মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৪ অপরাহ্ন

বাণিজ্য বাধা দূর হলে ভারতে রফতানি বাড়বে ৩০০ শতাংশ

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০২৩
  • ৬৩ বার
ছবি : সংগৃহীত

বিদ্যমান বিভিন্ন বাণিজ্য বাধা কমাতে পারলে ভারতে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসিবি’র)। আইসিসিবি উল্লেখ করেছে, ‘বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সালে ছিল মাত্র ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রফতানি ছিল মাত্র ১.২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়েছে, এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বাণিজ্য বাধা কমিয়ে ভারতে বাংলাদেশের রফতানি ৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে, যদি এটি মোট ভারতীয় আমদানির মাত্র এক শতাংশও হয়। বিশ্বব্যাংকের মতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রফতানি বর্তমান মাত্রা থেকে ১৮২ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে যদি বাংলাদেশ ও ভারত একটি মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়ন করে। দুই দেশের মধ্যে পরিবহন সংযোগ উন্নত করলে রফতানি আরো বাড়তে পারে, ভারতে বাংলাদেশের রফতানি ২৯৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পাবে। আইসিসিবির ত্রৈমাসিক বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে গতকাল এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে, বাণিজ্য ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে কম সমন্বিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। বিশ্বব্যাংকের মতে, আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে উল্লেখযোগ্য মুনাফার সম্ভাবনা রয়েছে। আন্ত:আঞ্চলিক বাণিজ্য এখন সেই বাণিজ্য সম্ভাবনার মাত্র এক-পঞ্চমাংশে দাঁড়িয়েছে। আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে ‘বিবিআইএন’ দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত এবং নেপালের বিদ্যুতের বাজার-আনুমানিক ১৭ বিলিয়ন মূলধন খরচ সাশ্রয় করবে। পরিবহন ও লজিস্টিক্সের উন্নতির মাধ্যমে ‘ওইএসিডি’দেশগুলোর তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় কনটেইনার চলাচলের জন্য ৫০ শতাংশ বেশি খরচ কমাতে পারে।

সার্ক দেশগুলো ১৯৯৩ সালের এপ্রিল মাসে সাপটা (দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি) স্বাক্ষর করেছিল যা সার্ক অঞ্চলের মধ্যে আন্ত:আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রচারের লক্ষ্যে ডিসেম্বর ১৯৯৫ সালে কার্যকর হয়েছিল। সাপটা ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য এলাকা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। এটি ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ায় তিনটি দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি-এফটিএ রয়েছে, যেগুলো হলো ভারত-শ্রীলঙ্কা, ভারত-ভুটান এবং পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। অধিকন্তু, বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল চুক্তিটি জুন ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছে, এটি উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার আরেকটি উদ্যোগ। আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং পরিবহনে ইইওঘ দেশগুলির মধ্যে গভীর সম্পর্ক ক্রমবর্ধমান সংযোগ চুক্তির দ্বারা প্রতিফলিত হয়। যাহোক, আঞ্চলিক বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির সুযোগ অনেকাংশে অব্যবহৃত রয়ে গেছে।

এতসব উদ্যোগ সত্ত্বেও, দক্ষিণ এশিয়ার আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য, বাণিজ্য সহযোগিতার প্রকৃত সম্ভাবনার চেয়ে অনেক নিচে রয়েছে গেছে। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্য আনুমানিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা সম্ভাব্য ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন জলারের বাণিজ্য প্রবাহের মাত্র ৫ শতাংশ। যদিও অন্যান্য অঞ্চলে বাণিজ্যের অনুপাত পূর্ব এশিয়ায় ৫০ শতাংশ, আসিয়ান ২৬ শতাংশ, ইইউ ৬৭ শতাংশ, নাফটা ৬২ শতাংশ।

দক্ষিণ এশিয়া ২ বিলিয়ন জনগোষ্ঠী ছাড়িয়ে যাওয়া অঞ্চল এবং একটি শক্তিশালী ৪.১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি। ভারত দৃঢ়ভাবে ১.৪ বিলিয়ন জনগোষ্ঠী এবং ৩.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতিসহ ২১ শতকের বিকাশমান অর্থনীতির মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে, ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও লজিস্টিক নেটওয়ার্কে গুরুত্ব¡পূর্ণ ভূমিকা পালন করতে এবং দক্ষিণ এশিয়ার একটি ট্রানজিট দেশ হিসেবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশ এবং অন্য দেশগুলো তাদের প্রতিবেশীদের তুলনায় দূরবর্তী অর্থনীতির সাথে বাণিজ্য বেশি করে। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্ব ব্যাংকের কানেক্টিং টু থ্রাইভ রিপোর্টে দেখা গেছে যে বাংলাদেশের একটি কোম্পানির জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের তুলনায় জার্মানির একটি কোম্পানির সাথে বাণিজ্য করা কম ব্যয়বহুল।
একটি সুপ্রতিষ্ঠিত পরিবহন নেটওয়ার্ক বাণিজ্য সংযোগের জন্য গুরুত্ব¡পূর্ণ। এটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও একীকরণকে উন্নীত করতে পারে। এ ছাড়াও, ভালোভাবে স্থাপন করা পরিবহন সংযোগ পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com