শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন

যৌতুকের জন্য রক্তাক্ত করে ঘরে বন্দি, পালিয়ে বাঁচলেন গৃহবধূ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২১
  • ১০৭ বার

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া গ্রামে যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় গৃহবধূকে স্বামী-শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে অমানুষিক নির্যাতন করে রাতভর ঘরে বিনা চিকিৎসায় আটকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। পরে পালিয়ে বেঁচেছেন ওই গৃহবধু। তাকে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নির্যাতিত গৃহবধূর বাবা থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে নির্যাতিতার পরিবার নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কাজ করা সংগঠন লোকমোর্চার সহযোগীতা কামনা
করেছেন।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর বাবা প্রান্তিক কৃষক আদম আলী বলেন, আমার মেয়ে রুমি খাতুনকে (২২) চার বছর আগে জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া গ্রামের দরগাপাড়ার সাহেব আলীর ছেলে শান্ত মিয়ার (২৫) সাথে বিয়ে দেই। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই বছর বয়সের ইব্রাহিম নামে একটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ফ্রিজ থেকে শুরু করে সাধ্যমত যাবতীয় আসবাবপত্র
দিয়েছি। মাঝে মধ্যে নগদ টাকাও দিয়েছি। তারপরও জামাই শান্ত মিয়া তার বাবা সাহেব আলী ও মা আমেনার পরামর্শে আমার মেয়ের কাছে প্রায়ই যৌতুক বাবদ মোটা অংকের টাকা দাবি করে আসছিল। আমি তাদের কথা মত ৫০ হাজার টাকা দিতে না পারায় শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে আমারা মেয়ে রুমি খাতুনকে তার মুখের দু’পাশে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কাঠের বাটাম ও কিল-ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে ঘরের ভিতরে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই আটকে রাখে। আমার কন্যাকে নির্যাতনের ব্যাপারে লোকমোর্চার সহযোগীতা কামনা করছি।

হাসপাতালে ভর্তি গৃহবধু রুমি খাতুন বলেন, আমার স্বামী শান্ত মিয়া ও শ্বশুর সাহেব আলী এবং শাশুড়ি আমেনা বেশ কিছুদিন ধরে আমার মা-বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য আমাকে চাপ দিয়ে আসছিল। আমি ওই টাকা নিয়ে আসতে অস্বীকার করায় শনিবার রাতে তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমি প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে কাঠের বাটাম ও কিল-ঘুষি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে। তারা আমাকে চিকিৎসা করা তো দুরের কথা, খেতে পর্যন্ত দেয়নি। আমি রোববার দুপুরের দিকে পালিয়ে গিয়ে মা-বাবাকে খবর দিলে তারা আমাকে উদ্ধার
করে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করেন। যৌতুকের জন্য স্বামী-শাশুড়ি ও শ্বশুর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করলেও আমি একমাত্র সন্তানের কথা ভেবে তাদের সব অত্যাচার সহ্য করে সংসার করে আসছিলাম।

আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোক্তার বলেন, ঘটনাটি অমানুষিক এবং চরম অপরাধ। এখনো পর্যন্ত কোনোপক্ষই আমার কাছে আসিনি। উভয়পক্ষ চাইলে আপস নিস্পত্তির চেষ্টা করব।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন, ঘটনার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com