বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি (এফবিসিসিআই)। সংগঠনটির নেতারা বললেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর সময় এখন নয়। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘এফবিসিসিআই’র তারা এসব কথা বলেন।
এ সময় তারা আরো বলেন, কোনোভাবেই এ মুহূর্তে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যাবে না। দাম বাড়লে অর্থনীতিতে বড় রকম ক্ষতি হবে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে আরো। তাদের মতে- গ্যাস ও বিদ্যুৎের দাম বাড়বে কি না, এ সিদ্ধান্ত আসতে হবে রাজনৈতিকভাবে; আমলাদের থেকে নয়।
বাজারে হু হু করে বাড়ছে ভোগ্যপণ্যসহ সব পণ্যের দাম। আমদানি ব্যয় মেটাতে ডলার বেশি খরচ করতে হচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে ডলারের দাম। অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থায় টিকে থাকতেই হিমশিম অবস্থা। এমন অবস্থায় গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আত্মঘাতী বলে মনে করছে এফবিসিসিআই।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রস্তাবিত দাম বর্তমান দামের দ্বিগুণের বেশি। এটি কার্যকর হলে বাড়বে উৎপাদন খরচ। এতে অর্থনীতিতে বড় ধরনের ক্ষতি হবে।
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, আমরা যদি ১৩ টাকা গ্যাসকে ২৮ টাকা করে দেই, তাহলে গ্যাস হয়তো থাকবে। তবে ইন্ডাস্ট্রি থাকবে না। দাম বাড়ালে উৎপাদন খরচও বাড়ানো হবে, এতে আমরা দুর্বল পরিস্থিতির শিকার হব। আমাদের ব্যবসায়ের ব্যয় ও উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে।
এ সময় জসিম উদ্দিন আরো বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে এখন সরকারের উচিত হবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের আমূল সংস্কার আনা। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। বিদ্যুতের অতিরিক্ত উৎপাদন বন্ধ করে অহেতুক খরচ কমিয়ে আনা।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার উল আলম বলেন, দেশে এখন ডলার–সঙ্কট চলছে। ইউক্রেন–রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। এখন যদি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, উৎপাদন খরচ বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে ভোক্তার ওপর।
গ্যাস বিদ্যুৎতের দাম বাড়ানোর চেয়ে অপচয় রোধ করার ওপর জোর দেন ব্যবসায়ীরা। অর্থনীতির এমন অবস্থায় দাম সমন্বয় করতে আমলাতান্ত্রিক নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চান তারা।