বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দুর্গাপূজার সময়ে দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপে ও মন্দিরে যে হামলা হয়েছে তা সরকারই পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে।
তার অভিযোগ নির্বাচনের আগেই এসব ঘটনার মাধ্যমে দায়ের করা মামলায় সারাদেশে তার দলের নেতাকর্মীদের শাস্তি দিয়ে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার।
প্রত্যেকটি ঘটনাই সরকার বা সরকারি দলের ইন্ধনে হয়েছে। এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেয়া হচ্ছে গ্রেফতার বাণিজ্য করার জন্য,’ বলছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়াদীঘিতে একটি পূজামণ্ডপে কুরআন পাওয়ার পর দেশজুড়ে প্রায় ষোলটি জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপে ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশের হিসেবে এসব সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে সাতজন।
ইতোমধ্যেই কুরআন রাখার দায়ে ইকবাল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, এসব হামলার ঘটনায় ‘কিছু পরিচিত ব্যক্তি’র নাম আসতে শুরু করেছে।
বিএনপি বলছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ঘটনায় সেখানকার সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বরকত উল্লাহ বুলুসহ অনেক বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা হয়েছে।
মির্জা আলমগীর বলছেন, প্রত্যেকটি ঘটনাতেই সরকারি দলের ইন্ধনে হয়েছে। রংপুরে পীরগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতাই ঘটনার সূত্রপাত করেছেন। আর মামলা হলো অনেক বিএনপি নেতাকর্মীর নামে।
তিনি বলেন, কুমিল্লাতেও একইভাবে একজন পাগলকে সাজিয়েছে, যা কোনভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। বরং এটা পরিকল্পিত ও এবং সরকারই তা করেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে জনগণের সমস্যা থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য।
এখন তারা বরকত উল্লাহ বুলুর নাম জড়িয়েছে যা কারো কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। অথচ ৬ ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়েছে হামলাকারীরা কিন্তু পুলিশ হস্তক্ষেপই করেনি। সবগুলো ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬০ মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৬ জন। ইতোমধ্যে বিএনপির ১৪৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নোয়াখালীর চৌমুহনীতে ২৩টি মামলায় ৭ হাজার ৯৬১ জনকে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু এ মামলা তো কখনো শেষ হবে না। বরং তাদের উদ্দেশ্য হলো ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি আর গ্রেফতার বাণিজ্য করা।
মামলা প্রত্যাহার করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কুমিল্লার ঘটনা ঘটেছে সেখানকার আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের কারণে। আর মামলা হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে। উদ্দেশ্য হলো নির্বাচন আসার আগেই তালিকা করে বিএনপিকে মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়া।