শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪২ অপরাহ্ন

ট্রাম্পের ভারত সফর : চুক্তি নিয়ে চাপের খেলা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ৩০০ বার

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের আগে হাতে আর মাত্র এক সপ্তাহ। এখনো অনিশ্চিত বাণিজ্য চুক্তি।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দু’দিনের সফরে ছোট মাপের কোনো বাণিজ্য চুক্তিও কি হতে পারে? অসম্ভব, এমনটা বলছে না ভারতের পররাষ্ট্র দফতর। তবে স্পষ্ট করেই তারা জানাচ্ছে, চুক্তি এখনো অনিশ্চিত। কারণ, বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে গত এক বছর ধরে যে জটগুলি পাকিয়ে রয়েছে, এখনো সেগুলোর সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

বস্তুত, নিজেদের পক্ষে কতটা সুবিধাজনক শর্তে চুক্তি করা যায়, তা নিয়ে দু’তরফেই নিয়েই চলছে চাপের খেলা। আমেরিকা চাইছে পিৎজ়া, চিজ়-সহ আরো বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের জন্য ভারতের বাজার খুলে দেয়া হোক। ভারতের চাষি-পশুপালকদের কথা ভেবে মোদি সরকার তাতে নারাজ। ট্রাম্প চাইছেন, হৃদ‌্‌রোগের চিকিৎসার জন্য স্টেন্টের দামে যে ঊর্ধ্বসীমা মোদি সরকার বেঁধে দিয়েছে, তা তুলে নেয়া হোক। তাতে মার্কিন সংস্থার ফায়দা হলেও তাতে সাধারণ ভারতীয়ের ক্ষোভ বাড়বে। ভারত তাই রাজি নয় এই দাবি মানতে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তথা আরএসএস-র পক্ষ থেকেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপর চাপ রয়েছে। তাদের সাফ কথা, আমেরিকার শর্তে ভারতের বাজার হাট করে খুলে দেয়া চলবে না। মোদি সরকার চাইছে, ভারত থেকে রফতানি করা ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম থেকে বাড়তি শুল্ক তুলে নিন ট্রাম্প। ভারতের কৃষিজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যে আরো বেশি করে মার্কিন বাজার খুলে দেয়া হোক।

গোটা বিষয়টি যে ক্রমশ অনিশ্চয়তার পথে চলেছে তার একটি বড় প্রমাণ হলো মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটথাইজ়ার-এর শেষ মুহূর্তে ভারত সফর বাতিল করা। স্থির ছিল, ট্রাম্প আসার আগে ভারতে এসে বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য চুক্তিটির রূপরেখা তৈরি করবেন। সেই মতো প্রস্তুতি নিচ্ছিল সাউথ ব্লকও। কিন্তু সূত্রের খবর, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশ করে সফরটি বাতিল করা হয়েছে।

বাণিজ্য মণালয়ের এক সংশ্লিষ্ট কর্তার কথায়, ‘‘আমরা আমেরিকার সঙ্গে কথা বলে যা স্থির করেছিলাম, তার থেকেও ওদের চাহিদা বেড়েই চলেছে। আমরা ভারত-মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সে দেশ থেকে ‘শেল’ তেল আমদানি দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভারত সফরকে মাইলফলক করে তুলতে সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রকের এ বার দায়িত্ব, দু’দেশের পক্ষেই মেনে নেওয়া সম্ভব এমন চুক্তি প্রস্তাব আনা।’’

চুক্তি যে একেবারেই সম্ভব নয়, এমনটাও অবশ্য মনে করছে না ভারত। কারণ, এই চুক্তি নিয়ে ঘরোয়া রাজনৈতিক কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে ট্রাম্পেরও। তার দিক থেকে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা থাকবে কিছু একটা করার। এটা ঠিক, ভারত বাণিজ্যিকভাবে চীনের মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু আমেরিকার পক্ষে সুবিধাজনক শর্তে চুক্তি করতে ভারতকে রাজি করাতে পারলে, সেটা টাম্পের ভোট প্রচারের ঝুলিতে কিছুটা অক্সিজেন জোগাতে পারে। ট্রাম্প দেখাতে চাইছেন, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে অটল রয়েছেন তিনি। সহযোগী দেশ হোক বা শত্রু রাষ্ট্র— তার কড়া অবস্থানের ফলে আখেরে আমেরিকার অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com