রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নিখোঁজ রয়েছেন একজন বিজিবি সদস্য। এছাড়াও উত্তেজিত কাউন্সিল প্রার্থীর সমর্থকরা বিজিবির একটি টহল গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে একজন পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিজয়ীর সমর্থকরা। এতে সাতজন ছুরি আঘাতে আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় রংপুর মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারাধন রায় হারাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ৮টায় দিকে এ ঘটনা ঘটে।
রংপুর মেট্রোপলিন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমাশু কুকরুল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফলাফল প্রদানের সময় বর্তমান কাউন্সিলর ও এই নির্বাচনের কাউন্সিলর প্রার্থী হারাধন রায় হারা এবং অন্য প্রার্থী একরামুল হকের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় কেন্দ্রের সামনের সড়ক দিয়ে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের সাথে থাকা বিজিবির একটি টহল গাড়ি যাচ্ছিল। উত্তেজিত জনতা হঠাৎ করে ওই গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে প্রাণভয়ে সেখানে থাকা ছয় বিজিবি সদস্যের মধ্যে পাঁচজন নেমে পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। তখন উত্তেজিত জনতা ওই দোকানে হামলা চালালে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় আবারো গাড়িতে হামলা চালালে সেখানে থাকা ড্রাইভার এবং অন্য বিজিবি সদস্য গাড়ি থেকে নেমে যায়। তখন উত্তেজিত জনতা গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশ এসে আগুন নেভায়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানান, `ঘটনা জানার সাথে সাথে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির তিন শতাধিক ফোর্স সেখানে উপস্থিত হই। আমরা পুরো এলাকা তল্লাশি চালিয়েছি। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আমরা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি মিলনায়তন থেকে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হারাধন রায় হারাকে গ্রেফতার করেছি। অন্যদের গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। ঘটনাটি এতটাই অনাকাঙ্ক্ষিত যে আমরা হতবাক হয়ে গেছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। জড়িতদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
এদিকে কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান, একই সময়ে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও এই নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী ফুলু হেরে যান। বিজয়ী প্রার্থী কোতয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা আরমানের সমর্থকরা ফুলুর নুরপুরের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ফুলুর স্ত্রী সন্তানসহ সাতজন আহত হন। আহতদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: আবদুল বাতেন বলেন, ’কোনো ধরনের সহিংসতা আমরা জিরো টলারেন্সে মোকাবেলা করবো। অপরাধী যে দল কিংবা যত রাঘোববোয়াল হোক না কেন কেউ পার পাবে না। দুটি ঘটনাতেই আইনশৃঙখলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে। এছাড়াও বাড়তি সতর্কতা নেয়া হয়েছে পুরো নগরীজুড়ে।