করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় একটি ওষুধ ‘গেম চেঞ্চার’ প্রমাণিত হতে পারে। খোদ প্রেসিডেন্টের মুখে এমন কথা শুনেই ভরসা পেয়েছিলেন। সেই মতো বাড়িতে ওষুধ বানিয়ে খেতে গিয়ে বেঘোরে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি তার স্ত্রী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা প্রদেশের মারিকোপা কাউন্টির বাসিন্দা ওই দম্পতি। নোভেল করোনা নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন তারা। তাই কোনওরকম উপসর্গ না দেখা দেওয়া সত্ত্বেও আগাম সতর্কতা নিতে চেয়েছিলেন। তাতেই বিপত্তি বাধে।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিতে গিয়ে সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে হাইড্রোঅক্সি-ক্লোরো-কুইন জাতীয় ওষুধের কথা উল্লেখ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই জাতীয় ওষুধ কাজ দিতে পারে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, টিভিতে ট্রাম্পের সেই বক্তৃতা দেখেছিলেন ওই দম্পতি। তা নিয়ে ইন্টারনেটেও ঘাঁটাঘাঁটি করেন তারা। তার পরেই বাড়িতে রাখা অ্যাকোরিয়াম পরিষ্কার করার রাসায়নিক, যার অন্যতম উপাদান ক্লোরোকুইন ফসফেট, সে দিকে নজর যায় তাদের। সেই রাসায়নিক মুখে দেয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই। প্রথমে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব দেখা দেয় তাদের। সেই অবস্থায় স্থানীয় ‘ব্যানার হেল্থ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় স্বামীর। এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তার স্ত্রী। তবে তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।
সোমবার এনবিসি-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওই মহিলা জানান, টিভিতে ট্রাম্পকে বার বার ক্লোরোকুইনের উল্লেখ করতে দেখেছিলেন তিনি। বাড়িতে অ্যাকোরিয়াম পরিষ্কার করার ওই রাসায়নিক ছিলই। তাই সেটি নিজেদের উপর প্রয়োগ করার কথা মাথায় আসে তার।
ব্যানার পয়জন অ্যান্ড ড্রাগ ইনফরমেশন সেন্টারের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ড্যানিয়েল ব্রুকস বলেন, ‘‘বাড়িতে এই ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা অত্যন্ত বিপজ্জনক, বোকামিও বটে। জাদুবলে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।’’
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু), দেশের স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ বিভাগ ছাড়া কোনো রাজনীতিকের কথা কানে তোলা উচিত নয়, এ নিয়ে ইন্টারনেটের উপরও ভরসা করা উচিত নয় বলে সাফ জানিয়ে দেন ড্যানিয়েল। ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়া শুধুমাত্র লক্ষণ দেখে সন্দেহ জাগলেই আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলেও জানান তিনি। তবে এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের তরফে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা