পরিধি বাড়ছে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের। রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় বর্তমানে ১৫০ শয্যা নিয়ে চলা হাসপাতালটিকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। হাসপাতালে নতুন বিভাগ হচ্ছে ২৭টি। এ ছাড়া নতুন পদ সৃজন হচ্ছে দুই হাজার ৩৯২টি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই হাসপাতালে বর্তমানে ৩২০ চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। নতুন পদ সৃজনের ফলে জনবল কাঠামোর পরিধি বেড়ে দুই হাজার ৭১২ জনে উন্নীত হবে। এজন্য খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কর্মচারী হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় রূপান্তর করতে ১৬ তলার ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। গত বছর হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ৩৮০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও সেখানে চিকিৎসা সেবা নিতে পারেন। হাসপাতালের জনবল বাড়িয়ে আধুনিক ও সংস্কার করা কাজ হাতে নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এজন্য জনবল কাঠামোর পরিধি বাড়িয়ে নতুন করে আরও ২ হাজার ৩৯২ জন চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। বর্তমানে মাত্র ৩২০ জন জনবল নিয়ে চলছে হাসপাতাল। নতুন পদ সৃজন হলে প্রায় ৭৪৮ শতাংশ জনবল বাড়বে এই হাসপাতালে। জনবল কাঠামোর খসড়াও ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।
এক কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালে নতুন করে ২৭ বিভাগ চালু করা হবে। ফলে কর্মচারী হাসপাতাল দেশের অন্য জেনারেল হাসপাতালের মতোই সব রোগের চিকিৎসা সুবিধা দিতে পারবে। বর্তমানে মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসক আছেন মাত্র দুজন। এই বিভাগকে আরও সম্প্রসারণ করে যুগোপযোগী করা হবে।
নতুন যে ২৭ বিভাগ হচ্ছে
বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, রেডিওলোজি, কার্ডিওলজি, অবস অ্যান্ড গাইনি, পেডিয়াট্রিকস, অর্থোপেডিকস অ্যান্ড ট্রমালজি, ল্যাবরেটরি মেডিসিন, পলিয়োটিভ কেয়ার, নাক, কান, গলা (ইএনটি); চক্ষু, চর্ম ও যৌন, ইউরোলজি, নেফ্রোলজি, মানসিক স্বাস্থ্য, এন্ড্রুক্রাইনোলজি, গ্যাস্ট্রোএন্টারলজি, পিজিক্যাল মেডিসিন, নিউরোলজি, নিওনেটোলজি অ্যান্ড এনআইসিইউ, ব্লাড ব্যাংক, অনকোলজি, শিশু সার্জারি, ক্যাজুয়ালিটি ইমার্জেন্সি, অটিজম, ডেন্টাল, হেপাটোলজি এবং জেনারেল সার্জারি বিভাগ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, দেশে মহামারী করোনা ভাইরাস দেখা দিলে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালকে কোভিড ডেডিকেটেড ঘোষণা করে শুধু কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা চালু রাখা হয়। কোভিড শুরু হলে ৭২ বেডের হাসপাতালে পরিণত করা হয়। সেখানে কোনো সেন্ট্রাল অক্সিজেন ইউনিট ছিল না। সেন্ট্রাল অক্সিজেন ইউনিট করা হয়। ছয়টি আইসিইউ রয়েছে কর্মচারী হাসপাতালে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি পিসিআর মেশিনও কেনা হয়। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে টেকনিশিয়ান ও আরও কিছু লোকবল নিয়ে চালানো হয়।
এদিকে কোভিড ডেডিকেটেড ঘোষণার ফলে প্রায় দেড় বছর সাধারণ রোগীরা এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে পারেননি। দেশে কোভিড আক্রান্তের হার দুই শতাংশেরও নিচে নেমে যাওয়ায় ২৩ অক্টোবর সাধারণ রোগীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন সাধারণ রোগীরাও সেখানে সেবা পাচ্ছেন। বিশেষ করে সরকারি কর্মচারীরা স্বল্প খরচেই চিকিৎসাসেবা নিতে পারেন। তবে সাধারণ মানুষও কর্মচারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে পারেন।