ।

এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর রুম্পার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ জানিয়েছিলেন, নিহত তরুণীর হাত, পা, কোমরসহ শরীরের কয়েক জায়গায় ভাঙা ছিল। মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে স্পষ্ট হবে। আর ভবন থেকে পড়ে মারা যাবার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না? তা জানতে আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মারা যাওয়ার আগে রুম্পা ধর্ষিত হননি বলে ৯ দিন পর জানালোন ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ।

প্রসঙ্গত গত ৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে অজ্ঞাত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা হত্যার আলামত সংগ্রহ করেন। সুরতহাল শেষে সংগৃহীত আলামত ফরেনসিকে পাঠায়।

লাশটি পাওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল– আশপাশের কোনো ভবন থেকে পড়ে যাওয়াই তার মৃত্যুর কারণ। কিন্তু আশপাশের ভবনে খোঁজ নিয়েও ওই তরুণীকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

ওই ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে।

জানা গেছে, রুম্পা রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের (স্নাতক) ছাত্রী ছিলেন। তার বাবা রোকনউদ্দিন হবিগঞ্জ জেলার একটি ফাঁড়িতে পুলিশ পরিদর্শক পদে কর্মরত।

রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, রুম্পা ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষে পড়তেন। মালিবাগের শান্তিবাগে মা ও ভাইয়ের সাথে থাকতেন ভাড়া বাসায়। চাকরির কারণে তার বাবা রোকনউদ্দিন হবিগঞ্জে থাকেন।

প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধানে তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যার পর রুম্পা বাসা থেকে বেরিয়ে ছিলেন। সাথে নিজের মোবাইল ফোনটিও নেননি তিনি। উঁচু থেকে পড়ে শরীরের যে ধরনের জখম হয়, রুম্পার শরীরে সে ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এদিকে রুম্পার ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’কে হত্যাকণ্ড আখ্যা দিয়ে এর বিচার চেয়ে কয়েক দফা বিক্ষোভ করেছেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।

এরইমধ্যে রুম্পার কথিত প্রেমিক আবদুর রহমান সৈকতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপর তাকে রিমান্ডেও নেয়া হয়।

প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, রুম্পা-সৈকতের সম্পর্কের ইতি টানতে চেয়েছিলেন সৈকত। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে সৈকত তার সহযোগীদের নিয়ে রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর সেই বাসার ছাদে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে তাকে ওই ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com