আবেদন-নিবেদন নয়, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিতে কর্মসূচি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির একাংশের সভাপতি আবদুল করিম আব্বাসী ও মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো দপ্তর সম্পাদক শামীম আহাম্মদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা এই আহ্বান জানান।
আবদুল করিম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘বাংলাদেশে নারী অধিকার ও নারী নেতৃত্বের অন্যতম পুরোধা, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধান নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। ‘‘মাল্টিফাংশনাল’’ অসুস্থতা নিয়ে তিনি রাষ্ট্রীয় অবহেলায় সুচিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। অবিলম্বে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বিদেশে উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে সুচিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই।’
বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, ‘বেগম জিয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তিনি শুধু তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীই নন, সেইসঙ্গে তিনি স্বাধীনতার মহান ঘোষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের সহধর্মিনী। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত। এক ফরমায়েশি রায়ে তাকে কারাবন্দি রেখে তার চিকিৎসায় করা হয়েছে চরম অবহেলা।’
তারা আরও বলেন, ‘আজ সংবাদপত্রগুলোতে পরিষ্কার দেখা গেছে-বেগম জিয়া নানা রোগে আক্রান্ত। অবিলম্বে তার উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা প্রয়োজন। যেসব রোগের সুচিকিৎসা চিকিৎসক ডেকে নিয়ে করা সম্ভব না। দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে যেভাবে সুচিকিৎসা বঞ্চিত করা হচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণ নীরবে তা সহ্য করবে না।’
‘স্বৈরশাসনের কবল থেকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক পথে পরিচালিত করার প্রধান নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকারের বিরূপ অমানবিক আচরণের জবাব বাংলাদেশের মানুষ কঠোরভাবেই দেবে’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে আবদুল করিম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে নেওয়ার পর থেকে সুচিকিৎসার অভাবে ধুঁকে-ধুঁকে মরছেন বেগম জিয়া। গণতন্ত্রের বাতিঘরের এই সংগ্রাম কোনোদিন বৃথা যাবে না, বৃথা হওয়ার নয়।’
২০ দলীয় জোটের প্রধান নেতৃত্বাদানকারী বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে এলডিপির দুই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশবাসী প্রার্থনা করছেন। প্রার্থনা করছেন লাখ-লাখ অনুসারী, নেতাকর্মী। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিএনপিকে আরও কার্যকর, শক্তিশালী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। আবেদন-নিবেদন নয়, কঠোর কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বেগম জিয়াকে শোষকের কারাগার থেকে মুক্ত করার সংগ্রাম শুরু করুন। বেগম জিয়াকে আমরা ধুঁকে-ধুঁকে মরতে দেবো না। তিনি আবার বাংলাদেশের পথদিশারী হয়ে এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন, বলে প্রত্যাশা করি।’
সরকারের উদ্দেশে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বুধবার সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্য শুনে দেশবাসীর মনে হয়েছে, এই দেশে কোনদিন শান্তি ও শৃঙ্খলা দেখতে চান না। তিনি জনগণকে এখনো বিভাজনের দিকেই ঠেলে রাখতে চান। কিন্তু ইতিহাস স্বাক্ষ্য, বিভাজনের নীতি করে ব্রিটিশরা যেমন স্বাধীনতা রুখতে পারেনি, অন্যায্যতা করে যেমন পাকিস্তান পারেনি, তেমনি আওয়ামী লীগও পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠে এই বিভাজনের নীতি রুখে দেবে।’