একটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে চোখের সুস্থতাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিভিন্ন কারণে শিশুর চোখে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের সমস্যা। জন্মগত ছানি, কর্নিয়ায় ঘা, চোখে আঘাত, চোখের প্রদাহ, চোখে অ্যালার্জি, চোখ দিয়ে পানি পড়া এসব সমস্যার মধ্যে অন্যতম।
ছানি : জন্মের পর বা কিছুদিন পর এক বা উভয় চোখে সাদা আস্তর দেখা যাওয়া ছানিরোগের লক্ষণ। ডেলিভারির সময় চোখে আঘাতের কারণে, গর্ভকালীন মায়ের রুবেলা জ্বর, বিভিন্ন ওষুধ সেবন এবং বংশগত কারণে শিশুর চোখের ছানি পড়তে পারে। অপারেশনের মাধ্যমে ছানি অপসারণ এবং পরবর্তী সময়ে সময়মতো কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। তবে অপারেশনে বিলম্ব করলে শিশু চিরতরে দৃষ্টি হারাতে পারে।
দৃষ্টিশক্তিজনিত দৃষ্টিস্বল্পতা : ঘনঘন চোখ নড়াচড়া করা, চোখ বেঁকে যাওয়া, বস্তু অনুসরণ না করতে পারা, ঘনঘন চোখে হাত দেওয়া, কাছে গিয়ে টেলিভিশন দেখা, মাথাব্যথা করা ইত্যাদি দৃষ্টিস্বল্পতা লক্ষণ। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চশমা ব্যবহারের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
কর্নিয়ার ঘা : অপুষ্টিজনিত কারণে ভিটামিনের অভাবে দুই চোখে ঘা হতে পারে। ডেলিভারির সময় চোখে আঘাত এবং জন্মের পর যে কোনো সময় জীবাণু সংক্রমণে চোখে ঘা হতে পারে। চোখব্যথা, আলোয় খুলতে না পারা, লাল হওয়া, কালোমণিতে সাদা দাগ পড়া এ রোগের লক্ষণ। ডাক্তারের পরামর্শে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব।
চোখে অ্যালার্জি : ঘনঘন চোখে হাত দেওয়া, চোখ কচলানো, চোখ লাল হওয়া এবং শুষ্ক মৌসুমে এ রোগ বেশি হয়। বছরে ২ থেকে ৩ বার চোখে অ্যালার্জি হতে পারে। ধুলাবালি, ধোঁয়া, খাবার এবং বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থে শরীর ও চোখে অ্যালার্জি হতে পারে।
চোখ দিয়ে পানি পড়া : জন্মগতভাবে চোখের পানি সরে যাওয়ায় নেত্রনালি বন্ধ থাকলে চোখের পানি উপচে পড়ে। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে বন্ধ নালি আপনাতেই খুলে গেলে চোখের পানি পড়া অনেকাংশে কমে যায়। ডাক্তারের পরামর্শে চোখের কোণে মালিশ এবং চোখে ড্রপ ব্যবহারে এ রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব। সাধারণত শিশুরা অনেক কিছু বলে বোঝাতে পারে না। তাই সমস্যাগুলো ঠিকমতো ধরাও যায় না। এসব সমস্যা শেষ পর্যন্ত শিশুর অন্ধত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই শিশুর দৃষ্টি অধিকার রক্ষায় সবার সচেতনতা প্রয়োজন।