শরীরের তাপমাত্রা ওঠানামা করায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাকে ভর্তি করা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক আরিফ মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
গুলশানের ভাড়া বাসা থেকে নিজের গাড়িতে করে বিকাল ৪টার দিকে এভারকেয়ারে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসকদের পরামর্শে বিএনপি চেয়ারপারসনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, এখন তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। শরীরের তাপমাত্রা ওঠানামা করায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর পর তার সিটি স্ক্যানসহ কিছু পরীক্ষা করা
হয়েছে। কিডনি ও লিভারের পরীক্ষার জন্য তাকে কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের অবস্থা সাময়িক ভালো কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি স্বস্তিকর বলা যাবে না। একাধিক কারণে কয়েকদিন পরপর জ্বর আসে। এর মধ্যে লিভার ও কিডনি ঠিকভাবে কাজ না করাও অন্যতম। এগুলো আসলে জটিল বিষয়।
খালেদা জিয়ার হাসপাতালে যাওয়ার খবর পেয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা গুলশানের বাসা ও এভারকেয়ারের সামনে ছুটে যান। তাদের মধ্যে ছিলেন মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য দুলাল হোসেন, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করিম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।
খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। এর মধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৭ এপ্রিল থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত এভারকেয়ার হাসপাতালে ছিলেন তিনি। দুর্নীতির মামলায় দ-িত হয়ে খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। করোনার প্রেক্ষাপটে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এ পর্যন্ত তিন দফায় মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পরিবার বারবার আবেদন করলেও সরকার তা নাকচ করেছে। তাকে দেশে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার শর্তেই মুক্তি দেওয়া হয়।