জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর জন প্রতি ১৪ টাকা করে বেশি ভাড়া নিয়েই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে সোমবার সকাল থেকে বাস চলাচল করছে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পর বিআরটিএর বেঁধে দেয়া ভাড়া নির্ধারণ হয় ৪৩ টাকা। অথচ আরো ৭ টাকা বাড়িয়ে ৫০ টাকা ভাড়া আদায় করছে বাস মালিকরা। আগের ভাড়া ৩৬ টাকা থেকে একলাফে ১৪ টাকা ভাড়া বাড়ানো নিয়ে ক্ষব্ধ যাত্রীরা।
এর আগে রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জ পরিবহন মালিকরা বৈঠকে বসে ৫০ টাকা ভাড়া নেয়ার সিদ্ধান্তে নেয়।
এ ব্যাপারে পরিবহন মালিকদের দাবি, শুধু তেল নয় সমস্ত কিছুর দাম বেড়েছে। ফলে যে ভাড়াটা আমরা নিচ্ছিলাম সেটা দিয়ে পোষাতে পারছিলাম না। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের ৩৬ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা করে ভাড়া নিতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী বন্ধন ও উৎসব পরিবহনের ভাড়া ৩৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা, আনন্দ পরিবহন ৩২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা আর শীতল পরিবহনের ৫৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০ টাকা করা হয়েছে।
বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান জুয়েল হোসেন বলেন, ‘সরকার আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে আমরা সেই অনুযায়ী ভাড়া বাড়িয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকা ১৫ পয়সা। এখান থেকে ঢাকার দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। সে হিসেবে ভাড়া হচ্ছে ৪৩ টাকা। পিক আওয়ার আর নন পিক আওয়ার অ্যাভারেজে আমরা ৫০ জন যাত্রী পরিবহন করে থাকি। আমাদের টিপ ৪৫টি। প্রত্যেক টিপে আমাদের টোল ফি ৫২০ টাকা। সেখানে আমরা যাত্রী প্রতি ৭ করেছি। এভাবে আমরা সবমিলিয়ে ৫০ টাকা নির্ধারণ করেছি। আমরা ৫টি কোম্পানির মালিক বসে নির্ধারণ করেছি।’
তিনি আরো বলেন, আমাদের বাসের চাকার দাম ছিল ৪৫ হাজার টাকা। সেই চাকা বর্তমানে ৫৬ হাজার টাকা। সরকার আমাদের কাছ থেকে প্রতিবছর ফিটনেস ফি ১০ হাজার ১০৫ টাকা নিত। এখন সেটা ৩৬ হাজার ৬০৫ টাকা। আমরা যে মবিলটা ২০ থেকে ২৫ দিন পরে পরিবর্তন করতে হয় সেটা ৬ হাজার ৪০০ টাকা ছিল। এখন সেটা নিম্নমানের ৭ হাজার ৮০০ টাকা। সব বিবেচনা করে যাত্রীদের সুবিধার্তে নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ভাড়া নির্ধারণ করেছি।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ দাবি জানিয়ে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বী বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগে নারায়ণগঞ্জের কতিপয় বাস মালিক পরদিন ভোর থেকেই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের বাস ভাড়া ৩৬ টাকাকে ৫০ টাকায় উন্নিত করে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কোনোরকম নির্দেশনা ছাড়া এভাবে গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি সম্পূর্ণ আইন ও নিয়মের বিরুদ্ধে। ফলে পরিপ্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের গণপরিবহনে ন্যায় সঙ্গত ও যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দাবি করছি।
তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের সঠিক দূরত্ব নির্ধারণ সবচেয়ে জরুরি বিষয়। প্রথমে সঠিক দূরত্ব নির্ধারণ করে বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়া কার্যকরের জন্য দাবি জানাই।