বিশ্বের রাজধানী খ্যাত জাতিসংঘের শহর নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’র আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলো। ১৬ ফেব্রুয়ারি সিটি কাউন্সিলে ‘রেজ্যুলেশন ৪৭৪’ পাশের মধ্যদিয়ে সিটিতে দিবসটি ব্যাপকভাবে শ্রদ্ধাভরে উদযাপিত হবে।
রেজ্যুলেশনটি যৌথভাবে উত্থাপন করেছিলেন সিটি কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ এবং আমান্দা ফারিয়াস। অন্য সকলের সমর্থনে তা গৃহীত হবার পর এই সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম-নারী কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ বলেন, প্রথম বাংলাদেশি সিটি কাউন্সিলওম্যান হিসেবে আমি অভিভূত, উৎফুল্ল এবং আনন্দিত বাঙালির মাতৃভাষা দিবসকে শ্রদ্ধাভরে উদযাপনের রেজ্যুলেশনটি গৃহীত হওয়ায়। নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনের কেনসিংটন থেকে লসএঞ্জেলেস পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় বসবাসরত সকল বাংলাদেশির বিজয় এটি। বাঙালির ভাষার অধিকারের প্রশ্নে বাংলাদেশী কম্যুনিটি যে সর্বদা ঐক্যবদ্ধ-এটা তারই বহি:প্রকাশ। আমি গৌরববোধ করছি সে সব বাঙালির প্রতিনিধিত্ব করার দুর্লভ সুযোগ পেয়ে।
রেজ্যুলেশনের অপর স্পন্সর সিটি কাউন্সিলওম্যান আমান্দা ফারিয়াস বলেন, নিউইয়র্ক সিটিতে ৮ শতাধিক ভাষার মানুষের বাস করছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাষার মানুষ বাস করেন কুইন্সে। কুইন্সের চেয়ে অধিক ভাষার মানুষ বিশ্বের আর কোন এলাকায় নেই। এমনি অবস্থায় আমাদের নিজ নিজ মাতৃভাষাকে যথাযথভাবে সম্মান প্রদর্শন করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। এতদসত্বেও এই বহুজাতিক এই সিটির বর্ণিল বৈশিষ্ট অটুট রাখতে আমান্দা ফারিয়াস বলেন, এই বিজয়কে উদযাপনের জন্যে আমার নির্বাচনী এলাকা ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ‘মাতৃভাষা দিবস’র র্যালি হবে। আমি সকলকে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
এই রেজ্যুলেশন পাসের সময় সিটি হলে ছিলেন ‘সাউথ এশিয়ান আমেরিকান ফান্ড ফর এডুকেশন, স্কলারশিপ এ্যান্ড ট্রেনিং’ তথা স্যাফেস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মাজেদা উদ্দিন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এর যুক্তরাষ্ট্র শাখার নারী বিষয়ক সম্পাদক ও বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতনের অধ্যক্ষ সবিতা দাস, বাংলাদেশ সোসাইটির সেক্রেটারি রুহুল আমিন সিদ্দিকী প্রমুখ। তারা সমর্থন প্রদানের জন্যে কাউন্সিলম্যানদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, জাতিসংঘে ২১ ফেব্রুয়ারিতে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করলেও নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে তার স্বীকৃতি এলো এই প্রথম। এরফলে সিটির পার্কে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাও দূর হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। নিউইয়র্ক সিটিতে ৩ লাখের অধিক বাংলাদেশি বাস করলেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।