বৈশ্বিক মহামারী করোনায় বিপর্যস্ত দেশের তৈরি পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। প্রতি মাসেই বাড়ছে ক্রয়াদেশ। বিশেষ করে গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি বেড়েছে ১০০ কোটি ডলার। শতাংশের হিসাবে যা ৪১ দশমিক ৬৬। গতকাল সোমবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির হিসাব বলছে, আগস্ট মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের মাস জুলাইতে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে এই হার ছিল মাইনাস ১১ শতাংশ।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, গত বছর মহামারীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পোশাক খাত আস্তে আস্তে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে, পোশাকের চাহিদা বাড়ায় নতুন ক্রয়াদেশ আসছে। এ কারণে রপ্তানি আয় বেড়েছে। আগামীতে রপ্তানির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩৪১ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি হয়েছিল ২৪১ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে পোশাক খাতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১০০ কোটি ডলার।
ইপিবির পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর- এ তিন মাসে ৯০৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের তৈরি পোশাকপণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি করেছে ৫১৬ কোটি ৪১ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ শতাংশ। ওভেন পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩৮৯ কোটি ৫২ লাখ ডলারের। এই খাতে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
এর আগে গত জুনে ২৮৯ কোটি ৪৮ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। পরের মাসে হয়েছিল ২৮৮ কোটি ৭২ লাখ ডলার; আগস্টে হয়েছিল ২৭৫ কোটি ৩৫ লাখ ডলার।
ইপিবির তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে সার্বিকভাবে ৪১৬ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি। গত বছর সেপ্টেম্বরে সার্বিকভাবে ৩০১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।
ইপিবির হিসাবে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ১০২ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর শেষে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়ে ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ডলার হয়েছে। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। তিন মাসে এ খাতে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৭ লাখ ডলার। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময় এ খাত থেকে রপ্তানি আয় এসেছে ২৭ কোটি ১৩ লাখ ডলারের। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি।