পার্লামেন্ট চাইলে ও সবুজ সঙ্কেত পেলে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মিরের দখল পেতে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেছেন ভারতের নতুন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। তিনি বলেছেন, বহু বছর আগে পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাশ করা হয়েছিল যে, পুরো জম্মু-কাশ্মিরই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। পার্লামেন্ট যদি চায়, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মরও আমাদের বলে গণ্য হোক ও তা সুনিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়া হয়, তা হলেই আমরা উপযুক্ত পদক্ষেপ নেব।
৩১ ডিসেম্বর দেশের সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন নারাভানে। আর নতুন পদ সৃষ্টির পর দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। সপ্তাহ কয়েক আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন জেনারেল বিপিন রাওয়াত। তিনি বলেছিলেন, যারা জনগণের আন্দোলনকে সঠিক পথে চলার জন্য নেতৃত্ব দিতে পারেন না, তারা আদৌ নেতা নন। আন্দোলনের নামে আগুন জ্বালানো বা হিংসা ছড়ানোয় প্রশ্রয় দেয়া মোটেই একজন নেতার কাজ নয়।
অনেকের মতে, সেই বিতর্কিত মন্তব্যে প্রলেপ দিতেই এদিন সংবাদ সম্মেলনে সংবিধান ও প্রস্তাবনার প্রসঙ্গ তুলেছেন জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, সংবিধানে যে ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সাম্য, সৌভ্রাতৃত্বের উল্লেখ রয়েছে, দেশের নাগরিকরা যাতে তা থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকে সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রয়েছে সেনাবাহিনীর। তিনি বলেছেন, নৌ, স্থল ও নৌ— সেনাবাহিনীর এই তিন বিভাগের মধ্যে যোগসূত্রের ক্ষেত্রে, উপযুক্ত সমন্বয় সাধনের জন্য ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ পদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
নারাভানে বলেছেন, ভবিষ্যতের লড়াই হবে অনেক বেশি জটিল ও নেটওয়ার্ক নির্ভর। এক্ষেত্রে সব বাহিনীর মধ্যে উপযুক্ত সমন্বয় সাধন অত্যন্ত জরুরি। আগামী দিনে সেভাবেই জওয়ানদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আর প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে গুণগতমানের উপরই। ভারতীয় সেনাবাহিনী অত্যন্ত পেশাদার। পেশাদারিত্ব ও ন্যায়ের মিশেলেই বাহিনী সীমান্তে শান্তিরক্ষার্থে এবং যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা করে। একসময় ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। চীনের সঙ্গে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে।
এক প্রশ্নের উত্তরে নারাভানে জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলের নিরাপত্তা আরও মজবুত করতে একাধিক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। চীনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সীমান্তে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র মজুত রাখা হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি সামলাতে সেনাবাহিনী সজাগ রয়েছে।
সূত্র : বর্তমান