তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশটির নিম্নকক্ষে (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ) ইমপিচড হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চূড়ান্ত মীমাংসার বিষয়টি এখন উচ্চকক্ষে (সিনেট) যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। সিনেটে বিচারটির প্রক্রিয়া কিভাবে এগোবে তা নিয়ে মঙ্গলবার বিতর্ক শুরু হয়েছে নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠের নেতা মিচ ম্যাককোনেলের মধ্যে।
এ দিকে রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটে চূড়ান্ত বিচারে যারা তাদের দলে থাকবে, তাদের নাম প্রকাশ করতে তিনি এখনো প্রস্তুত নন বলে জানিয়েছেন পেলোসি। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, কোন প্রক্রিয়ায় সিনেটে বিচারটি হবে তা না জানা পর্যন্ত আমাদের পক্ষের ইমপিচমেন্ট ম্যানেজার বাছাই করা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, চলমান ক্রিসমাস বিরতি শেষে আগামী বছরের জানুয়ারিতে বিচারটি শুরুর কথা রয়েছে। সিনেটের মোট ১০০ আসনের মধ্যে রিপাবলিকানদের ৫৩, ডেমোক্র্যাটদের ৪৫ ও স্বতন্ত্র দু’টি। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করতে হলে এ চেম্বারের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দরকার। এ ছাড়া সিনেটে কোন প্রক্রিয়ায় বিচার এগোবে, তা এখনো না জানায় গত সপ্তাহে হাউজে পাস হওয়া ইমপিচমেন্ট আর্টিকেলগুলো এখনো সিনেটে পাঠাননি পেলোসি। এমতাবস্থায় দুই পক্ষের মধ্যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
অন্য দিকে ফক্স ও ফ্রেন্ডস টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাককোনেল বলেন, পেলোসির মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, সিনেটে বিচারটি কিভাবে এগোনো উচিত, তা তার কাছ থেকেই আমাদের শিখতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা সাক্ষীর কথা বাতিল করে দেইনি। ১৯৯৯ সালে সিনেটে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ইমপিচমেন্ট যে প্রক্রিয়ায় এগিয়েছিল, এবার একই পদ্ধতিতে হবে বলে জানান তিনি। এ চেম্বারের বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ম্যাককোনেল বলেন, প্রথমে একটা পারম্ভিক তর্কবিতর্ক হবে। এরপর লিখিত প্রশ্ন নেয়া হবে। ঠিক এ পর্যায়ে সাক্ষীদের ডাকা হবে, যেমনটি হয়েছিল ক্লিনটের ক্ষেত্রে।
তবে ডেমোক্র্যাটদের আশঙ্কা, নিজের বিরুদ্ধে প্রমাণিত চারটি সাক্ষী নি¤œকক্ষের মতো সিনেটেও বাতিল করে দিতে পারে ট্রাম্পের দল। তাই তাদের দাবি, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইউক্রেন সম্পর্কিত প্রমাণিত চারটি সাক্ষী সিনেটে সত্য বলে ঘোষণার নিশ্চয়তা দিতে হবে তাদের। অন্য দিকে ম্যাককোনেল বলেন, ক্লিনটনের জন্য যে প্রক্রিয়া যথেষ্ট ভালো বলে প্রমাণিত হয়েছে, ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও তা-ই হবে।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিম্নকক্ষে দু’টি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথম অভিযোগে মার্কিট প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। অভিযোগটিতে আগামী বছর মার্কিন নির্বাচনের আগে ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে একটি দুর্নীতি তদন্ত করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদমায়ার জেলেনস্কির ওপর চাপ প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে।
দ্বিতীয় অভিযোগ, নিম্নকক্ষে তার বিরুদ্ধে আনীত ইমপিচমেন্ট অভিযোগ তদন্তে তিনি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে আহ্বান করা সত্ত্বেও তিনি তা করেননি। সূত্র : বিবিসি।