শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

৫ কোটি টাকার ফেরি ২ কোটি টাকায় উদ্ধার হচ্ছে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর, ২০২১
  • ৯৯ বার

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে পদ্মায় ডুবে যাওয়া আমানত শাহ ফেরি ১৩দিন পর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেনুইন পানি থেকে ৭০ ভাগ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেনুইন কর্তৃপক্ষ।
৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৮০ সালে ক্রয় করা ফেরিটি উদ্ধার করতে প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ হবে। তবে উদ্ধারের পর শুধু উদ্ধার খরচ উঠবে কি না তা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। অথচ স্ক্র্যাপ হিসাবে উদ্ধারের আগেই বিক্রি করলে ২ কোটি টাকা পাওয়া যেত।

বর্তমানে ফেরিটির সাইট সেল ফেটে যাওয়ায় ওয়েল্ডিং এবং পানি অপসারণের কাজ চলছে। আজকের মধ্যে উদ্ধার সম্ভব না হলেও আগামীকাল বুধবার উদ্ধার অভিযানের পরিসমাপ্তি ঘটবে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারী দলের প্রধান বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক ফজলুর রহমান।

আমানত শাহ ফেরি উদ্ধারে কাজ করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেনুইন এন্টারপ্রাইজ। জেনুইনের উদ্ধারসামগ্রী ৬টির মধ্যে ৫টি উইন ভার্জ দিয়ে সকাল ১০টার দিকে ফেরি তুলার মূল কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে উইন ভার্জ ক্রেন দিয়ে টেনে কাত হওয়া ফেরি প্রায় ৭০ ভাগ সোজা করা হয়েছে বলে জানান জেনুইনের ম্যানেজার অজয় দেবনাথ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগেই ফেরিটি তুলে সোজা করে ভাসিয়ে তুলা সম্ভব হবে।

গত ৪ নভেম্বর সকাল থেকে জেনুইন ডুবুরি দল ফেরির তলদেশ থেকে উদ্ধারের সার্ভে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম থেকে ৬টি উইন্সবার্জ আনা হয় এবং উদ্ধারকাজ চালানো হয়। গত ২৭ অক্টোবর পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে যানবাহন নিয়ে হেলে যায় রো রো ফেরি আমানত শাহ। এতে ফেরিটির আংশিক ডুবে যায়। এ ঘটনার চতুর্থ দিনে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তম সবগুলো ট্রাক ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এরপর শুরু হয় ফেরির উদ্ধারকাজ।

সরকারি সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর জেনুইন ২ কোটি টাকা উদ্ধার খরচের চাহিদা দিলে সরকার তাদেরকে ফেরি উদ্ধারের কাজ শুরু করার আহ্বান জানায়।

১৯৮০ সালে প্রায় ৫ কোটি টাকায় ডেনমার্ক থেকে ক্রয় করা হয়েছিল ফেরি আমানত শাহ। ফেরিটির মেয়াদ ছিল ৩০ বছর। সার্ভে নিয়মানুয়ী মেয়াদ আরো ৫ বছর বৃদ্ধি করা হলেও ফেরিটি চলাচলের সক্ষমতা হারিয়েছে ৬ বছর আগে। ফিটনেসবিহীন ফেরিটি জোড়াতালি দিয়ে বিআইডব্লিউটিসি দেশের বিভিন্ন নৌরুটে চালিয়ে আসছিল। মেয়াদ উত্তীর্ণর বিষয়টি কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও তা কেউ আমলে না নেয়ায় গত ২৭ অক্টোবর ফেরিটি পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহন আন-লোডের সময় পদ্মায় ডুবে যায়। বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা ও রুস্তম’-এর সাহায্যে পণ্য বোঝাই ১৪টি ট্রাক-কভার্ডভ্যান ও চারটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। ফেরিটি উদ্ধারের পর তা পুনঃ মেরামত শেষে স্বাভাবিক চলাচল করতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে এবং এই বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এটাকে দিয়ে আর কোনোভাবেই কাজ করা সম্ভব নয়।

বিআইডব্লিউটিএ মেরিন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো: আব্দুর রহিমের সাথে ফেরি উদ্ধারের বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী একটি রো রো ফেরির মেয়াদ ৩০ বছর। পরবর্তী সার্ভের মাধ্যমে আরো ৫ বছর মেয়াদ বাড়ানো যায়। আমানত শাহর মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে কেন ফেরিটি উদ্ধার করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষের বিষয়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com