সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন

করোনার বুস্টার ডোজে অন্য ব্র্যান্ড, যা জানা জরুরি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১৫৭ বার

পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশের শতকরা প্রায় ৩৫ ভাগ মানুষ করোনার ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ সম্পন্ন করেছেন। যারা এমনটি করেছেন, তাদের বলা যায় পূর্ণাঙ্গ ভ্যাকসিন গ্রহণকারী। অন্যভাবে বলা যায়, আমাদের বেশিরভাগ মানুষই এখনো পূর্ণাঙ্গ ভ্যাকসিন গ্রহণকারী নন। এর মধ্যেই চলছে বুস্টার ডোজের কার্যক্রম। যারা দুই ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করার পর ৬ মাস সময় অতিক্রম করেছেন, তারা সবাই বুস্টার ডোজ গ্রহণের উপযোগী। তবে বয়স ও পেশা বিবেচনা করে অগ্রাধিকারভিত্তিক ভ্যাকসিন প্রদান অব্যাহত রয়েছে।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যারা দুই ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন শুরুতে তাদের দেহে যে পরিমাণ এন্টিবডি তৈরি হয়েছিল, সময় অতিক্রমের পর তার মাত্রা কমে যাচ্ছে।

অ্যান্টিবডি হচ্ছে রোগ প্রতিরোধক দেয়াল। এই দেয়াল সময়ের বিবর্তনে দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন প্রয়োজন পড়ে নতুন করে নির্মাণ। বুস্টার ডোজ হচ্ছে এই রোগ প্রতিরোধক দেয়ালের শক্তি বৃদ্ধির টনিক। এ কারণে অনেক রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর প্রয়োজন পড়ে বুস্টার ডোজের।

বুস্টার ডোজ ক্রমহ্রাসমান অ্যান্টিবডির মাত্রা বৃদ্ধি করে করোনা ভাইরাসের বিরূদ্ধে প্রতিরোধ ব্যূহ রচনা করে। করোনা ভাইরাসের তীব্রতা কমাতে বুস্টার ডোজ কার্যকর ভ‚মিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি করোনাজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা হ্রাস করে বুস্টার ডোজ। ডেল্টা কিংবা ওমিক্রনের বিরুদ্ধেও এ বাড়তি ডোজ কার্যকর। এ কারণে সারা পৃথিবীর চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বুস্টার ডোজের জন্য মানুষকে উৎসাহিত করছেন।

যারা ইতোপূর্বে দুডোজ অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েছেন, বুস্টার ডোজ হিসেবে কি তারা অন্য ব্রান্ডের ভ্যাকসিন নিতে পারবেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হ্যাঁ, এমনটি নিলে রোগ প্রতিরোধক দেয়াল আরও মজবুত হবে। যারা ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন, তারা এখন চাইলে মডার্না নিতে পারেন। চিকিৎসা বিষয়ক বিশ্ববিখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেটের ২০২১ ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত একটি গবেষণায় ৭ ধরনের ভ্যাকসিন বুস্টার ডোজ হিসেবে নেওয়ার জন্য নিরাপদ এবং কার্যকর হিসেবে দেখিয়েছেন এক দল গবেষক। তার মধ্যে রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, নোভাভ্যাক্স, জনসন এন্ড জনসন, মডার্না, ভালনেভা ও কিউরিভ্যাক। এক ধরনের ভ্যাকসিন দুই ডোজ সমাপ্তির ছমাস পর বুস্টার ডোজ হিসেবে এই সাত ধরনের ভ্যাকসিনের যে কোনোটি নিতে পারেন। তবে বুস্টার হিসেবে ভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন নিলে রোগ প্রতিরোধ আরও জোড়ালো হবে বলে তারা তাদের গবেষণায় বলেছেন। এ কারণে আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দুই ডোজ নেওয়ার পর এখন বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজারেরটা নিচ্ছেন। এটি ইমিউনিটি আরও শাণিত করবে বলে আমাদের আশাবাদ রয়েছে।

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও করোনা হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা এটাই বলছে, ভ্যাকসিন গ্রহণের ফলে করোনার তীব্র আক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়। পাশাপাশি হাসপাতালে ভর্তির প্রবণতা এবং মৃত্যুঝুঁকি বহুলাংশে হ্রাস পায়। তাই ওমিক্রনসহ তীব্র করোনা থেকে সুরক্ষায় আমাদের ভ্যাকসিন গ্রহণ করতেই হবে।

লেখক : ক্লাসিফাইড মেডিসিন

স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com