এটা এক অভিনব জাদুঘর যার সাথে পুরাকীর্তির সম্পর্ক নেই বিন্দুমাত্র। তবুও বলতে হবে জাদুঘর। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা এক অপূর্ব আবিষ্কার। আবিষ্কর্তা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জাদুঘরটি নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের আহলাদ, অহমিকা ও গর্বের শেষ নেই। এ প্রসঙ্গে বিরোধী দলগুলোকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেও জুড়ি নেই তাদের। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখে হর-হামেশাই উচ্চারিত হয় জাদুঘরটির কথা। করোনা মহামারীকালে বিপুল রাষ্ট্রীয় ব্যয়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং অত্র জাদুঘরে পাঠানোর জমকালো উৎসব দেশবাসী ভালোভাবেই প্রত্যক্ষ করেছে। আত্মঅহমিকায় উদ্দীপ্ত নেতারা সুযোগ পেলেই বলে থাকেন, লোডশেডিং জাদুঘরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ এখন বিদেশে রফতানি করা হবে। জাদুঘরকেন্দ্রিক আরো অনেক সাফল্যের কথাও তারা উচ্চারণ করছেন বেশ জোরেশোরে। তাদের দাবি মৌসুমি দুর্ভিক্ষ মঙ্গাকেও পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে সেই জাদুঘরে। বাংলাদেশের মানুষ এখন বেহেশতে বসবাস করছে। সঙ্গত কারণেই জীবন-জীবিকার অনিশ্চয়তা, বেকারত্ব, জঠরজ্বালা, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিসহ জনজীবনের সব দুর্ভোগও আশ্রয় নিয়েছে কথিত জাদুঘরে। সুযোগ বুঝে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নির্বাচনী ওয়াদা ‘ঘরে ঘরে চাকরি দেবো, ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবও’ ঢুকে পড়েছে এ জাদুঘরে।
তবে সম্প্রতি দেশব্যাপী বিরোধী দলগুলোর ‘নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের’ অধীন সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর আওয়ামী লীগের জাদুঘর প্রীতি নতুন মাত্রা পেয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করতে গিয়ে জাদুঘর প্রসঙ্গ টেনেছেন। দম্ভের সাথে ঢাকায় এক দলীয় সমাবেশে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত মাথা থেকে নামিয়ে ফেলুন। সেটা আর হবে না। আদালত মিউজিয়ামে পাঠিয়েছেন। আমাদের দোষ নেই। আমরা নিষিদ্ধ করিনি।’ তিনি ‘জাদুঘরভীতি’ প্রদর্শনে এক ধাপ এগিয়ে আরো বলেন, ‘বিএনপির দাবি মতে তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার আর দেশে আসবে না। আন্দোলনে খেলা হবে। নির্বাচনে খেলা হবে। ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে খেলা হবে। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে।’ ওবায়দুল কাদের যেসব বিষয়ে ‘খেলা হবে’ বলে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতোই আওয়ামী লীগ ভোট জালিয়াতি, প্রহসনের নির্বাচন ও দুর্নীতিকেও ইতোমধ্যেই জাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে। সামনের নির্বাচনে দলটি বিএনপির দুর্নীতি, ভোট জালিয়াতি ও প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করবে।
বিরাজমান রাজনৈতিক ডামাডোলে ‘জাদুঘরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ উপাখ্যান জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক ঘটাচ্ছে। দেশের মানুষ ভালোভাবেই জানে যে, দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ব্যাপক গণ-আন্দোলনের সফল পরিণতি হিসেবে। ঐতিহাসিক সেই রাজনৈতিক আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিল আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী। আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল সুষ্ঠু নির্বাচন ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা। যৌক্তিক কারণেই গণমানুষের মনে অতিসাধারণ একটি জিজ্ঞাসা, আদালত কী করে জনগণের ভোটাধিকার সংরক্ষণে রক্ষাকবচ তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে হত্যা করল। আদালত কিভাবে মানুষের সুষ্ঠু ভোটাধিকার ক্ষুন্ন করতে পারে। তাহলে সরকার সংবিধান সংশোধন করতে গেল কেন? