বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নিরবের পরকীয়ার অভিযোগ নিয়ে সুর পাল্টালেন স্ত্রী ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে কী কথা হলো, জানালেন মির্জা ফখরুল ভারত থেকে চিন্ময়ের মুক্তি দাবি কিসের আলামত, প্রশ্ন রিজভীর আইনজীবী হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার ৬ : প্রেস উইং চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ রয়টার্সের মনগড়া সংবাদের প্রতিবাদ জানালো সিএমপি হাইকোর্টের নজরে ইসকন-চট্টগ্রামের ঘটনা : আদালতকে পদক্ষেপ জানাবে সরকার ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান

ভেঙে গেল ১০ ব্যাংকের ঋণ শৃঙ্খলা

বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৮১ বার

বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সীমা লঙ্ঘন করে আগ্রাসী ঋণ দিয়েছে কনভেনশনাল এবং ইসলামিক শরিয়াহর ১০টি ব্যাংক। অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) বা ঋণ-আমানত অনুপাত সীমার বেশি ঋণ দিয়েছে এসব ব্যাংক। এতে ব্যাংকের গ্রাহকের জন্য বাড়তি ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত অনেক ব্যাংকের ঋণ শৃঙ্খলা ভেঙে গেছে। ফলে ব্যাংক খাতে সাম্প্রতিক সময়ে বেনামি ঋণ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এভাবে চলতে থাকলে খাতটি ঝুঁকিতে পড়বে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নভেম্বরের ১০ তারিখ পর্যন্ত প্রচলিত ধারার পদ্মা ব্যাংকের এডিআর দাঁড়িয়েছে ৮৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংকের ৮৭ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং ওয়ান ব্যাংকের ৮৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। আরও তিন ব্যাংকের এডিআর যথাক্রমে ৯২ দশমিক ৪৫ শতাংশ, ৯২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ এবং ৮৭ দশমিক ৩২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়া ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সীমার বাইরে বিনিয়োগের তালিকায় থাকা এক্সিম ব্যাংকের এডিআর ৯৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৯৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং পূবালী ব্যাংকের ইসলামিক উইন্ডোর এডিআর ৯২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর বাইরে একটি শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকের এডিআর ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘আমানতের বিপরীতে সীমার বাইরে ঋণ দিলে ঋণ শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। তাছাড়া ব্যাংকগুলোর ঋণ আদায়ের চিত্রও এখন খুব একটা সন্তোষজনক নয়। এমতাবস্থায় অতিরিক্ত ঋণ দিয়ে যদি খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে যায় তাহলে ব্যাংকের পাশাপাশি আমানতকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ জরুরি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনযায়ী, বর্তমানে প্রচলিত ধারার ব্যাংক ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে ৮৭ টাকা এবং ইসলামি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক ৯২ টাকা পর্যন্ত ঋণ বা বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু অনেক ব্যাংক উল্লিখিত সীমা অতিক্রম করে ঋণ দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে ঋণ বা বিনিয়োগ করাকে ব্যাংক ও আমানতকারিদের জন্য শুভকর নয় বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও খাত সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক যুগান্তরকে বলেন, ‘আমানতের বিপরীতে কত টাকা ঋণ দিতে পারবে এর একটি সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। তবে ব্যাংকগুলোর এ অনুপাত বিভিন্ন সময় ওঠানামা করে। কারণ কোনো ব্যাংকের যদি বড় একটি আমানত আসে তাহলে তাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা বেড়ে যায়। একইভাবে হঠাৎ করে কোনো গ্রাহক আমানত তুলে নিলে তখন ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। তখন ব্যাংক তার এডিআর সীমার বাইরে চলে যায়। এছাড়া ঋণ আদায়ে বিশেষ ছাড় দিলেও এটা হতে পারে। বিষয়টি সাময়িক এবং আপেক্ষিক। তবে দীর্ঘদিন ধরে কোনো ব্যাংক এডিআর সীমার বাইরে থাকলে সে ব্যাংককে অবশ্যই চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হবে। অস্বাভাবিক কিছু ঘটলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’

এ প্রসঙ্গে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) যুগান্তরকে জানান, ঋণ দেওয়ার যে সীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক তা নিঃসন্দেহে অনেক হিসাব-নিকাশ করে দিয়েছে এবং তা যথেষ্ট বৈশ্বিক মানের। সে সীমা অতিক্রম করা ঠিক নয়। এতে ব্যাংক খাতে ঝুঁকি তৈরি করবে। বিশেষ করে আমানতকারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকবেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।

ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত আইনে বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে টানা পাঁচবার এডিআর সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরও অনেক ব্যাংক এটি সমন্বয় করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহে গতিশীলতা আনা, ব্যাংকিং খাতের সার্বিক তারল্য পরিস্থিতির উন্নয়নে এডিআর ২ শতাংশ বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরেও সীমা লঙ্ঘন করে ঋণ আমানতকারীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com