ভোলায় মুসল্লিদের ওপর পুলিশের মারমুখী আচরণ ও নিষ্ঠুরতা ক্ষমার অযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জবাবদিহিতা করতে হয় না বলেই সামান্য কিছুতেই নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা যেন এখন নিত্যদিনের ঘটনা।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ভোলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমরা মনে করি ভোলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। যে কারণে ভোলাকে রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে। তার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণকে যারা অবজ্ঞা করে তাদের পরিণতি শুভ হয় না। গণমানুষের জানমাল নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলবেন না, যথেষ্ট হয়েছে। ভোলার গণহত্যার বিচার করতে হবে। ভোলার জনগণের দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই ভোটারবিহীন সরকারের দুঃশাসনে মানুষের জীবনের মূল্য এখন পশু-পাখির মূল্যের চেয়ে কমে গেছে। বিদেশে অনেক বড় বড় বিক্ষোভে পুলিশকে একটি বুলেট খরচ না করেও ধৈর্য সহকারে মোকাবিলা করতে দেখেছি আমরা। আর এই দেশে কোনো ঘটনা ঘটলেই অসহিষ্ণু আচরণ করে পুলিশ বাহিনী। ক্ষমতা হারানোর শঙ্কায় প্রতিনিয়ত অস্থির সরকার এবং তাদের রক্ষাকারী বাহিনী।’
ভোলার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার চক্রান্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, স্থানীয় প্রশাসন সুকৌশলে ভোলায় মানুষের প্রতিবাদটিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার ঘৃণ্য চক্রান্ত চালাচ্ছে।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘জনগণ একত্রিত হলেই সর্বদা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কাতর এই সরকার মনে করে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ কারণেই পুলিশ ভোলায় ঈদগাহ মাঠে জড়ো হওয়া মানুষের প্রতিবাদের ভাষা না শুনে উন্মত্ত হয়ে গুলি করেছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘ঘটনার পর দেওয়া পুলিশের ব্যাখ্যায় মনে হয়, তারা পুরো বিষয়টি আগে থেকেই জানতো। তাহলে এত সময় পেয়েও পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলো না কেন?’
ভোলায় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিএনপির উদ্যোগে আগামী ২৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগরীতে থানায় থানায় এবং সারা দেশে জেলা ও মহানগরীতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করার কথাও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা,আতাউর রহমান ঢালী, খায়রুল কবির খোকন, শামা ওবায়েদ, সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার প্রতিবাদে ভোলায় বোরহানউদ্দিন উপজেলায় পুলিশ-জনতার সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ।
উপজেলার কাচিয়া ২ নম্বর ওয়ার্ডের হিন্দু যুবক বিপ্লব চন্দ্র শুভ শুক্রবার তার নিজস্ব ফেসবুকে আল্লাহ ও মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করে বলে জানা গেছে।