পদত্যাগ করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। বুধবার (১৪ আগস্ট) অনলাইন মাধ্যমে তিনি এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের অন্যতম আলোচিত চরিত্র ছিলেন এই তাকসিম। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি পদত্যাগ করলেন।
সূত্র জানায়, পদত্যাগপত্রে অসুস্থতাজনিত কারণে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করতে অপারগতার কথা জানিয়েছেন তিনি।
তার পদত্যাগের বিষয়ে গত মঙ্গলবার থেকেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। বিষয়টির সত্যতা জানতে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। কারণ তার সঙ্গে যোগাযোগের ফোন নম্বর বারবার বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।
জানা যায়, ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে প্রথমবারের মতো নিয়োগ পেয়েছিলেন তাকসিম এ খান।
এরপর দফায় দফায় তার মেয়াদ বাড়তে থাকে। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে সপ্তমবারের মতো ওই পদে আরও তিন বছরের জন্য নিয়োগ পান তিনি। দুর্নীতি, অনিয়মসহ নানা অভিযোগ থাকার পরও তাকসিমকে একই পদে দীর্ঘ সময় রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। ২০০৯ সালের পর থেকে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ে ১৬ বার। গত ১৫ বছরে ঢাকা ওয়াসায় একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তাকসিম এ খান।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই তাকসিম এ খান একদিনও নিজের দপ্তরে আসেননি। তিনি দেশে আছেন, নাকি বিদেশে চলে গেছেন, সেটিও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। অবশ্য হাসিনা সরকারের পতনের পর, তাকসিমকে অবিলম্বে পদত্যাগ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তাকসিম এ খান, তার স্ত্রী ও সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাই অনেকেই ধারণা করছেন, তিনি হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন।
বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পে ঢাকা ওয়াসার বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতি এবং বাস্তবায়নের পর তা চালু করতে না পারার মতো কারণে সংস্থাটির ব্যয় বেড়েছে।
এছাড়া ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে তাকসিমের মাসিক বেতন বর্তমানে ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। সর্বশেষ করোনা মহামারির মধ্যে একলাফে ওয়াসার এমডির বেতন বাড়ানো হয় পৌনে ২ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলমান ও মামলার সুপারিশ রয়েছে।