শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন

দর-কষাকষি করে প্রকাশ্যে ঘুষ নেন তিনি

বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৮৮ বার

অফিসে বসে প্রকাশ্যেই ঘুষ নেন। ঘুষের দর-কষাকষিও করেন প্রকাশ্যেই। ওই কর্মকর্তার নাম মিজানুর রহমান। তিনি রাজশাহীর বড়কুঠি মহানগর ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, মিজানুরের তোলা টাকার ভাগ পান দপ্তরের অনেকেই।

এ ছাড়া মিজানুরের নামে সরকারি অর্থ আত্মসাতেরও অভিযোগ থাকলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি ওই ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, দর-কষাকষি করে ঘুষ নিচ্ছেন মিজানুর রহমান। তার কক্ষেই বসেন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর শান্ত ইসলাম। তার সামনেই প্রকাশ্যে টাকা নেন মিজানুর।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, আবদুল হাকিম নামের এক বৃদ্ধ সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে ১০০ টাকার কয়েকটি নোট নেন মিজানুর রহমান। এরপর আরেক তরুণের কাছ থেকে গুণে গুণে ২ হাজার ৫০০ টাকা নেন তিনি।

টাকা নেওয়ার কারণ জানতে কথা হয় বৃদ্ধ আবদুল হাকিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি নগরীর উপশহরে। ভূমি অফিসে একটা কাগজ তুলতে এসেছিলাম। অনেক কাগজের মধ্য থেকে আমার কাগজ খুঁজে বের করতে সময় লাগল। তাই পিয়নদের জন্য টাকা দিলাম। একটা পিয়নকে ১০ টাকা না দিলে কাজটা করে দেয় না। তাই দিলাম।’

টাকা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তরুণ বলেন, ‘টাকা হচ্ছে এই কাগজের জন্য। তবে কিসের কাগজ এটা বলতে পারব না।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাকা ছাড়া কোনো কাজই করেন না মিজানুর রহমান। এভাবে অফিসে বসে প্রকাশ্যেই ঘুষ নেন তিনি। তার নামে সরকারি অর্থ আত্মসাতেরও অভিযোগ আছে। গত বছরের ২২-৩১ মে মিজানুরের দপ্তরে হিসাব তত্ত্বাবধায়ক (রাজস্ব) মো. ইসরাইল হোসেন ২০২০-২০২১ অর্থবছরের অডিট করেন। এরপর ২৩ জুন প্রতিবেদন দেন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকৃত অপেক্ষা কম যোগফল দেখিয়ে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। মিজানুর রহমান আত্মসাৎ করেছেন ৩ হাজার ৫০৮ টাকা। এই টাকা তিনি জমা দেননি বলে মন্তব্য করা হয়েছে। সরকারি অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ থাকলেও মিজানুরের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘ওই ছেলের জমির খারিজের টাকা নিয়েছি।’ খারিজের জন্য কত টাকা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা এখন বলতে পারব না। কাগজপত্র দেখে বলতে হবে।’

এর আগে বৃদ্ধ আবদুল হাকিমের কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো সমস্যা না। এটা কোনো ব্যাপার না ভাই। আমি আপনার সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বলব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন মিয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আগামী রোববার অফিসে গিয়েই আমি অভিযোগগুলো যাচাই করে দেখব।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com