শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২ অপরাহ্ন

পুঁজিবাদী ও ইসলামী অর্থব্যবস্থার পার্থক্য কোথায়?

মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৮৯ বার

বিশ্বের প্রতিটি দেশের অর্থনীতির মৌলিক সমস্যাবলি প্রায় একই রকম। সীমাহীন অভাব পূরণের উদ্দেশেই সীমিত সম্পদের নিয়োগ বিন্যাসই হলো প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যা। অর্থাৎ, সম্পদে স্বল্পতা ও অভাবের অসীমতা থেকে অর্থনীতির মৌলিক সমস্যাগুলোর উদ্ভব হয়। অর্থনীতিবিদ পি এ স্যামুয়েলশনের মত, অর্থনীতির মৌলিক সমস্যা তিনটি-
১. কী ও কতটুকু উৎপাদন করা হবে।
২. কী উপায়ে উৎপাদন করা হবে।
৩. কার জন্য উৎপাদন করা হবে।

প্রতিটি দেশের অর্থনৈতিক সমস্যাবলি প্রায় একই রকম হলেও বিভিন্ন দেশের সম্পদের পরিমাণে তারতম্য রয়েছে। সম্পদের এই তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে প্রত্যেক দেশ তাদের সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনা করে নিজস্ব অর্থব্যবস্থা পছন্দ করে থাকে। বর্তমানে চারটি অর্থব্যবস্থা প্রসিদ্ধি লাভ করেছে- ১. ধনতন্ত্র; ২. সমাজতন্ত্র; ৩. মিশ্র অর্থব্যবস্থা ও ৪. ইসলামী অর্থব্যবস্থা।

ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা ও ইসলামী অর্থব্যবস্থার মূলনীতিগুলোর মধ্যে আংশিক মিল লক্ষ করা যায়। যার ফলে অর্থনীতির প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠকরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন এবং উভয়ের কনসেপ্টগুলো একাকার করে ফেলেন। তাই, ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা ও ইসলামী অর্থব্যবস্থার স্বরূপ বোঝাটা জরুরি।

পুঁজিবাদী অর্থনীতির পর্যালোচনা : আমাদের মনে রাখতে হবে, পুঁজিবাদ নিছক একটি অর্থব্যবস্থা নয়; বরং একটি জীবনদর্শন ও জীবনব্যবস্থা।

পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে ব্যক্তিমালিকানার অবাধ অধিকার। ব্যক্তি সব প্রকার উৎপাদন উপকরণ, যন্ত্রপাতি ইচ্ছামতো ব্যবহারের সুযোগ লাভ করে। সে ইচ্ছামতো যেকোনো পন্থায় অর্থোপার্জন করতে পারে। আবার যেকোনো পথে নিজ ইচ্ছামতো ব্যবহার ও ব্যয় করতে পারে। ব্যক্তি, সমাজ বা রাষ্ট্র তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করার অবকাশ রাখে না। এখানে পুঁজিবাদ ব্যক্তিমালিকানার স্বীকার করে নিয়ে মানুষের স্বভাবজাত চাহিদাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এখানে তাদের কোনো গলতি নেই। তাদের গলতি হচ্ছে তারা ব্যক্তিমালিকানা ও মুনাফা বণ্টনের ক্ষেত্রে সামগ্রিক কল্যাণকে লক্ষ রাখেনি। তারা অর্থোপার্জন ও অর্থব্যয়ের ক্ষেত্রে বৈধ-অবৈধের কোনো সীমা নির্ধারণ না করে জুলুম, শোষণ ও অপচয়ের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

পুঁজিবাদের দ্বিতীয় মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে– জোগান ও চাহিদার স্বয়ংক্রিয় বিধি। এই মূলনীতিতে বলা হয়েছে- বাজারব্যবস্থাকে কোনোভাবেই রাষ্ট্রীয় বা কোনো গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে না। এটিকে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। কারণ যদি এটিকে কোনো গোষ্ঠী কর্তৃক নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাহলে উৎপাদনের স্বাভাবিক গতিশীলতা ব্যাহত হবে এবং মেধা ও শ্রমের ব্যাপক অপচয় ঘটবে।
তাদের এই মূলনীতিটি আপন স্থানে ঠিক থাকলেও এতে অবাধ স্বাধীনতা দিয়েছে এবং কোনো শর্ত রাখা হয়নি। ফলে এতে সম্পদ গুটিকয় ব্যক্তির কুক্ষিগত হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। উপরিউক্ত মূল নীতিদ্বয়ই মূলত পুঁজিবাদের ভিত্তি।

