বৈশ্বিক মন্দা ও দেশীয় পরিস্থিতিতে নতুন বছরে দেশের অর্থনীতিকে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে বড় চ্যালেঞ্জ আসবে বৈদেশিক খাতে।
ডলার সংকট চলমান থাকবে, এর বিপরীতে টাকার আরও অবমূল্যায়ন হবে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বাড়বে। এর পাশাপাশি খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গিয়ে মূল্যস্ফীতিতে চাপ বাড়তে পারে। আমদানি কমায় শিল্প খাতে সংকট আরও প্রকট হবে।
মেয়াদি ঋণ বিতরণ কমায় নতুন শিল্প স্থাপনের গতি হবে বাধাগ্রস্ত। এতে বেকারদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের গতি কমে যাবে। নতুন বছরে বিদ্যুতের দাম বাড়বে। এতে প্রায় সব পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। নির্বাচনি বছর হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা থাকারও শঙ্কা আছে।
তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, নতুন বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বাড়তে পারে। রপ্তানিতে বছরজুড়েই চ্যালেঞ্জ থাকবে। কৃষি পণ্যের উৎপাদন বাড়ার আভাস দেওয়া হয়েছে। এতে দেশে খাদ্য সরবরাহে কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে।
নতুন বছরের অর্থনীতি সম্পর্কে উল্লিখিত আভাস মিলেছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে। এছাড়া দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরাও এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। সংকট মোকাবিলায় সরকারকে দক্ষতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাজারে তদারকি বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তারা।
সূত্র জানায়, করোনার পর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারির শেষদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে পুরো পরিস্থিতি পালটে যায়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাসসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম হুহু করে বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ যেহেতু আমদানিনির্ভর দেশ, এ কারণে দেশের বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যায়। একই সঙ্গে বাড়ে আমদানি ব্যয়ও। এর বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত রপ্তানি ও রেমিট্যান্স কমে যায়। যদিও বছর শেষে কিছুটা বেড়েছে। এতে রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ে। ফলে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে বাধ্য হয় সরকার। কমে যায় খাদ্য ও শিল্পসহ বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি।
এলসি খোলা প্রায় অর্ধেক কমে যায় আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে। এর প্রভাবে আগামী দিনে আমদানি আরও কমতে পারে। এতে দেশে আমদানি পণ্যের সংকট দেখা দিয়ে এগুলোর দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির এলসি খোলাও কমেছে। এর প্রভাবে এই খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। গার্মেন্টসহ রপ্তানি শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করা হয় ব্যাক টু ব্যাক এলসির মাধ্যমে।
এ খাতে নতুন এলসি খোলা কমেছে প্রায় ২৭ শতাংশ। এদিকে আগের এলসি থেকে আমদানি বেড়েছে মাত্র ১৩ শতাংশ। এ খাতে বকেয়া এলসিও কমে এসেছে। রপ্তানি খাতে নতুন আদেশ কম আসায় এ খাতে কাঁচামাল আমদানি কমেছে। এ কারণে আগামী দিনে রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
বিদায়ি বছরে অনিশ্চয়তার কারণে দেশে বিনিয়োগ বাড়েনি। নতুন বছরেও বিনিয়োগে স্থবিরতা থাকতে পারে। এতে নতুন শিল্প স্থাপনের গাতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নতুন বছরে দেশের অর্থনীতিকে আরও বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। বলা হয়, এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জে পড়বে দেশের অর্থনীতি। এর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা চলমান থাকবে। বছর শেষে এটি কমতে পারে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর দাম বাড়লে শিল্প উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে বাড়বে প্রায় সব পণ্যের দাম। ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও কমলে এতে পণ্যের দাম বাড়বে। বিদায়ি বছরে আমদানি ব্যাহত হওয়ার প্রভাব নতুন বছরে পড়বে। সব মিলে মূল্যস্ফীতিতে চাপ বাড়বে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। এদিকে মানুষের আয় বাড়ানোর মতো পদক্ষেপ খুবই কম। ফলে মানুষ বছরজুড়েই চাপে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, নতুন বছরটি ব্যাংক খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জিং হবে। গত তিন বছর ব্যাংকের ঋণ আদায় করা যায়নি। নানা ছাড়ে ঋণ পরিশোধ করতে হয়নি। নতুন বছরে এ সুযোগ কমে যাবে। ফলে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু মন্দা ও সুশাসনের অভাবে অনেকে ঋণ পরিশোধে অক্ষম হবে। এতে ব্যাংকে খেলাপি ঋণ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে আইএমএফ-এর শর্ত রয়েছে খেলাপি ঋণ কমাতে হবে। এটি বাস্তবায়ন করতে খেলাপি ঋণে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে, যা ব্যাংক খাতকে আরও সংকটে ফেলে দেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, পূর্ভাবাস অনুযায়ী চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ থাকবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী জুনে রিজার্ভ ৪ হাজার ২৫০ কোটি ডলারে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু এর নয় মাস আগেই গত সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ ৪ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে গেছে। এখন রিজার্ভ আরও কমে ৩ হাজার ৩৮৪ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। নিট হিসাবে তা ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের কম।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই এশিয়ার ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ একসঙ্গে মোটা অঙ্কের অর্থ পরিশোধ করতে হবে। এতে রিজার্ভ কমে যাবে। গত নভেম্বরে এ খাতে ৫৬ কোটি ডলারের বেশি পরিশোধ করা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, রেমিট্যান্স বাড়াতে হুন্ডি বন্ধে ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে মোবাইল ফোনের অ্যাপে রেমিট্যান্স পাঠানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাংক ও প্রবাসীদের উৎসাহিত করা হবে। বর্তমানে রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রবাসীরা আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পাচ্ছেন। আইএমএফ-এর শর্তের কারণে এ হার বাড়ানো যাচ্ছে না।
কারণ আইএমএফ-এর শর্ত অনুযায়ী রেমিট্যান্সে ৩ শতাংশের কম প্রণোদনা দিতে হবে। এখন বিনিময় হার ও সার্ভিস চার্জ কমিয়ে প্রবাসীদের সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিনিময় হারের সুবিধা দেওয়ার জন্য রেমিট্যান্স কেনা হচ্ছে ১০৭ টাকা করে। কোনো কোনো ব্যাংক এর চেয়ে বেশি দামে রেমিট্যান্স কিনছে। বর্তমানে খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১৬ থেকে ১১৭ টাকা করে। ব্যাংকের সঙ্গে এ ব্যবধান কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ২৫ শতাংশ। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হিসাবে ৩৫ শতাংশ কমেছে টাকার মান। এটি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবমূল্যায়ন। নতুন বছরেও ডলারের দাম বেড়ে টাকার অবমূল্যায়ন হতে পারে। তবে গত বছরের চেয়ে এ হার কমতে পারে।
নতুন বছরে দেশকে সবচেয়ে বড় চাপে থাকতে হবে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ নিয়ে। গত বছরের শেষদিকে দেশের অনেক ব্যাংক ডলার সংকটের কারণে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। সেগুলোর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধের সীমা আগামী জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি ডলারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ঋণ ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ২২৪ কোটি ডলার। এসব ঋণ পরিশোধ করতে গেলে রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়বে। এতে বিনিময় হারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, নতুন বছরে দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। বৈদেশিক খাতের পাশাপাশি দেশীয় উৎস থেকেও বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে তিন বছর ধরে কর্মসংস্থানের গতি বাড়ছে না। নতুন বছরেও এ খাতে অনিশ্চয়তা থাকবে। ফলে বেকারদের জন্য বড় একটি দুসংবাদ হবে নতুন বছরটি। দেশের শিল্প খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তিনি আরও বলেন, সংকট মোকাবিলা করতে সরকারকে আরও দক্ষতার সঙ্গে সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় গত বছরে বড় ধরনের সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে। নতুন বছরে যাতে এ ধরনের সমন্বয়হীনতা না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