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, আওয়ামী লীগ ও আদালতের যৌথ প্রযোজনায় তত্ত্বাবধায়কসরকারকে জাদুঘরে পাঠানো হয়েছে। আদালত সরকারপদ্ধতি বাতিল করলেও রায়ে বলেছিল পরবর্তী দু’টি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। আদালতের দোহাই দিলেও সরকার রায় প্রতিপালন করেছে খণ্ডিতভাবে, অনেকটা দুরভিসন্ধি থেকে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কথিত জাদুঘরে পাঠাতে গিয়ে কোন কিছুরই তোয়াক্কা করেনি। এমনকি বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে গঠিত সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির সুপারিশও অগ্রাহ্য করেছে। বিএনপিসহ সব বিরোধী দলের দাবি এবং সুশীলসমাজের আবেদন-নিবেদন পদদলিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সবাই ভালোভাবই জানতো আদালত-সরকারের এ যৌথ পদক্ষেপ বাংলাদেশে বিকাশমান সংসদীয় গণতন্ত্রের রচনা করবে। কিন্তু এ বিষয়ে সংবিধানের অভিভাবক আদালত জনস্বার্থে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকারকে কিছুই বলেনি। বিষয়টি দেশের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর হলেও এ ব্যাপারে আদালতের নীরবতা অনেককেই হতবাক করেছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জাতির জন্য এটা ছিল খুবই পরিতাপের বিষয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সরকার এমন একটি নির্বাচন তদারকি ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়, যার জন্য তদানীন্তন ক্ষমতাসীন দল বিএনপি ছাড়া সবাই লড়াই করেছে। একপর্যায়ে গণ-আন্দোলনের প্রতি সম্মান জানিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয় বিএনপি। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে সংবিধান সংশোধন করে পদ্ধতিটি কার্যকর করে। তৎক্ষণাৎ পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে। সেই তত্ত্বাবধায়কসরকারের অধীন সুষ্ঠু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। তাদের অভিমত, আওয়ামী লীগের গর্বের এই জাদুঘরের মাধ্যমে বাংলাদেশে কার্যত ফ্যাসিবাদ ও কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ পালাবদল পদ্ধতিকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় আওয়ামী লীগ তা জাদুঘরে প্রেরণ করেছে। অভিনব এই প্রদর্শনশালাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আওয়ামী লীগের ‘স্বল্প গণতন্ত্র অধিক উন্নয়ন’ তত্ত্বের ওপর ভর করে। আওয়ামী লীগ আজীবন এই তত্ত্বের ঘোরতর অনুসারী। ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতার হুঁশিয়ারি থেকে এটাও বোঝা যাচ্ছে যে, কথিত জাদুঘরটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনীতির খেলার এক মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠায় হরতাল, অবরোধ, অগ্নিসন্ত্রাসসহ নজিরবিহীন সহিংস আন্দোলন প্রত্যক্ষ করেছে বাংলাদেশ। দাবি আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামীসহ অনেক দল ১৭৩ দিন হরতাল পালন করেছে। তবে আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নীতিগত অবস্থান থেকে সে আন্দোলন করেনি। তাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতা কুক্ষিগত করা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে জাদুঘরে প্রেরণ তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
অনেক বিশ্লেষক বলছেন, ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবদের সহায়তায় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অস্বাভাবিক শক্তি নিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠান তত্ত¡াবধায়ক সরকারকে জাদুঘরে পাঠানোর সুযোগ করে দেয়। ওয়ান-ইলেভেন দেশে রাজনীতিবিদ-আমলা-ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে সাহায্য করে। লুটপাটের মাধ্যমে গোষ্ঠীশাসন কায়েমের পথও সুগম করে। সে গোষ্ঠীশাসকরাই এখন সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অপেক্ষায় ছিল। দলটি এ মোক্ষম সুযোগটি কাজে লাগায় এবং পদ্ধতিটি বাতিল করে দেয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাদুঘরে পাঠানোর ফলে দেশ থেকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নির্বাসনে চলে গেছে এবং কায়েম হয়েছে ফ্যাসিবাদ ও কর্তৃত্ববাদী শাসন। পুরো জাতি এখন স্বৈরতন্ত্রের যাঁতাকলে পিষ্ট। অতএব ওবায়দুল কাদেরদের দাবিকৃত এই জাদুঘরকে ফ্যাসিবাদের প্রদর্শনশালা বললে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন স্থাপনা বা ‘বিশেষ ঘরের’ প্রয়োজন হয়। উল্লিখিত জাদুঘর তেমনই একটি ঘর। সম্প্রতি এমন বিশেষ ঘরের বিরুদ্ধে অনেক রাজনৈতিক দলকে রাজপথে শ্লোগান দিতেও দেখা গেছে।