পুঁজিবাদের তৃতীয় মূলনীতি হলো- অবাধ প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার ফলে পণ্যের উৎপাদন গতিশীল হয়, উৎপাদনে স্বতঃস্ফূর্ততা আসে এবং মুনাফা অর্জন বেশি হয় সত্য, তবে একজন উদ্যোক্তা অন্যকে পরাস্ত করার জন্য অনেক সময় যে অনৈতিক ও অমানবিক পন্থা অবলম্বন করে তা বর্ণনাতীত। শর্তহীন অবাধ প্রতিযোগিতায় অল্প পুঁজির উদ্যোক্তারা পুঁজিপতিদের মোকাবেলায় টিকে থাকতে পারেন না। ক্ষতি পুষিয়ে তুলতে ও অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য তারা অসধুপায় অবলম্বন করে। যেমন- পণ্যে ভেজাল দেয়া, ওজনে কম দেয়া, মিথ্যা কথা বলে পণ্য বিক্রি করা ইত্যাদি। যার সামগ্রিক প্রভাব পড়ে জনজীবনের ওপর।

পুঁজিবাদের চতুর্থ মূলনীতি হচ্ছে- মালিক ও শ্রমিকের অধিকারে মৌলিক পার্থক্যকরণ। একদল এতে নিজেদের একক ব্যবস্থাপনায় পণ্য উৎপাদন করে ও উৎপাদন-উপকরণ সরবরাহ করে। এতে সমস্ত লাভ ও মুনাফা তারা নিজেদের পকেটে ভর্তি করে আর লোকসানও তারা একাই বহন করে। আরেক দল নামমাত্র মজুরিতে শ্রম বিক্রি করে। এ প্রক্রিয়ায় মালিকের কাছে সমস্ত মুনাফা পুঞ্জীভূত হয় এবং শ্রমিক তার ন্যায্য হক থেকে বঞ্চিত হয়। এর ফলে সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি হয়।

পুঁজিবাদের পঞ্চম ভিত্তি হলো- রাষ্ট্র বা সরকার জনগণের অর্থনৈতিক লেনদেন, আয় ও উৎপাদনে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না; বরং ব্যক্তির অর্থনৈতিক কার্যকলাপে অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চতকরণই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাদের কথা হলো- যদি রাষ্ট্র ব্যক্তির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে তাহলে ব্যক্তির উৎপাদনস্পৃহা হ্রাস পাবে এবং উৎপাদনের গতিশীলতা বিনষ্ট হবে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলকালীন এই মূলনীতিটি বাস্তবতানুগ হলেও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার সময় এটি গলার কাঁটা হয়ে উঠবে। কারণ পুঁজিবাদের মূল উদ্দেশ্যই হলো অধিক মুনাফা অর্জন। যদি ব্যবসায়ীদের অসাধু কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তাহলে তারা অধিক মুনাফা অর্জনের মোহে সমন্বিতভাবে বাজারের স্বাভাবিক অবস্থা বিনষ্ট করবে, যা দেশে অর্থনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি করবে।

পুঁজিবাদের অন্যতম একটি ভিত্তি হলো সুদ। আর পুঁজিবাদের মূল উদ্দেশ্যই হলো অধিক মুনাফা অর্জন। এ প্রক্রিয়ায় তারা অবাধ ও স্বাধীন। কাউকে বিনা সুদে ‘এক পয়সা’ ধার দেয়া পুঁজিবাদের কাছে বোকামির নামান্তর; বরং এর উপযুক্ত বিনিময় অবশ্যই আদায় করে নিতে হবে। এর হার ও পরিশোধের মেয়াদ আগে থেকেই নির্ধারণ করে নিতে হবে। পুঁজিবাদী অর্থনীতির উল্লিখিত মূলনীতিগুলো লক্ষ করলে দেখা যায়, এই অর্থব্যবস্থার মূল লক্ষই হলো অধিক মুনাফা অর্জন, যা মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন করতে ব্যর্থ। এটি যেসব অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের নিমিত্তে এটি জন্ম লাভ করেছিল তার সিকিভাগও পূরণ করতে পারেনি; বরং পুরো সমাজব্যবস্থায় অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। যার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ জন্ম হয় সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার।