তার আরও অভিমত, শুধু আইএমএফ-এর ঋণ পেলেই সংকট নিরসন হবে না। বিশ্বব্যাংক, এডিবি থেকেও ঋণ নিতে হবে। পাশাপাশি রেমিট্যান্স বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে হবে। এই সংকটে দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বেশি জোর দিতে হবে। কেননা দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়বে। এতে খাদ্য সংকট হবে না। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে সংকটের পাশাপাশি দামও বাড়বে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। এতে দেশের বাজারে যাতে কৃত্রিম সংকট তৈরি হতে না পারে, সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থার (এফএও) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে স্বল্প-আয়ের মানুষ ইতোমধ্যে খাদ্য সংকটের মুখোমুখী হয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দায় তাদের আয় কমায় চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য কিনতে পারছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, বিদায়ি বছরে আমদানি ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হলেও নতুন বছরে এটি করা যাবে না। কারণ লম্বা সময় আমদানি নিয়ন্ত্রণ করলে দেশের শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাব পরবে। কারণে আমদানির লাগাম শিথিল করতে হবে। এতে ডলারের ওপর চাপ বাড়বে।
গত শুক্রবার রাতে প্রকাশিত আইএমএফ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন বছরেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপারে কোনো সুখবর পাওয়া যাচ্ছে না। যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে রাশিয়ার ওপর ইউরোপ ও আমেরিকার নিষেধাজ্ঞাও অব্যাহত থাকবে। এতে ইউরোপের দেশগুলো জ্বালানি সংকটে নতুন বছরেও ভোগবে।
বিশষ করে গ্যাসের সংকটের কারণে ইউরোপের দেশগুলোয় সারসহ কৃষি উপকরণের উৎপাদন কমে গেছে। এতে সারের দাম বেড়েছে তিনগুণ। কৃষি উপকরণের দাম বাড়ায় বৈশ্বিকভাবে এর উৎপাদন কমতে পারে। এ কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে। খাদ্য ও জ্বালানি আমদানি করতে অনেক দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যেতে পারে। ফলে স্থানীয় মুদ্রার মান কমে গিয়ে মূল্যস্ফীতির হারে চাপ বাড়াবে। বিদায়ি বছরে ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোয় মূল্যস্ফীতির হার গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এ হার কমাতে অনেক দেশ সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করছে। এতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সংকোচিত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশই আসে ওই দুটি অঞ্চল থেকে। ফলে রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে রপ্তানি আয় ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সরকার থেকে নানা ধরনের নীতি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। রপ্তানিতে বিনিময় হারের সুবিধাও নতুন বছরে বাড়ানো হবে। এতে রপ্তানির বিপরীতে ডলারের দাম আরও বেশি পাওয়া যাবে। বিদেশে দেশের রপ্তানি পণ্য আরও প্রতিযোগিতামূলক হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৪ সালের শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ কারণে এ বছরেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ বিরাজ করবে। এতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনিশ্চয়তা ও বাধার সৃষ্টি করবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, নির্বাচনি বছরে বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়ে। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে। এ কারণে অর্থনীতিতে চাপ বাড়বে।
বিদায়ি বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতির সর্বোচ্চ হার ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে উঠেছিল। নভেম্বরে তা কমে ৮ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। আগামী মার্চ পর্যন্ত শীতের সবজি ও চালের সরবরাহ বাড়ার ফলে এ হার আরও কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু এপ্রিল থেকে এ হার আবার বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আইএমএফ-এর মতে, আগামী বছর বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আইএমএফ-এর পূর্ভাবাস অনুযায়ী, চলতি বছরে বৈশ্বিক জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে ১ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমে ১ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৩ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ হতে পার। বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ৬ শতাংশ হতে পারে। ভারতের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে ৬ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে। বৈশ্বিকভাবে প্রবৃদ্ধির হার কমায় বাংলাদেশের রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।