তাদের দৃঢ় অভিমত, অনুপম এই রাজনৈতিক জাদুঘরটিকে টেকসই করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের নিরলস প্রয়াসের কোনো অন্ত নেই। একদলীয় শাসনব্যবস্থা বহাল রাখতে হলে ভিন্ন মত ও বিরোধী দল নির্মূলের কোনো বিকল্প নেই। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনও একটি মারাত্মক চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ ওবায়দুল কাদেরের জাদুঘরে প্রেরণ ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। বস্তুত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের একতরফা, বিতর্কিত ও প্রহসনের নির্বাচনের পর গণতন্ত্র, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, কার্যকর সংসদ, কার্যকর বিরোধী দল, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, স্বাধীন গণমাধ্যম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও সুশাসন সবই ঢুকে পড়েছে ওই জাদুঘরে। ফলে গণমানুষের নাগরিক অধিকার বিশেষ করে ভোটাধিকার চলে গেছে নির্বাসনে। এখন সার্বিক পরিস্থিতির মাত্রাতিরিক্ত অধঃপতনের স্বীকৃতি পাওয়া যাচ্ছে বিশ্ব পরিসরে। বিগত এক দশক যাবৎ গণতান্ত্রিক বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলো, জাতিসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ক্রমাগত বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ক‚টনীতিকরা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পরিসর সঙ্কুচিত হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করছে। তারা একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছেন।
সমালোচকদের মতে, বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো নজির নেই। আওয়ামী লীগের নিরপেক্ষ নির্বাচনের মডেল হলো প্রতিপক্ষের প্রার্থীর ওপর সশস্ত্র হামলা, প্রচারণায় বাধা দেয়া, রাতে ব্যালট বাক্স ভরাট করা, প্রতিপক্ষের নির্বাচনী এজেন্টকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেয়া কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে গুম করে দেয়া, কেন্দ্র থেকে ভোটার তাড়িয়ে দেয়া, ব্যালট পেপার ছিনতাই করা, জালভোট প্রদান করা, ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়া ইত্যাদি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত চারটি জাতীয় নির্বাচনে এসব অপকর্ম সংঘটিত হয়নি বলে প্রতিটি নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। প্রত্যেকবারই ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনে পরাস্ত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাতিলের পর জাতীয় নির্বাচনের প্রত্যেকটিতে আওয়ামী লীগের রেকর্ড বিজয় এবং বিরোধী দলের রেকর্ড পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সত্যিকার অর্থেই বিরোধী দল বিলীন হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। জাদুঘর যতই শক্তিশালী হচ্ছে গণতন্ত্র ততই দুর্বল হচ্ছে।
অভিনব এ জাদুঘরের বদৌলতে দেশ এখন ডুবছে সব দিক দিয়েই। অর্থনীতি বিপর্যস্ত। জনগণের অবস্থা ত্রাহি ত্রাহি। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে হু হু করে। গর্বের সর্বোচ্চ রেকর্ড রিজার্ভ কমছে রকেটের গতিতে। ডলারের অভাবে জ্বালানি আমদানি বন্ধ। গ্যাস-বিদ্যুৎ সঙ্কটে শিল্পোৎপাদনে ধস। জনগণের নাভিশ্বাস এবং খেয়েপরে বেঁচে থাকাই দায়। খোদ প্রধানমন্ত্রীর মুখে উচ্চারিত হচ্ছে দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস। ঠিক এমনই সময়ে আওয়ামী সরকারের অন্যায়-অহমিকা ধুলায় মিশিয়ে লোডশেডিং স্বীয় শক্তিবলে জাদুঘরের দরজা ভেঙে বেরিয়ে পড়েছে। জনতার আদালতে বিদ্যুৎ খাতের লাখো কোটি টাকার সীমাহীন দুর্নীতির সাক্ষ্য দিতে লোডশেডিংয়ের এ প্রত্যাবর্তনে আমজনতা মোটেও বিস্মিত নয়। সামনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পালা। ক্রমাগত জনদুর্ভোগে দীর্ঘদিন ভোটাধিকারবঞ্চিত মানুষের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। আন্দোলনরত বিরোধী দলগুলোর বিশেষ করে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশগুলোতে জনতার ঢল নামছে। গণদাবির প্রতি সাড়া দিয়ে যেকোনো সময়েই জাদুঘর থেকে বেরিয়ে পড়বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। রচিত হবে ফ্যাসিবাদের কবর, গণতন্ত্রের বিজয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষকদের এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।