ইসলামী অর্থব্যবস্থা সম্পর্কে পর্যালোচনা : ইসলামী অর্থব্যবস্থার মূলনীতিগুলোর সাথে পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার মূলনীতির আংশিক মিল দেখা যায়। এ কারণেই সমাজতন্ত্রের ধারকরা বর্তমান ইসলামী অর্থব্যবস্থাকে পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার আপডেট ভার্সন বলে থাকেন এবং উভয় অর্থব্যবস্থার পরিণাম একই হবে মর্মে বলে থাকেন। অথচ উভয় অর্থব্যস্থার অর্থনৈতিক সাফল্য, যুগোপযোগিতা ও পরিণামের মধ্যে বিশাল পার্থক্য আছে।

ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত জীবনব্যবস্থা। মানবজীবনের সূক্ষ্মাতিক্ষ্ম প্রতিটি বিষয় নিয়ে ইসলাম আলোচনা করেছে। মানবজীবনের প্রতিটি সমস্যার সমাধানে ইসলাম দিয়েছে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা। ইসলামের ধারণা অনুসারে, পুরো পৃথিবীকে আল্লাহ নিজের অধীনে রেখে সৃষ্টি করেছেন এবং পরিচালনা করছেন। সব কিছুর একচ্ছত্র মালিক ও অধিপতি একমাত্র তিনি। আল্লাহ বলেন- ‘তুমি কি জানো না, যে নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের আধিপত্য একমাত্র আল্লাহর’ (সূরা বাকারা, আয়াত-১০৭)।

বান্দাকে তিনি সম্পদের আমানতদার বানিয়েছেন এবং প্রয়োজনমতো যথোপযুক্ত খাতে ব্যয় করার ও তা বৈধ প্রক্রিয়ায় আয় করার স্বাধীনতা দিয়েছেন। তবে, তিনি বান্দাকে একচ্ছত্র মালিকানা দেননি। সে যেভাবে ইচ্ছা আয় বা ব্যয় করবে- এমন স্বাধীনতা তাকে দেয়া হয়নি।

ব্যক্তিমালিকানা মানুষের একটি স্বভাবজাত বিষয়। যে বস্তুকে মানুষ নিজের মনে করবে সে বস্তু উৎপাদনে আগ্রহ পায় আর তা সংরক্ষণে যত্নবান হয়। তার জন্য হাজারও কষ্ট স্বীকার করতে সে কুণ্ঠাবোধ করে না। অন্য দিকে যে বস্তুতে ব্যক্তির মালিকানা থাকে না, তার প্রতি সে যত্নশীল হয় না এবং তার জন্য যৎসামান্য শ্রম দিতে সে অলসতাবোধ করে। এটিই প্রকৃতির নিয়ম। তাই ইসলাম মানুষের স্বভাবজাত বিষয়কে স্বীকার করে উৎপাদনে মানুষের শ্রম ও মেধাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগাতে ব্যক্তির মালিকানা স্বীকার করে নিয়েছে। আল্লাহ বলেন- ‘পুরুষরা যা উপার্জন করবে তা তাদের জন্য। মহিলারা যা উপার্জন করবে তা তাদের জন্য’ (সূরা নিসা, আয়াত-৩২)।

তবে ইসলাম ব্যক্তিমালিকানার অবাধ স্বাধীনতা দেয়নি। ব্যক্তিমালিকানায় যেন সম্পদ গুটিকতকের হাতে পুঞ্জীভূত হয়ে না পড়ে এবং ব্যক্তির সঞ্চয় যেন সামগ্রিক সমাজব্যবস্থার ওপর প্রভাব না ফেলে তাই ইসলাম উপার্জনের ক্ষেত্র ও ব্যয়ের খাত হালাল-হারামের বিধান দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে দিয়েছে। যাতে জুলুম ও অবৈধ পন্থায় সম্পদ কুক্ষিগত হতে না পারে।

ইসলামী অর্থব্যবস্থা চাহিদা ও জোগানের স্বয়ংক্রিয় বিধান স্বীকার করে। অর্থব্যবস্থার ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ কিংবা কোনো ব্যক্তি-গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ ইসলাম জুলুম মনে করে। কারণ এতে ব্যক্তিস্বার্থ সংশ্লিষ্ট থাকলে যে পর্যায়ে কাজ করে ব্যক্তিগত লাভ-লোকসানের বিষয় না থাকলে ব্যক্তির মেধা ও শ্রম সে পর্যায়ে কাজ করে না । আনাস রা: থেকে বর্ণিত- লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের জন্য দ্রব্যমূল্য বেঁধে দিন। তিনি বললেন, ‘আল্লাহ মূল্য নির্ধারণকারী এবং তিনি নিয়ন্ত্রণকারী। আমি আল্লাহর সাথে এমতাবস্থায় মিলিত হতে চাই যে, লোকেরা যেন দাবি করতে না পারে, আমি তাদের জান-মালের ওপর হস্তক্ষেপ করেছি’ (সহিহ ইবনে মাজাহ-২২০০)।

