ফেসবুকে প্রথমে পরিচয়। এরপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সেই প্রেমকে পরিণতি দিতে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশেই চলে আসেন। সেইসঙ্গে পাল্টে ফেলেন নিজের ধর্মও। খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণের পর জামালপুরের যুবক রবিউল হাসান রুমানকে (২৯) বিয়ে করেন তিনি। নিজের ধর্ম ত্যাগ করা মেক্সিকান ওই তরুণীর নাম গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেস (৩২)।
জানা গেছে, এফিডেভিটের মাধ্যমে খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণের পর মেক্সিকান ওই তরুণী নিজের নাম রেখেছেন লাইলী আক্তার। বর্তমানে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পোগলদিঘা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রবিউল হাসান রুমানকে বিয়ের পর সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। প্রতিনিয়ত তাকে দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় করছেন প্রতিবেশীরা।
তরুণীর বর রুমান ময়মনসিংহের রুমডো ইনস্টিটিউট অব মডার্ন টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যালে ডিপ্লোমা শেষে ফ্রিল্যান্সিং করছেন। তিনি বলেন, ভালোভাবে ইংরেজিতে কথোপকথনের জন্য তিনি একজন দক্ষ বন্ধু খুঁজছিলেন। ২০১৯ সালে মেক্সিকান তরুণী গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেসের সঙ্গে ফেসবুকে তার পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
‘টানা দুই বছর প্রেমের পর গত ২১ নভেম্বর সকাল সোয়া ৮টায় বাংলাদেশে আসে গ্লাডিস নাইলি। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাই। ওইদিনই ঢাকা জজ কোর্টে গিয়ে এফিডেভিট করে খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণের পর আমরা বিয়ে করি’, যোগ করেন রবিউল হাসান রুমান।
ছেলের বিয়ের বিষয়ে বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের সম্পর্কের ব্যাপারে ছেলে আমাকে আগেই জানিয়েছিল। পরিবারের সবাই বিমানবন্দরে গিয়ে গ্লাডিস নাইলিকে গ্রহণ করেছি। ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী, তাদের বিয়ে হয়েছে। পরে ছেলে ও পুত্রবধূকে বাড়িতে নিয়ে আসি।’
জানতে চাইলে গ্লাডিস নাইলি জানান, মেক্সিকোর পোএবলা শহরের ব্যবসায়ী গ্রেগ্রোরিও টরিবিওর মেয়ে তিনি। মেক্সিকোর বেনেমেরিটা অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অব পোএবলা থেকে ২০১৬ সালে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন তিনি। রবিউলের সঙ্গে প্রেম হওয়ার পর বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে বিলম্ব হয়। করোনার সংক্রমণ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি।
গ্লাডিস নাইলি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ দেখতে অনেক সুন্দর এবং এই গ্রামের লোকজন অনেক সহজ-সরল। তাদের সঙ্গে মিশে আমার ভালো লেগেছে। কয়েক দিন শ্বশুরবাড়িতে থাকার পর মেক্সিকোতে ফিরে যাবো। পরে দুই দেশের নিয়ম অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিকতা শেষে রবিউলকে মেক্সিকোতে নিয়ে যাবো।’