ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দেয়া ফ্ল্যাট বিক্রি করে অথবা ভাড়া দিয়ে অবৈধভাবে বস্তি তৈরি করে বসবাস করছে পরিচ্ছন্নকর্মীরা। অভিযোগ উঠেছে তাদের জন্য বরাদ্দ দেয়া ফ্ল্যাট মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে ও ভাড়া দিয়ে রাজধানীর ওয়ারীর বলদা গার্ডেনের পাশে বস্তি তৈরি করে বসবাস করছে। অবৈধভাবে ব্যবহার করছে বিদ্যুৎ ও গ্যাস। এতে যেমন ওই এলাকার সৌন্দয্য নষ্ট হচ্ছে, তেনি বাড়ছে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে বস্তিটি গড়ে ওঠায় মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। একই সাথে সৌন্দর্য হারাচ্ছে বোটিনিক্যাল গার্ডেন। একটু বৃষ্টি হলেই হাটু সমান পানি জমে যায়। লাগামহীনভাবে পানি বিদ্যুৎ গ্যাস ব্যবহার করলেও এর একটি পয়সাও সরকারের খাতায় জমা হচ্ছে না। ভাড়া আদায়ের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি দলীয় প্রভাবশালীরা। অথচ এই পরিচ্ছন্নকর্মীদের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সিটি করপোরেশন আবাসিক ফ্ল্যাট তৈরি করেছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন বলদা গার্ডেনের পশ্চিম ও আব্দুর রহিম কমিউনিটি সেন্টারের উত্তর পাশে বিরাট এলাকা দখল করে মুসলিম স্টাফ কোয়ার্টার নামে বস্তিতে গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীসহ কয়েকটি পেশার ৭০০ শতাধিক মানুষ বসবাস করছে। ৬৮টি কাঁচাঘর ঘর থাকলেও এর বেশিরভাগই দোতলা ও তিনতলা পর্যন্ত। যার কারণে প্রতিটি ঘরে কয়েকটি পরিবার বসবাস করছে।
জানা গেছে, বস্তিটি সম্পূর্ন অবৈধভাবে গড়া তোলায় ২০০৭ সালে এটি উচ্ছেদের নির্দেশনা দেয়া হয়। উত্তর দিক থেকে কিছু ঘর উচ্ছেদ শুরুও করে সিটি করপোরেশন। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ১/১১ আসায় তা সম্পুর্ন হয়নি। এরপর আবারো দখল করে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা পর্যন্ত ঘর তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে আবারো সিটি করপোরেশন থেকে একটি সার্ভেয়ার টিম পাঠায়। কিন্তু সার্ভেয়ার অদৃশ্য কারণে ভুল তথ্য দিয়ে আদালতে রিপোর্ট প্রদান করেন।
বর্তমানে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারের দোহাই দিয়ে কিছু লোক এই ঘর গুলো ভাড়া তুলছে। অভিযোগ রয়েছে, এই বস্তিতে বসবাসকারীদের অনেকেই সিটি করপোরেশন থেকে ফ্ল্যাট পেয়েছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ কেউ ওই ফ্ল্যাট চড়া মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছে। আবার অনেকে বেশি টাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে কম টাকায় বস্তিতে থাকছে। শুধু পরিচ্ছন্নকর্মী নয়, তাদের আড়ালে বস্তিতে মাদক কারবারিদের উৎপাতও বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিনিয়ত মাদক সেবন, বিক্রি ইভটিজিংসহ নানা ধরনের অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
এ ব্যপারে জানতে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারের বক্তব্য নিতে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।