বর্ণিত হাদিস থেকে জোগান ও চাহিদাবিধির সুস্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায়। তবে সব কিছু পুঁজির মালিকদের হাতে তাদের স্বাধীন ইচ্ছের ওপর ছেড়ে দেয়া যায় না। কারণ অবাধ স্বাধীনতা দিয়েই মূলত পুঁজিবাদের জন্ম হয় ও সব সম্পদ গুটিকতকের হাতে পুঞ্জীভূত হয়ে পড়ে। ফলে সামগ্রিক অর্থব্যবস্থার ওপর এর প্রভাব পড়ে। যদি তাদেরকে স্বাধীনভাবে উৎপাদন ও পণ্য বাজারজাত করার অধিকার দেয়া না হয় তাহলে উৎপাদনের গতিশীলতা ও স্বতঃস্ফূর্ততা বিনষ্ট হবে এবং মেধা ও শ্রমের ব্যাপক অপচয় ঘটবে।

তবে, তাদের অবাধ স্বাধীনতা যেন সামগ্রিক অর্থব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে না পারে এবং বাজারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নষ্ট করে দিতে না পারে সে জন্য ইসলাম তাদের কর্মকাণ্ডকে কিছু শর্ত ও বিধির আওতাধীন করে দিয়েছে। যেমন- ধারণার ওপর অস্পষ্ট ক্রয়-বিক্রয়, পণ্যবিহীন বেচাবিক্রি, সুদি লেনদেন ইত্যাদি হারাম হওয়া। কেননা, এসব প্রক্রিয়ায় মূলত সম্পদ গুটিকতক ধনীর হাতে পুঞ্জীভূত হয়ে পড়ে। মুনাফা অর্জনে পুঁজিপতিদের অনেক লেনদেন এসব প্রক্রিয়ার ওপরই নির্ভরশীল। এভাবে ইসলাম মানবজীবনের জন্য একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থব্যবস্থা আবর্তন করেছে। তা ছাড়া, সম্পদ যেন পুঁজিপতিদের হাতে পুঞ্জীভূত হয়ে না পড়ে সে জন্য ইসলাম ধনীদের ওপর কিছু আবশ্যকীয় দায়িত্ব অর্পণ করেছে। যেমন- জাকাত, ফিতরা, কাফফারা, দম, মিরাস ইত্যাদি। এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পদ গরিব-মিসকিন, অভাবী বা ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টিত হয় এবং সম্পদ পুঞ্জীভূত হওয়ার সুযোগ থাকে না।

বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত সব অর্থব্যবস্থার মোটামুটি মৌলিক ভিত্তি দু’টি- ১. ব্যক্তি মালিকানার অধিকার ও ২. জোগান ও চাহিদার স্বয়ংক্রিয় বিধি। সব অর্থব্যবস্থাই মৌলিকভাবে এ দু’টি মূলনীতি নিয়ে আলোচনা করেছে। এ দু’টি থেকেই পর্যায়ক্রমে আরো বহু শাখাগত মূলনীতির উদ্ভব হয়েছে। ইসলামী অর্থনীতির পর্যালোচনায় শুধু মৌলিক মূলনীতিদ্বয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো বহু শাখাগত মূলনীতি রয়েছে। শাস্ত্রীয় অর্থনীতির আলোচনা-পর্যালোচনা ও গবেষণার স্বার্থে আরো বহু শাখাগত মূলনীতির উদ্ভব হতে পারে। তবে সবগুলোই দিন শেষে উপরিউক্ত দুই মৌলিক মূলনীতিকে সাব্যস্ত করবে ও এগুলোর দিকেই ফিরবে।

ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত জীবনবিধান। এর অর্থব্যবস্থার প্রতিটি কনসেপ্ট আল্লাহ প্রণীত ও নির্ধারিত। তার প্রতিটি বিধান সুন্দর, সত্য, যুগোপযোগী ও কল্যাণকামী। এতে ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারী হওয়ার সুযোগ নেই। জুলুম, নিপীড়ন ও বৈষম্যের কোনো সম্ভাবনা নেই।

লেখক : শিক্ষার্থী, দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com