পত্রে প্রস্ফুটিত প্রিয় ক্রিকেটার। আঙুলের ফাঁকে ধরা বে¬ডের সুচারু টানে শালপাতায় ফুটে উঠল মহারাজের প্রতিকৃতি। জন্মগত প্রতিভা দিয়ে এভাবেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য উপহার সাজালেন বাঁকুড়ার যুবক রূপম। রূপম রায়। যাঁর শিল্পকর্ম দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারেননি স্বয়ং সৌরভও। আগামী ২৫ তারিখ প্রিয় ক্রিকেটারের মুখ ফুটিয়ে তোলা শালপাতাটি বাঁধাই করে তাঁর হাতে তুলে দেবেন রূপম। সেদিনের অপেক্ষায় এখন দিন গুনছেন মহারাজের একান্ত অনুরাগী।
বছর বাইশের রূপম রায় বিষ্ণুপুরের জয়পুর ব¬কের দিগপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। সবে স্নাতক পাশ করেছে। বাবা কৃষক। অর্থাভাবে পড়াশোনা আর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি রূপম। ছোটবেলা থেকে আঁকিবুঁকিতে ঝোঁক তাঁর। আর আগ্রহ ছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি, তাঁর খেলার জাদু আর প্রতিভার প্রতি। ধীরে ধীরে সে ‘দাদা’র বড় অনুরাগী হয়ে পড়ে। আঁকা তো ছিলই। এবছর পুজোর আগে কাঁচা শালপাতা কেটে কেটে তাতে রূপম ফুটিয়ে তোলেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ। সেসব সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন। তার দৌলতেই রূপমের পরিচিতি বাড়তে থাকে।
তবে এবার যা হল, তা তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি বোধহয়। যেদিন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা হল, তারপরের দিন থেকেই শালপাতা কুড়িয়ে এনে শুরু করেন সৃষ্টিকর্ম। বে¬ড দিয়ে সূক্ষ্মভাবে চিরে চিরে সেখানে ফুটিয়ে তোলেন প্রিয় ক্রিকেটারের মুখ। তাও ফেসবুকে পোস্ট করেন রূপম। নজর কাড়ে অনেকের। যাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বোর্ড সচিব অভিষেক ডালমিয়া। রূপমের কাজ দেখে তিনি নিজেই ফোন করেন। সৌরভের প্রতিকৃতি সম্বলিত পাতাটি নিয়ে কলকাতায় আসতে বলেন।
বোর্ড সচিবের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সোমবারই রূপম এসে পৌঁছন কলকাতায়। অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর তাঁকে নিয়ে যান সৌরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করানোর জন্য। প্রিয় ক্রিকেটারকে চর্মচক্ষে দেখে আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়েন রূপম। স্বপ্ন যেন সত্যি হয় তাঁর। সৌরভকে দেখান নিজের কাজ। শালপাতার ফাঁকে নিজেকে দেখে অভিভূত হয়ে ওঠেন ‘দাদা’। তবে কাজটি ফ্রেমে বাঁধাই করা ছিল না বলে উপহার হিসেবে তুলে দিতে পারেননি রূপম।